close

ভিডিও দেখুন, পয়েন্ট জিতুন!

সং ঘর্ষ বিরতির মাঝেই পাকিস্তানে আত্ম ঘাতী বোমা হামলা! চারিদিকে ছড়িয়ে দে হ, ছিন্নভিন্ন হয়ে গেল সব..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
যুদ্ধবিরতির হালকা আশ্বাসের মাঝেই পাকিস্তানের মাটিতে ফের রক্তগঙ্গা! পেশোয়ারে আত্মঘাতী বোমা বিস্ফোরণে প্রাণ হারালেন দুই পুলিশ সদস্য—এরমধ্যে একজন সাব-ইন্সপেক্টর। ভারত-পাকিস্তান বৈঠকের আগেই এই হামলা ঘিরে..

যখন ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সীমান্ত সংঘর্ষ বন্ধ রেখে শান্তি আলোচনার পরিকল্পনা হচ্ছে, ঠিক সেই সময় ভয়াবহ এক আত্মঘাতী বোমা বিস্ফোরণে কেঁপে উঠল পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশ। সোমবার সকালে পেশোয়ারের চামকানি থানার অধীনে রিং রোডে অবস্থিত গবাদিপশুর বাজারের কাছে একটি পুলিশ মোবাইল ভ্যানে আত্মঘাতী হামলা চালায় এক দুর্বৃত্ত।

এই ভয়াবহ বিস্ফোরণে ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান দুই পুলিশ সদস্য। তাঁদের মধ্যে একজন ছিলেন পুলিশ সাব-ইন্সপেক্টর। আরও তিন জন গুরুতর আহত হয়েছেন, যাদের দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহতদের মধ্যে একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছে পুলিশ প্রশাসন।

পেশোয়ারের এসএসপি মাসুদ বাঙ্গাশ সাংবাদিকদের জানান, "এই হামলা একটি সুপরিকল্পিত সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড। হামলাকারী আত্মঘাতী বোমারু একটি মোটরসাইকেলযোগে এসে পুলিশের গাড়ির কাছাকাছি নিজেকে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে উড়িয়ে দেয়। এতে গাড়িটি সম্পূর্ণভাবে ছিন্নভিন্ন হয়ে যায়।"

হামলার পর ঘটনাস্থল ঘিরে ফেলে নিরাপত্তা বাহিনী। বিস্ফোরণের তীব্রতায় আশপাশের এলাকা কেঁপে ওঠে। একাধিক দোকান এবং বাজারের সামগ্রী ছিটকে পড়ে বহু দূর পর্যন্ত।

খাইবার পাখতুনখোয়ার মুখ্যমন্ত্রী আলি আমিন গন্দাপুর এই জঘন্য হামলার নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, “এই নৃশংস কাজ শান্তিপ্রক্রিয়াকে ব্যাহত করার একটি চক্রান্ত। আমি তদন্তের জন্য বিস্তারিত রিপোর্ট চেয়েছি এবং দোষীদের দ্রুত খুঁজে বের করে কঠোর শাস্তির নির্দেশ দিয়েছি।”

এই ঘটনার ঠিক আগের রাতেই ভারত ও পাকিস্তানের ‘ডিরেক্টর জেনারেল অফ মিলিটারি অপারেশন্‌স’ (ডিজিএমও) পর্যায়ের একটি বৈঠকের ঘোষণা আসে। প্রাথমিকভাবে সিদ্ধান্ত ছিল, কোনো নিরপেক্ষ স্থানে মুখোমুখি বৈঠক হবে। কিন্তু পরিস্থিতি বদলে যাওয়ায় হটলাইনের মাধ্যমেই এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে বলে নিশ্চিত করেছে দুই দেশের সামরিক দপ্তর।

ভারতের পক্ষ থেকে আলোচনায় নেতৃত্ব দেবেন ডিজিএমও লেফটেন্যান্ট জেনারেল রাজীব ঘাই, এবং পাকিস্তানের তরফে অংশ নেবেন মেজর জেনারেল কাসিফ আবদুল্লা। হটলাইনের মাধ্যমে এই গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা সোমবার দুপুর ১২টায় শুরু হওয়ার কথা।

এদিকে ভারত ইতিমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছে, তারা কাশ্মীর ইস্যুতে কোনো নতুন আলোচনায় আগ্রহী নয়। ভারতের মতে, যদি আলোচনা হয়, তাহলে সেটি হতে হবে পাক-অধিকৃত কাশ্মীর (POK) নিয়ে। পাশাপাশি, সিন্ধু জলচুক্তি সম্পর্কেও ভারতের অবস্থান অপরিবর্তিত রয়েছে। ভারত কোনোভাবেই তৃতীয়পক্ষের হস্তক্ষেপ চায় না।

অন্যদিকে, পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম দাবি করেছে, বৈঠকে সিন্ধু জলচুক্তি নিয়েও আলোচনার সম্ভাবনা রয়েছে।

এই ভয়াবহ হামলা এবং চলমান দ্বিপাক্ষিক কূটনীতির প্রেক্ষিতে দুই দেশের মধ্যে চাপা উত্তেজনা আবারও চরমে পৌঁছাতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। বিশেষ করে যখন সীমান্ত শান্তির বার্তা দেওয়া হচ্ছে, তখন এই ধরনের ঘটনা দুই দেশের মধ্যকার বিশ্বাস এবং কূটনৈতিক আলোচনাকে বড়সড় ধাক্কা দিতে পারে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, “এই হামলা শুধু একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, বরং এর মাধ্যমে পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা পরিস্থিতির করুণ চিত্র আবারও সামনে এল। একইসাথে ভারতের সঙ্গে সম্ভাব্য আলোচনার ক্ষেত্রেও এটি নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।”

 

শান্তির বার্তার মাঝেও পাকিস্তানে আত্মঘাতী হামলা নতুন করে উদ্বেগ তৈরি করেছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এই হামলার নিন্দা জানালেও, দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক এখন কোন পথে যাবে—তা নিয়ে তৈরি হয়েছে প্রবল অনিশ্চয়তা।

نظری یافت نشد