সিচুয়েশন রুমে ট্রা ম্প সহ যু ক্ত রা ষ্ট্রে র শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তারা..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
ইরানের পাল্টা হামলার পর হোয়াইট হাউসের সিচুয়েশন রুমে শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তাদের নিয়ে বৈঠকে বসলেন ট্রাম্প। যুক্তরাষ্ট্র-ইরান দ্বন্দ্ব নতুন উত্তেজনায় মোড় নিচ্ছে।..

মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা চরমে। ইরান থেকে আসা প্রতিশোধের বারুদ যেন পুরো অঞ্চলকে নাড়িয়ে দিয়েছে। এমন এক উত্তাল সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হোয়াইট হাউসের ‘সিচুয়েশন রুমে’ বসেছেন শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তাদের নিয়ে। আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু—ইরানের পাল্টা ক্ষেপণাস্ত্র হামলা।

গতকাল রাতেই কাতার ও ইরাকে অবস্থিত মার্কিন সামরিক ঘাঁটিগুলোর ওপর ইরান যে হামলা চালিয়েছে, তা ছিল প্রত্যাশিত হলেও তাৎক্ষণিকভাবে যুক্তরাষ্ট্রকে টেনে এনেছে প্রতিক্রিয়াশীল প্রতিরক্ষা কৌশলের মধ্যে।

বিশ্ববিখ্যাত সংবাদমাধ্যম এবিসি নিউজ জানায়, আল-উদেইদ মার্কিন ঘাঁটিতে ইরানের হামলার পর দ্রুত সাড়া দিতে হোয়াইট হাউসে নিরাপত্তা পরিষদের পূর্বনির্ধারিত বৈঠকেই ডোনাল্ড ট্রাম্প উপস্থিত হন। ওই বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা সচিব, জয়েন্ট চিফস অব স্টাফের চেয়ারম্যানসহ গোয়েন্দা সংস্থার শীর্ষ প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

বলা হচ্ছে, ইরানের এই হামলা একটি সুসংগঠিত বার্তা—তারা প্রতিশোধ নিতে প্রস্তুত এবং এ অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের আধিপত্য তারা আর মানতে নারাজ। আল-উদেইদ ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়ে তারা প্রমাণ করেছে, প্রয়োজন হলে তারা টার্গেট করতেও জানে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, ইরানের হামলা ছিল কিছুটা প্রতীকী—মারাত্মক ক্ষয়ক্ষতির চেয়ে একটি রাজনৈতিক বার্তা পৌঁছে দেওয়াই ছিল মূল উদ্দেশ্য। যদিও এখনো ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্দিষ্টভাবে জানায়নি যুক্তরাষ্ট্র।

হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ‘সিচুয়েশন রুম’ থেকেই হামলার ভিডিও ফুটেজ, স্যাটেলাইট চিত্র ও সামরিক গোয়েন্দা তথ্য বিশ্লেষণ করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে পরবর্তী প্রতিক্রিয়ার। সূত্র জানায়, মার্কিন প্রশাসন এখন পর্যন্ত সরাসরি পাল্টা হামলার সিদ্ধান্ত নেয়নি, তবে সব ধরনের সামরিক প্রস্তুতি রাখা হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের এক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা জানান, “আমরা এমন হামলার জন্য প্রস্তুত ছিলাম। আমাদের বাহিনী সতর্ক অবস্থায় ছিল। তবে এখন গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে পরবর্তী পদক্ষেপ কী হবে, সেটা হিসাব করে সিদ্ধান্ত নেওয়া।”

ইরান-যুক্তরাষ্ট্র টানাপোড়েন নতুন নয়, তবে এবারের ঘটনায় আন্তর্জাতিক মহল ভীত। জাতিসংঘ, ন্যাটো এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের পক্ষ থেকে উভয়পক্ষকে সংযম দেখানোর আহ্বান জানানো হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সংঘাত যদি বাড়ে তবে এর প্রভাব শুধু মধ্যপ্রাচ্য নয়—পুরো বিশ্বে ছড়িয়ে পড়তে পারে।

এদিকে, আন্তর্জাতিক বাজারেও এর প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। অপরিশোধিত তেলের দাম হঠাৎ বেড়ে গেছে। তীব্র হয়ে উঠেছে রাজনৈতিক টেনশন।

ইরান-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কের এই উত্তাল পর্যায় এক ধরনের "স্নায়ুযুদ্ধ" পরিস্থিতি তৈরি করছে। পরবর্তী ২৪ ঘণ্টা হতে পারে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যদি যুক্তরাষ্ট্র কোনো বড় প্রতিক্রিয়া দেখায়, তাহলে সেই প্রতিক্রিয়ার পাল্টা পদক্ষেপে মধ্যপ্রাচ্য রক্তাক্ত হতে সময় নেবে না।

এই মুহূর্তে হোয়াইট হাউসের ‘সিচুয়েশন রুম’ শুধু এক জায়গা নয়, বরং একটি বৈশ্বিক সংকট ব্যবস্থাপনা কেন্দ্র হিসেবে কাজ করছে। বিশ্ববাসীর নজর এখন সেই রুমেই—ট্রাম্প এবং তার সামরিক উপদেষ্টারা কী সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন, তা পরবর্তী ভূ-রাজনৈতিক বাস্তবতায় গভীর প্রভাব ফেলবে।

Inga kommentarer hittades


News Card Generator