আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ভারত থেকে দেশে ফিরিয়ে আনতে ইন্টারপোলকেই মূল ভরসা করছে সরকার।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ভারত থেকে দেশে ফিরিয়ে আনতে বাংলাদেশ সরকার কৌশলগতভাবে ইন্টারপোলকে মূল ভরসা করছে। সরকারের সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র থেকে জানা গেছে, ভারতের সাথে বন্দি প্রত্যর্পণ চুক্তি থাকা সত্ত্বেও রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থীর বিষয়টির কারণে এই চুক্তির মাধ্যমে তাঁকে ফেরত পাওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ। এই কারণেই ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল পুলিশ অর্গানাইজেশন (ইন্টারপোল)-এর মাধ্যমে 'রেড অ্যালার্ট' জারির উদ্যোগকে সরকার সর্বাধিক গুরুত্ব দিচ্ছে।
বাংলাদেশ পুলিশের ন্যাশনাল সেন্ট্রাল ব্যুরো (এনসিবি) ইতোমধ্যেই ইন্টারপোলকে দুই দফা চিঠি দিলেও এখন পর্যন্ত কোনো কার্যকর সাড়া মেলেনি। তবে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল মানবতাবিরোধী অপরাধে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে যে মৃত্যুদণ্ডের রায় দিয়েছেন, তার আনুষ্ঠানিক কপি হাতে পাওয়ার পরই এনসিবি আবারও ইন্টারপোলের কাছে নতুন করে চিঠি পাঠাবে। এই নতুন চিঠিতে তাঁকে 'দণ্ডপ্রাপ্ত অপরাধী' হিসেবে উল্লেখ করে জরুরি ভিত্তিতে প্রত্যাবর্তনের ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করা হবে।
পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বাহারুল আলম নিশ্চিত করেছেন যে, পূর্বে চিঠি দেওয়া হলেও তখন শেখ হাসিনা শুধুমাত্র ওয়ারেন্টপ্রাপ্ত ছিলেন। এখন তিনি সাজাপ্রাপ্ত হওয়ায় এবং ট্রাইব্যুনালের রায়ের অনুলিপি যুক্ত হওয়ায় ইন্টারপোল নোটিশ জারির ক্ষেত্রে আরও গুরুত্ব দেবে। সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, রাজনৈতিক ব্যক্তি হিসেবে নয়, বরং দণ্ডপ্রাপ্ত অপরাধী হিসেবেই তাঁকে দেশে ফিরিয়ে আনতে চাইছে বাংলাদেশ।
এদিকে, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমেও তাঁকে ফেরাতে পৃথক কূটনৈতিক উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন জানিয়েছেন, এই শাস্তিপ্রাপ্ত আসামিকে ফেরত চেয়ে ভারতের কাছে চিঠি পাঠানো হবে, যদিও পূর্বে পাঠানো চিঠির কোনো জবাব আসেনি। আইন ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল ভারতকে সতর্ক করে বলেছেন, এই 'গণহত্যাকারীকে' আশ্রয় দেওয়া অব্যাহত থাকলে তা বাংলাদেশের মানুষের বিরুদ্ধে 'শত্রুতা ও নিন্দনীয় আচরণ' হিসেবে বিবেচিত হবে।



















