শেখ হাসিনা উদ্ধারের পরিবর্তে আটকে পড়াদের চাপা দিতে বলেন: সাবেক এসএসএফ প্রধানের অভিযোগ


বাংলাদেশের ইতিহাসে অন্যতম হৃদয় বিদারক ঘটনা সাভারের রানা প্লাজা ধস। ২০১৩ সালের ৪ এপ্রিল সাভার বাসস্ট্যান্ডের কাছে ১০ তলা রানা প্লাজা ভবন ধসে নিহত হন ১,১৩৬ জন শ্রমিক এবং আহত হন দুই হাজারেরও বেশি মানুষ। জীবিত উদ্ধার করা হয় ২,৪৩৮ জনকে। শুধু বাংলাদেশ নয়, এই শিল্প দুর্ঘটনা সারা বিশ্বকে নাড়িয়ে দিয়েছিল। সেই ঘটনায় আহত-নিহতদের পরিবার ছাড়াও অসংখ্য লোকের মনে এখনও চাপা পড়ে থাকা মানুষের নিদারুণ আর্তনাদ ভেসে আসে।
উদ্ধার কাজে সার্বিক তদারকির দায়িত্বে ছিলেন তৎকালীন সেনাবাহিনীর নবম পদাতিক ডিভিশনের প্রধান, মেজর জেনারেল চৌধুরী হাসান সারওয়ার্দী। ২০২৩ সালের অক্টোবরে কারাগারে যাওয়া সাবেক এই এসএসএফ প্রধান গত ৬ আগস্ট মুক্তি পান। মুক্তির পর তিনি দাবি করেন, রানা প্লাজায় নিহতের সংখ্যা কম দেখাতে এবং উদ্ধার কাজ বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
মেজর জেনারেল সারওয়ার্দী বলেন, উদ্ধার কাজের এক পর্যায়ে শেখ হাসিনা তাকে নির্দেশ দেন, "অনেক তো উদ্ধার হলো, এবার আটকে পড়াদের চাপা দিয়ে দাও।" এসময় উদ্ধার কাজ বন্ধ করারও নির্দেশ দেওয়া হয়। তবে তিনি এই নির্দেশ মানতে অস্বীকার করেন। তিনি শেখ হাসিনার কাছে জবাব দেন, "এটি অসম্ভব।"
প্রথমে শেখ হাসিনা তাকে জীবিত কিংবা মৃত শেষ ব্যক্তিটিকে উদ্ধার না হওয়া পর্যন্ত অভিযান চালানোর নির্দেশনা দিয়েছিলেন। কিন্তু পরে তিনি বলেন, “স্পেকট্রা গার্মেন্টস নামে একটি গার্মেন্টস বিএনপির আমলে ধ্বংস হয়েছিল এবং ওই ঘটনায় মানুষ চাপা দেওয়া হয়েছে, কাউকে উদ্ধার করা হয়নি।”
রানা প্লাজা থেকে ১৭ দিন পর জীবিত উদ্ধার হওয়া রেশমার ঘটনাকে ঘিরে নানা সন্দেহ রয়েছে। এ বিষয়ে সারওয়ার্দী বলেন, “রেশমাকে উদ্ধারের পর অনেক আলোচনা হয়েছে। সংসদে এ নিয়ে প্রতিবাদও হয়েছে। কীভাবে উদ্ধার হলো, কী ঘটেছিল — এসব জানতে চাওয়া হয়েছিল। আমি নিজে এবং অন্যান্য সংগঠন থেকে দাবি করা হয়েছিল, এ ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্ত করা হোক। অনেক মিডিয়া টেলিভিশন আমার এবং রেশমার কাছ থেকেও সাক্ষাৎকার নিয়েছিল। কিন্তু পরে রেশমা পাঁচ তারকা হোটেলে চাকরি করতো — এসব কেউ প্রচার করেনি।”
এই অভিযোগগুলো নিয়ে এখনো জনমনে প্রশ্ন রয়ে গেছে। আসলেই কী হয়েছিল রানা প্লাজার সেই বিভীষিকাময় দিনগুলোতে?
Aucun commentaire trouvé