close

কমেন্ট করুন পয়েন্ট জিতুন!

শেরপুরে শিশুর ঝাড়ফুঁকের পানি নিতে হাজারো মানুষের ভিড়।..

Nazmul Mia avatar   
Nazmul Mia
চার বছরের অবুঝ শিশুর ঝাড়ফুঁকের পানি ও তেল দিয়ে করে সুস্থ হচ্ছে মানুষ! এমন অন্ধবিশ্বাসে প্রতিদিন শিশুর বাড়িতে ভিড় করছেন হাজারও মানুষ। এ খবর ছড়িয়ে পড়তেই মানুষের উপচে পড়া ভিড় সামলাতে হিমশিম খাচ্ছ..

সরেজমিনে ঘুরে জানা গেছে, শ্রীবরদী উপজেলার লঙ্গরপাড়া বাজারের দর্জি ও কাপড় ব্যবসায়ী আব্দুল ওয়াহাব এর চার বছরের ছেলে শিশু লাবীবের ঝাড়ফুঁক দেয়া তেল ব্যবহার বা পানি পান করলে জটিল ও কঠিন রোগের মুক্তি মিলে এমন দাবি লাবিবের স্বজনদের।


স্বজনদের দাবি, বেশ কিছুদিন যাবৎ লাবিবের মায়ের পায়ে ব্যথা হয়ে আসছিল। প্রায় দুই মাস আগে লাবিব তার মাকে পার্শ্ববর্তী জঙ্গল থেকে একটি গাছের পাতা ছিড়ে এনে দিয়ে ব্যথা জায়গায় সেই পাতা মালিশ করতে বলে। প্রথমে তার মা বিশ্বাস না করলে, পরবর্তীতে ছেলের জেদে ওই পাতা পায়ে মালিশ করার কিছুক্ষণ পর দীর্ঘদিনের পায়ের ব্যথা ভালো হয়ে যায়। এভাবে প্রতিবেশীদের অনেকের রোগমুক্তি হলে বিষয়টি দ্রুত চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে।
এরপর ধীরে ধীরে গ্রামের গণ্ডি পেড়িয়ে উপজেলা, পরে জেলা; এমনকি এখন জেলার গণ্ডি পেরিয়ে অন্যান্য জেলা থেকে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ এসে ভিড় করছেন দীর্ঘদিনের রোগমুক্তির প্রত্যাশায়।

লাবিবের পরিবারের সদস্যদের দাবি, আল্লাহ প্রদত্ত অলৌকিক ক্ষমতাবলে লাবিব অসুস্থ রোগীদের বিনা পয়সায় চিকিৎসা করে। তবে, স্থানীয় সচেতন মহল বলছে, চিকিৎসা বিজ্ঞানে ঝাড়ফুঁকের কোনো ভিত্তি না থাকায় এগুলো শুধুমাত্র কুসংস্কার ছাড়া কিছুই নয়।

প্রতিদিন ভোর থেকে ১০টা এবং বিকেল ৫টা থেকে দুই ঘণ্টা ২ ধাপে চলে এই ঝাড়ফুঁকের কার্যক্রম। ঝাড়ফুঁক নিতে আসার রোগীদের মধ্যে নারীর আধিক্য চোখে পড়ার মত।
জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা নারী ও পুরুষ রোগী এবং রোগীর স্বজনরা বলেন, অনেকেই এই শিশু কবিরাজের পানিপাড়া বা তেলপড়া দিয়ে সুস্থ হয়েছেন শুনেছি। তাই আমরাও এসেছি স্বজনদের রোগমুক্তির আশায়। আমাদের বিশ্বাস আশা করি আমরাও সুস্থ হতে পারব।

স্থানীয় ষাটোর্ধ্ব হাবিবুর রহমান বলেন, আমার দ্বিতীয়বারের মতো স্ট্রোক হওয়ার পর একেবারে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলাম। লাঠি ছাড়া হাঁটতে পারতাম না। এই শিশু কবিরাজের চিকিৎসায় আমি এখন সম্পূর্ণ সুস্থ। আমি এখন লাঠি ছাড়া দ্রুত হাঁটতে পারি।
শিশুটির বাবা ওয়াহাব বলেন, আমার ছেলে শত শত মানুষের রোগ ভালো করেছে বলে রোগী এবং রোগীর স্বজনরা জানিয়েছেন। লাবিবের এই ক্ষমতা আল্লাহ প্রদত্ত। প্রথমে সে তার মাকে চিকিৎসা করে ভালো করেছে। পরে সুস্থ করেন এলাকার আঘাতপ্রাপ্ত স্থানীয় কয়েকজন ফুটবল খেলোয়ড়দের। এরপর থেকে জানাজানি শুরু হলে মানুষের ভিড় জমে। আল্লাহর নাম নিয়ে আমার ছেলে ফুঁ দিয়ে দিলে অনেকেই সুস্থ হয়ে যায়। তাই হাজারও লোক আসে আমাদের বাড়িতে।

জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের শীর্ষ কর্মকর্তা সিভিল সার্জন ডা. মুহাম্মদ শাহীন টেলিফোনে বলেন, এটা সম্পূর্ণ কুসংস্কার। চিকিৎসা বিজ্ঞানে এই পদ্ধতিতে রোগ মুক্তির কোনো ভিত্তি নেই। এ ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।শ্রীবরদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ জাবের আহমেদ বলেন, এই ঘটনাটি অবৈজ্ঞানিক এবং কুসংস্কার। যার কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নাই। ঠিকানাসহ অভিযোগ পেলে উপজেলা প্রশাসন যথাযথ আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিবে।
نظری یافت نشد


News Card Generator