close

ভিডিও আপলোড করুন পয়েন্ট জিতুন!

শীতলক্ষ্যায় কার্গো জাহাজের সঙ্গে ধাক্কা আতঙ্কে নদীতে ঝাপিয়ে পড়ল ট্রলার যাত্রীরা..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
নারায়ণগঞ্জে শীতলক্ষ্যা নদীতে কার্গো জাহাজের ধাক্কার গুজবে ২০ যাত্রী আতঙ্কে নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়ে। মুহূর্তেই ছড়িয়ে পড়ে চাঞ্চল্য! কি ঘটেছিল সেদিন? জেনে নিন বিস্তারিত.....

কার্গো জাহাজের ধাক্কার আতঙ্কে শীতলক্ষ্যায় ট্রলারযাত্রীদের প্রাণপণ লাফ: এক হৃদয়বিদারক মুহূর্ত

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি:
নারায়ণগঞ্জ শহরের টানবাজার খেয়াঘাটের উত্তাল শীতলক্ষ্যায় সোমবার দুপুরে ঘটে গেল এক চাঞ্চল্যকর ঘটনা। একপাশে যাত্রীভর্তি ট্রলার, অন্যপাশে এগিয়ে আসছে বিশাল কার্গো জাহাজ—এই দৃশ্য দেখে মুহূর্তের মধ্যে আতঙ্কে ট্রলারের অন্তত ১৫-২০ জন যাত্রী নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়ে প্রাণ বাঁচানোর চেষ্টা করেন। তবে ভাগ্যের জোরে সেদিন বড় কোনো দুর্ঘটনা ঘটেনি, না ডুবেছে ট্রলার, না হয়েছে কোনো সংঘর্ষ।

কি ঘটেছিল সেই মুহূর্তে?

সোমবার দুপুর আনুমানিক দেড়টার সময় নারায়ণগঞ্জ শহরের টানবাজার খেয়াঘাট থেকে ইঞ্জিনচালিত একটি যাত্রীবাহী ট্রলার ২০-২৫ জন যাত্রী নিয়ে নদী পার হচ্ছিল। তখনই মুন্সীগঞ্জগামী ‘এমভি আখতার হোসেন-১’ নামের বিশাল একটি কার্গো জাহাজ ঘাট সংলগ্ন এলাকা দিয়ে অতিক্রম করছিল। দৃশ্যমান দূরত্ব থেকে কেউ একজন চিৎকার করে ধাক্কা লাগার সম্ভাবনার কথা বলতেই মুহূর্তের মধ্যে সৃষ্টি হয় এক ভয়াবহ বিভ্রান্তি।

ভয়ে হুলস্থুল, ঝাঁপ দিল একে একে ২০ জন

কারো কোনো নির্দেশ ছিল না, ছিল না সতর্কতা বা দায়িত্বশীল কারো হস্তক্ষেপ। হঠাৎ করেই আতঙ্কগ্রস্ত যাত্রীরা একে একে নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়তে থাকেন। কেউ কেউ পানিতে সাঁতার কেটে দূরের দিকে চলে যাচ্ছিলেন, কেউ আবার ট্রলারের ধারে ঝুলে ছিলেন। এই পরিস্থিতিতে আশেপাশে থাকা আরও কিছু খালি ও আধা-ভর্তি ট্রলার তৎপর হয়ে পড়ে উদ্ধার কাজে।

উদ্ধার হলো সবাই, কোনো হতাহত হয়নি

ভাগ্য ভালো যে ঘটনাস্থলে নিকটবর্তী অন্যান্য ট্রলার উপস্থিত ছিল। সেসব ট্রলারের সাহায্যে নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়া যাত্রীদের সবাইকে নিরাপদে উদ্ধার করা সম্ভব হয়। কারো দিকেই কোনো বড় ধরনের আঘাত লাগেনি বা কেউ নিখোঁজ হননি বলে জানিয়েছে পুলিশ।

পুলিশের ভাষ্য: পুরো বিষয়টি ছিল গুজব নির্ভর আতঙ্ক

এই ঘটনার বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ সদর থানা নৌ-পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুল হক বলেন, “কার্গো জাহাজের সঙ্গে কোনো ধাক্কা লাগেনি, ট্রলারটিও ডুবেনি। সম্পূর্ণ ভুল ধারণা ও আতঙ্কের কারণে যাত্রীরা নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়ে।” তিনি আরও জানান, অন্য ট্রলারের সহায়তায় যাত্রীরা নিরাপদে ফিরে এসেছেন এবং কেউই নিখোঁজ হননি।

নিরাপত্তা ঘাটতির প্রশ্ন

এই ঘটনাটি সামনে আনছে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন—খেয়াঘাটগুলোতে কি যথাযথ নিরাপত্তা ও দিকনির্দেশনা রয়েছে? নদী পারাপারে ব্যবহৃত ইঞ্জিনচালিত ট্রলারগুলোতে কেন নেই জীবনের ঝুঁকি কমাতে লাইফ জ্যাকেট, জরুরি সতর্কতা ব্যবস্থা কিংবা প্রশিক্ষিত গাইড? শুধুমাত্র আতঙ্কের কারণেই যেখানে ২০ জন মানুষ নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়তে পারে, সেখানে বড় কোনো দুর্ঘটনার আশঙ্কাও অমূলক নয়।

পরিশেষে: রক্ষা পেলেও বার্তা স্পষ্ট

সোমবারের এই ঘটনার মধ্যে দিয়ে দেখা গেল, আতঙ্ক কিভাবে মুহূর্তে বিশৃঙ্খলা তৈরি করতে পারে। যদিও কেউ হতাহত হননি, কিন্তু এই ঘটনা ছিল এক ভয়ঙ্কর বিপদের বার্তা। ভবিষ্যতে যেন এমন ঘটনা না ঘটে, সে জন্য ঘাট ও ট্রলার ব্যবস্থাপনায় দ্রুত নিরাপত্তা জোরদার করা প্রয়োজন।

Aucun commentaire trouvé


News Card Generator