শীতে বিপর্যস্ত পঞ্চগড়ের পাথর শ্রমিক: আয় কমেছে অর্ধেক, সংকটে ৫০ হাজার মানুষ


শৈত্য প্রবাহ আর প্রচণ্ড ঠান্ডার কারণে উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ে পাথর শ্রমিকরা চরম সংকটে পড়েছেন। বরফশীতল নদীর পানিতে পাথর তুলতে গিয়ে তাদের জীবন হয়ে উঠেছে মানবেতর। ডিসেম্বর-জানুয়ারির শীতে আয়ের পরিমাণ কমে গেছে প্রায় অর্ধেক। গ্রীষ্মে যেখানে শ্রমিকরা দিনে ১,০০০ টাকা উপার্জন করতেন, শীতে তা নেমে এসেছে ৫০০-৬০০ টাকায়।
পঞ্চগড় জেলার উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া ৫০টি নদ-নদী—মহানন্দা, ডাহুক, করোতোয়া, বুড়ি তিস্তা—এবং অন্যান্য নদী থেকে জীবিকা নির্বাহ করেন প্রায় ২০ হাজার শ্রমিক। আরও ৩০ হাজার মানুষ পাথর সংশ্লিষ্ট কাজে যুক্ত। তবে নভেম্বরের শেষ থেকে শুরু হওয়া ঠান্ডায় এসব শ্রমিকদের আয়ের পথ সংকুচিত হয়েছে।
ভজনপুরের নজিবুল ইসলাম জানান, "গ্রীষ্মে দিনে ১ হাজার টাকা রোজগার হতো, এখন তা কমে ৫০০-৬০০ টাকায় এসেছে। সংসারের খরচ চালানো কঠিন হয়ে পড়েছে।" গিতালগছ গ্রামের করিমুল ইসলাম বলেন, "অনেক শ্রমিক অসুস্থ হয়ে পড়ছে। ওষুধ কিনতেই যা আয় হয়, তা শেষ হয়ে যায়। আগের সরকার আমাদের জন্য কিছুই করেনি।"
জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, শ্রমিকদের দুরবস্থা বিবেচনায় ত্রাণ মন্ত্রণালয়ে অনুদানের প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। জেলা প্রশাসক মো. সাবেত আলী জানান, "প্রতিবছর শীতে পাথর শ্রমিকদের আয় কমে যায়। এবার তাদের সহায়তায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে প্রস্তাব পাঠিয়েছি।"
সংশ্লিষ্টদের মতে, দেশের অবকাঠামো নির্মাণে এই শ্রমিকদের বিশাল অবদান থাকলেও, তাদের জীবনমান উন্নয়নে কোনো কার্যকর উদ্যোগ এতদিন নেওয়া হয়নি। এই শীতে তারা সরকারের সহায়তা এবং সচেতন উদ্যোগের অপেক্ষায় রয়েছেন।
Inga kommentarer hittades