শুক্রবার থেকে ই স রায়ে লে র দিকে ৪০০ টিরও বেশি ক্ষে প ণা স্ত্র নি ক্ষেপ করেছে ই রা ন..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
ইসরায়েলের সাম্প্রতিক হামলার জবাবে শুক্রবার ভয়াবহ প্রতিশোধ নেয় ইরান। একসঙ্গে ৪০০টিরও বেশি ক্ষেপণাস্ত্র ও শত শত ড্রোন নিক্ষেপ করে তেলআবিবসহ ৪০টি স্থানে হামলা চালানো হয়। প্রাণ হারিয়েছেন কমপক্ষে ২৪ জন, আহ..

মধ্যপ্রাচ্যে ফের অশান্তির আগুন—ইরান-ইসরায়েলের মধ্যে ভয়াবহ সামরিক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে আকাশ থেকে মাটিতে।

গত শুক্রবার, ১২ জুন, ইসরায়েলের একপক্ষীয় হামলার পাল্টা জবাব দিতে গিয়ে ইরান আকাশ পথে চালায় ইতিহাসের অন্যতম বড় প্রতিশোধমূলক অভিযান। একসঙ্গে ৪০০টিরও বেশি ক্ষেপণাস্ত্র এবং অগণিত আত্মঘাতী ড্রোন ইসরায়েলের দিকে ছোড়া হয়। ইসরায়েলি নিরাপত্তা বাহিনী জানায়, দেশটির অন্তত ৪০টি গুরুত্বপূর্ণ এলাকা এই হামলার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়।

 

ইসরায়েলের কর কর্তৃপক্ষ জানায়, হামলার পর মাত্র ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই ১৯,০০০-এরও বেশি ক্ষতিপূরণের আবেদন জমা পড়ে। এতে প্রমাণ হয়, ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোনের আঘাতে সাধারণ মানুষ এবং অবকাঠামো ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এখন পর্যন্ত ২৪ জন নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন ৮০০-এরও বেশি মানুষ

ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ দাবি করে, হামলার আগে পরিস্থিতি আঁচ করতে পেরে ৩,৮০০ জনের বেশি নাগরিককে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল। এই দ্রুত পদক্ষেপ হয়তো প্রাণহানির সংখ্যা কিছুটা কমাতে সাহায্য করেছে।

 

অন্যদিকে ইরানি সরকার জানিয়েছে, শুক্রবার ইসরায়েল যেসব হামলা চালিয়েছে তাতে ইরানে ২২৪ জনের বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। যদিও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে এই তথ্য এখনও স্বাধীনভাবে যাচাই হয়নি, তবে ইরান সরকার এই প্রাণহানিকে “রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড” হিসেবে আখ্যায়িত করেছে।

ইরানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী এক বিবৃতিতে বলেন, “আমাদের প্রতিরক্ষা সক্ষমতা নিয়ে কেউ যেন ভুল ধারণা না করে। আমরা প্রমাণ করেছি, আগ্রাসনের জবাব দিতে আমরা সম্পূর্ণ প্রস্তুত। এটা শুধু শুরু মাত্র।”

 

এই সংঘর্ষের পরপরই মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে চরম উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। লেবানন, সিরিয়া, ইরাক, বাহরাইনসহ একাধিক দেশের রাজধানীতে বিক্ষোভ হয়। জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ জরুরি বৈঠক ডেকেছে পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করতে।

বিশ্লেষকদের মতে, ইসরায়েল-ইরান এই সরাসরি সংঘর্ষ কেবলমাত্র দুটি দেশের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে না। এর প্রভাব পুরো অঞ্চলের উপর পড়বে এবং এর মাধ্যমে নতুন করে একটি পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধের সম্ভাবনা জেগে উঠেছে।

 

দুই দেশের সাধারণ মানুষ এখন আতঙ্কের মধ্যে সময় পার করছে। কোথায় হামলা হবে, কবে আবার বিমান বা ড্রোন আসবে—এই অজানা ভয় তাদের মধ্যে প্রতিনিয়ত কাজ করছে।

ইসরায়েলের রাজধানী তেলআবিবে এক বাসিন্দা বলেন, “বাচ্চাদের নিয়ে বাড়ির বাইরে বের হওয়াও এখন বিপজ্জনক। রাত-দিন সাইরেন বাজছে, জানি না কখন কী হবে।”

অন্যদিকে ইরানের এক সাধারণ নাগরিক বলেন, “আমরা যুদ্ধ চাই না, কিন্তু আমাদের উপর হামলা হলে চুপ করে বসে থাকার কোনো মানে নেই।”

 

এই মুহূর্তে বিশ্ববাসীর চোখ ইসরায়েল ও ইরানের দিকে। একদিকে প্রতিশোধ, অন্যদিকে প্রতিরোধ—এই দুই শব্দ ঘিরেই যেন রচিত হচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যের নতুন ইতিহাস।

বিশ্লেষকরা সতর্ক করছেন, যদি দ্রুত কূটনৈতিক হস্তক্ষেপ না আসে, তবে এই সংঘর্ষ একটি ভয়াবহ যুদ্ধের রূপ নিতে পারে, যার পরিণতি হবে মারাত্মক ও দীর্ঘস্থায়ী।

Nenhum comentário encontrado