সিলেটে কোটি টাকার ভারতীয় চোরাই পণ্য জব্দ

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
সিলেটের জকিগঞ্জ ও কানাইঘাট সীমান্তে বিজিবির সফল অভিযান! গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পরিত্যক্ত অবস্থায় পাওয়া গেছে আই ক্যান্ডি, কিটক্যাট, চা ও কফিসহ প্রায় ১ কোটি টাকার ভারতীয় পণ্য। সীমান্তজুড়ে বাড়ানো হয়েছে নজ..

সিলেট সীমান্তে আবারও জব্দ হলো বিপুল পরিমাণ ভারতীয় চোরাই পণ্য। বিজিবির পৃথক দুটি অভিযান থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় জব্দ করা হয়েছে চকোলেট, চা, কফিসহ প্রায় ৯৭ লাখ ৬৯ হাজার ২০০ টাকার পণ্য। সীমান্তে চোরাচালান রোধে বিজিবির এমন তৎপরতা স্থানীয়দের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে।

শুক্রবার রাতে, সিলেট ব্যাটালিয়নের (১৯ বিজিবি) আওতাধীন জৈন্তাপুর ও কানাইঘাট উপজেলার সীমান্ত এলাকাগুলোতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে এই অভিযান চালানো হয়। বিজিবির দাবি, এই অভিযান ছিল পূর্ব পরিকল্পিত এবং তথ্যভিত্তিক।

প্রথম অভিযানে, জৈন্তাপুর বিওপির সদস্যরা জৈন্তাপুর উপজেলার ফেরিঘাট এলাকায় বিশেষ তল্লাশি চালিয়ে সীমান্তের শূন্য রেখা থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার বাংলাদেশের অভ্যন্তরে পরিত্যক্ত অবস্থায় বিপুল পরিমাণ ভারতীয় চকোলেট উদ্ধার করেন।

জৈন্তাপুর অভিযান থেকে উদ্ধারকৃত মালামালের মধ্যে ছিল—

  • ৩,১০,০০০ পিস ভারতীয় আই ক্যান্ডি (ছোট)

  • ১,২০০ পিস আই ক্যান্ডি (বড়)

  • ১,২৬০ পিস কিটক্যাট (থ্রি ফিঙ্গার)

  • ২,০০১ পিস কিটক্যাট (টু ফিঙ্গার)

উল্লেখিত সকল পণ্যের বাজারমূল্য ধরা হয়েছে ৯৫ লাখ ৬৫ হাজার ২০০ টাকা

একই রাতে কানাইঘাট উপজেলার বাদশা বাজার এলাকায়, সীমান্তের শূন্য রেখা থেকে ৫০০ গজ বাংলাদেশের অভ্যন্তরে বিজিবি আরও একটি সফল অভিযান চালায়। এ অভিযানেও পরিত্যক্ত অবস্থায় পাওয়া যায়—

  • ৬০ কেজি ভারতীয় চা পাতা

  • ৬০ কেজি ভারতীয় কফি
    এ দুটি পণ্যের সম্মিলিত বাজারমূল্য আনুমানিক ২ লাখ ৪ হাজার টাকা

এ ব্যাপারে ১৯ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ জুবায়ের আনোয়ার বলেন,গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পরিচালিত এই সফল অভিযান দুটিতে প্রায় ১ কোটি টাকার চোরাই পণ্য জব্দ করা হয়েছে। এসব মালামাল চোরাকারবারিরা অবৈধভাবে দেশে ঢোকানোর চেষ্টা করছিল। আমরা পণ্যগুলো আইনগতভাবে জব্দ করেছি এবং সংশ্লিষ্ট বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।

তিনি আরও জানান, সীমান্তবর্তী এলাকায় চোরাচালান প্রতিরোধে বিজিবির নজরদারি আরও জোরদার করা হয়েছে। স্থানীয় জনগণকে এসব বিষয়ে সতর্ক থাকতে এবং সহযোগিতা করতে অনুরোধ জানানো হয়েছে।

সম্প্রতি সিলেট অঞ্চলে ভারতীয় পণ্য চোরাচালানের প্রবণতা বাড়ছে। বিশেষ করে চকলেট, তামাকজাত দ্রব্য, প্রসাধনী ও খাদ্যপণ্যের চাহিদা থাকায় এই পণ্যগুলো চোরাইপথে দেশে আনার চেষ্টা করা হচ্ছে।

বিজিবি বলছে, সীমান্তবর্তী এলাকার ভূগোলের কারণে অনেক সময় এসব এলাকা চোরাকারবারিদের জন্য সুবিধাজনক হয়ে পড়ে। তবে তারা নিয়মিত টহল এবং প্রযুক্তিনির্ভর নজরদারি বৃদ্ধি করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখছে।

স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে বিজিবি চোরাচালানবিরোধী অভিযান আরও গতিশীল করছে। এ ছাড়া, সীমান্তে বসবাসকারী সাধারণ জনগণের সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন ক্যাম্পেইন চালানো হচ্ছে।

বিজিবির এক কর্মকর্তা জানান, “আমরা শুধু পণ্য জব্দেই সীমাবদ্ধ না, বরং চোরাচালান চক্রের মূল হোতাদের খুঁজে বের করতে গোয়েন্দা তৎপরতাও চালাচ্ছি।

সিলেটের সীমান্ত এলাকাজুড়ে বিজিবির এমন চোরাচালানবিরোধী তৎপরতা নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়। প্রায় ১ কোটি টাকার ভারতীয় পণ্য জব্দের এ ঘটনা আবারও প্রমাণ করল, বিজিবি সীমান্তে সদা তৎপর। ভবিষ্যতে চোরাকারবারিদের হাত থেকে দেশকে নিরাপদ রাখতে এমন অভিযান আরও জোরদার হবে—এটাই এখন সময়ের দাবি।

לא נמצאו הערות