close

কমেন্ট করুন পয়েন্ট জিতুন!

শেরপুরের উন্নয়নের দাবিতে ১৪ কিলোমিটার মানববন্ধনের ডাক

Nazmul Mia avatar   
Nazmul Mia
পিছিয়ে পড়া শেরপুর জেলার যৌক্তিক উন্নয়নের দাবিতে বৃহস্পতিবার (১৫ মে) সকাল ১১ টা এক মিনিট থেকে দুপুর ১২ টা পর্যন্ত ‘নাগরিক মানববন্ধন’র ডাক দিয়েছে শেরপুর প্রেসক্লাব।..

এ দাবিতে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া এ মানববন্ধনে দলমত নির্বিশেষে সবাইকে উপস্থিত থাকার আহ্বান জানানো হয়। 


জেলা শহরের খোয়ারপাড় (শাপলা চত্বর) মোড় থেকে অস্টমীতলা (পুলিশ লাইন্স মোড়) পর্যন্ত প্রায় সাত কিলোমিটার জুড়ে সড়কের দুই পাশে মানববন্ধনটিতে হাজার হাজার মানুষের অংশগ্রহণ হবে বলে আশা করছেন আয়োজকরা।জানা গেছে, স্বাধীনতার ৫৪ বছর পেরিয়ে গেলেও শেরপুর জেলার দৃশ্যমান কোনো উন্নয়ন হয়নি। বিগত বছরগুলোতে রাজনৈতিক সরকার থাকাকালে জেলায় কয়েক দফায় মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রী পদমর্যাদার রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বরা দায়িত্ব পালন করলেও শেরপুরের উন্নয়নে ছিল না তাদের নজর। অভিযোগ রয়েছে, সদ্য নিবন্ধন স্থগিত হওয়া বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মতিয়া চৌধুরী শেরপুর-২ (নকলা-নালিতাবাড়ী) আসনের এমপি ও সরকারের কৃষিমন্ত্রীর দায়িত্বে থাকলেও শেরপুর-১ (সদর উপজেলা) আসনের এমপি ও দুই দফায় জাতীয় সংসদের হুইপ আতিউর রহমান আতিকের আভ্যন্তরীণ দ্ব›েদ্ব পিছিয়ে পড়ে শেরপুর জেলা।১৯৮৪ সালে শেরপুরকে মহকুমা থেকে জেলায় উন্নীত করা হয়। সেই থেকে ৪১ বছর অপেক্ষা করেও শুধুমাত্র রাজনৈতিক প্রতিহিংসায় জেলার প্রায় ১৬ লক্ষ মানুষের প্রত্যাশা পূরণ করতে দেয়নি কতিপয় অসাধু নেতা। তারা শুধু নিজেদের উদরপূর্ণ করেছেন, এমন অভিযোগও করছেন সচেতন মহল। তারা বলছেন, জেলায় উন্নীত হওয়ার সাড়ে তিন যুগ পরও শেরপুরে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক), রেপিড এ্যাকশন ব্যাটেলিয়ান (র‌্যাব) সহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ সরকারী অফিস নেই। পার্শ্ববর্তী জামালপুর অফিস থেকে এসব সংস্থার লোকজন শেরপুরের দায়িত্ব পালন করছেন। এতে করে শেরপুরবাসী অনেক সরকারী সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।

শেরপুরের মানুষের ৫ দফা ন্যায্য দাবি-
 

(১) কৃষি, প্রযুক্তি ও সাধারণ শিক্ষার সমন্বয়ে আধুনিক একটি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন (২) আধুনিক উন্নত চিকিৎসা ব্যবস্থার পাশাপাশি সরকারি মেডিকেল কলেজ অথবা বিশেষায়িত হাসপাতাল নির্মাণ (৩) শেরপুর কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট (এটিআই) কে পূর্ণাঙ্গ কৃষি প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর (৪) যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে দ্রুত শেরপুর জেলাকে রেলপথের সাথে সংযুক্ত করা এবং (৫) জেলার পর্যটন এলাকায় আধুনিক হোটেল-মোটেল স্থাপন, সাংস্কৃতিক কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা ও বন সংরক্ষণ করাসহ পর্যটকদের নিরাপত্তায় টুুরিস্ট পুলিশ মোতায়েন করতে হবে।উন্নয়ন আন্দোলন প্রসঙ্গে প্রকৌশলী খোরশেদ আলম রিনু বলেন, ‘উন্নয়ন ভাবনার যে মৌলিক বিষয়গুলো আছে তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে নিরাপদ এবং উন্নত সমাজ ব্যবস্থা। সারা বাংলাদেশে যতগুলো জেলা আছে তার মধ্যে আমরা পিছিয়ে আছি উন্নয়নের দৃষ্টিকোণ থেকে। বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল কলেজ ও রেল যোগাযোগ আমাদের শেরপুরবাসীর জন্য অত্যন্ত জরুরি। আমাদের যে উন্নয়নের দাবি, এ দাবিতে আমরা শেরপুরবাসী সবাই এক কাতারে আছি এবং থাকবো।’শেরপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি কাকন রেজা বলেন, ‘আমাদের শেরপুর জেলা দীর্ঘদিন রাজনৈতিক গেড়াকলে পিছিয়ে আছে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, পর্যটন, যোগাযোগ সবক্ষেত্রেই। আসুন পিছিয়ে পড়া শেরপুর জেলাকে এগিয়ে নেই। আওয়াজ তুলি সবাই একসাথে, দাঁড়াই ১৫ মে বৃহস্পতিবার সকাল ১১ টা এক মিনিট থেকে দুপুর ১২ টা পর্যন্ত নাগরিক মানবন্ধনে। দলমত নির্বিশেষে একসাথে শেরপুরবাসীকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানাই। এই দাবিগুলো আমাদের যৌক্তিক অধিকার ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য। সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে দাবি আদায়ে জোর আওয়াজ তুলি।’এ প্রসঙ্গে শেরপুর জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি মাহমুদুল হক রুবেল বলেন, ‘বিগত সরকারের আমলে আমাদের পাশের জেলায় যে উন্নয়ন হয়েছে তার শতভাগের একভাগও আমাদের জেলায় হয়নি। আমরা লক্ষ্য করেছি শেরপুরের কৃষি, যোগাযোগ, স্বাস্থ্য, শিক্ষা এবং পর্যটনের উন্নয়ন খুবই প্রয়োজন এবং এটা শেরপুরের মানুষের দাবী। শেরপুর প্রেস ক্লাবের উদ্যোগে ১৫ মে শেরপুরের উন্নয়নের দাবীতে যে মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়েছে সেখানে আমি নিজেও উপস্থিত থাকবো এবং জেলার সর্বস্তরের মানুষকে অংশগ্রহণ করার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি।’১৫ মে বৃহস্পতিবার জেলার উন্নয়নের দাবিতে মানববন্ধন সফল ও সার্থক করে তুলতে গত প্রায় মাসাধিককাল ধরে শেরপুর প্রেস ক্লাবের সদস্যরা জেলার বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনসহ বিভিন্ন স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসার কর্তাব্যক্তিদের সাথে দফায় দফায় আলোচনা করে কর্মপরিকল্পনা নির্ধারণ করেন। বিভিন্ন সংগঠনের কর্তাব্যক্তিরা অনুষ্ঠিব্য মানববন্ধনকে সফল করতে প্রতিশ্রুতি দেন।
Комментариев нет


News Card Generator