close
ভিডিও দেখুন, পয়েন্ট জিতুন!
শীতের পোশাকের ব্যবসায় ৯০০ কোটি টাকার বিনিয়োগ, কিন্তু মন্দা বাজারে মাথায় হাত ব্যবসায়ীদের!


শীত মৌসুমে গরম কাপড়ের চাহিদা বেড়ে যায়, কিন্তু এ বছর বাংলাদেশের পুরাতন কাপড়ের ব্যবসায় কিছুটা হতাশা দেখা দিয়েছে। ৯০০ কোটি টাকার পুরাতন গাঁইট (বেল) আমদানি করা হলেও, শীতের তীব্রতা কম থাকার কারণে বিক্রি হয়নি আশানুরূপ। ব্যবসায়ীরা জানান, আর্থিক সংকট ও শীতের অভাবের কারণে তারা অনেক বেশি লোকসান সহ্য করতে পারেন।
ব্যবসার সংকটে পুরোনো কাপড়ের আমদানিকারকরা
বাংলাদেশ পুরাতন কাপড় আমদানিকারক সমিতির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এ বছর ৯০০ কোটি টাকার পুরাতন কাপড় আমদানি করা হয়েছে, যা গত বছরের তুলনায় কিছুটা বেড়েছে। তবে ব্যবসার পরিবেশ একেবারে অনুকূল নয়। বিশেষ করে চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জ থেকে পুরোনো কাপড় আমদানি করা হয়, যা স্থানীয় বাজারে বিক্রি হয় সারা দেশে। কিন্তু শীত কম হওয়ায় গত বছরের তুলনায় বিক্রি অনেকটাই কমে গেছে।
আবুল কালাম, বাংলাদেশের পুরাতন কাপড় আমদানিকারক সমিতির সভাপতি, জানিয়েছেন যে, সরকারের বিভিন্ন বিধিনিষেধ এবং আমদানির সীমাবদ্ধতার কারণে ব্যবসায়ীরা গত বছরের তুলনায় কিছুটা কম কাপড় আমদানি করতে পারলেও, তারা এখনও লাভের মুখ দেখছেন না। একই পরিস্থিতি বলেছেন মোহাম্মদ মনজুর আলম, যিনি সমিতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, যিনি মনে করছেন যে শীতের তীব্রতা কম থাকায় কাপড়ের চাহিদা অনেক কমে গেছে।
একসময়কার হটকেক, এখন ঠান্ডা হয়ে পড়েছে পুরোনো কাপড়ের ব্যবসা
চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জের আড়ৎদাররা জানাচ্ছেন, প্রতি বছর নভেম্বর থেকে শীতের কাপড়ের বেল বিক্রির মৌসুম শুরু হলেও এ বছর জানুয়ারির শেষে বিক্রি আশানুরূপ হয়নি। কাজী জাকির হোসেন আনিছ, খাতুনগঞ্জের আমির মার্কেটের মেসার্স ফারুক অ্যান্ড ব্রাদার্সের মালিক, বলেন, “এ বছর জানুয়ারি মাস শেষ হলেও, শীতের চাহিদা বাড়েনি। পূর্বের তুলনায় বিক্রি ৫০ শতাংশ কমে গেছে।”
এদিকে, আবদুল হালিম, এক পাইকারি বিক্রেতা, জানান যে, বিভিন্ন অঞ্চলের ব্যবসায়ীরা কাপড় কিনতে আসছেন, কিন্তু এবার বিক্রি অনেক কম। চট্টগ্রামের জলসা মার্কেট ও হকার্স মার্কেটগুলো খুচরা বিক্রির জন্য ‘গাঁইট মার্কেট’ হিসেবে পরিচিত হলেও, এবার ক্রেতাদের উপস্থিতি কম।
আন্তর্জাতিক বাজারে পুরোনো কাপড়ের উত্থান
বিশ্বের উন্নত দেশগুলোর মধ্যে যেমন জাপান, কোরিয়া, চীন এবং তাইওয়ান, পুরোনো কাপড়ের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। সেখানে ধোয়ার খরচ বেশি হওয়ায় পুরোনো কাপড় দ্বিতীয়বার ব্যবহার করা হয় না এবং সেগুলি অন্যান্য দেশে পাঠানো হয়। এই কাপড়গুলোর মান বেশ ভালো থাকায় এবং দাম তুলনামূলক কম হওয়ায় বাংলাদেশে এসব পুরোনো কাপড়ের আমদানি বেড়েছে।
এ বছর ৭০২ টিইইউএস (২০ ফুট দৈর্ঘ্যের কনটেইনার) পুরোনো কাপড় আমদানি হয়েছে, যার মধ্যে প্রায় ১২ হাজার টন কাপড় রয়েছে। তবে জানুয়ারি মাস পর্যন্ত এই কাপড়গুলোর বিক্রি আশানুরূপ হয়নি।
ভবিষ্যতে কী হবে পুরোনো কাপড়ের বাজারের?
এখনকার পরিস্থিতি দেখে ব্যবসায়ীরা আশঙ্কা করছেন যে, শীতের তুলনামূলক কম তীব্রতা এবং আর্থিক সংকটের কারণে তারা ব্যাপক লোকসান সম্মুখীন হতে পারেন। খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ীরা আস্থা রাখছেন যে, ফেব্রুয়ারিতে শীত বাড়লে বিক্রি কিছুটা বেড়ে যেতে পারে। তবে, তাঁরা আরও জানান যে, সরকার যদি আমদানি শর্ত শিথিল করে এবং শীতের তীব্রতা বাড়ে, তবে বিক্রি আশানুরূপ হতে পারে।
এ বছর ব্যবসায়ীরা যে শীতের কাপড়ের উপর এত বড় বিনিয়োগ করেছেন, তা তাদের জন্য এক বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আগামী মাসগুলোতে শীতের তীব্রতা যদি বেড়ে না যায়, তবে তাদের মধ্যে অনেকেই কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে পারেন।
לא נמצאו הערות