শেখ হাসিনা ভারতে আশ্রয় নেওয়া সব নেতাকে দেশে ফিরে যেতে নির্দেশ দিয়েছেন, শেখ হাসিনার কঠোর হুঁ শিয়া রি!..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
অভিযোগে ভারতে আশ্রয় নেওয়া আওয়ামী লীগ নেতাদের উদ্দেশ্যে চূড়ান্ত বার্তা দিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা—ফিরে না এলে আন্তর্জাতিক সহযোগিতায় ফিরিয়ে আনা হবে এবং আইনের মুখোমুখি করা হবে। ইতোমধ্যে ইউরোপ-আমেরিক..

বাংলাদেশের রাজনীতিতে ফের উত্তাল পরিস্থিতি। ভারতে পালিয়ে থাকা আওয়ামী লীগের একাধিক নেতার বিরুদ্ধে গণহত্যা, দমন-পীড়ন ও নানা অপরাধে অভিযুক্ত হওয়ার পর এবার কড়া অবস্থান নিয়েছেন দলীয় প্রধান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে স্পষ্টভাবে নির্দেশ দিয়েছেন, “ভারতে আশ্রয় নেওয়া সব নেতা আগামী দুই মাসের মধ্যে দেশে ফিরে আসুন। অন্যথায় আন্তর্জাতিক সহযোগিতার মাধ্যমে তাদের আটক করে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের মুখোমুখি করা হবে।”

এই ঘোষণার পরেই শুরু হয়েছে ব্যাপক আলোড়ন। ভারতে আশ্রয় নেওয়া আওয়ামী লীগ নেতাদের মধ্যে দেখা দিয়েছে চরম আতঙ্ক। বহু নেতা এখন দেশ ছাড়ার জন্য মরিয়া হয়ে পড়েছেন। তাদের মধ্যে অনেকে ইউরোপ এবং আমেরিকার উদ্দেশে পাড়ি জমিয়েছেন। একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে, ইতোমধ্যে ৫০ জনেরও বেশি নেতা ভারত ছেড়ে পশ্চিমা দেশে চলে গেছেন।

ভারত সরকারের নতুন পদক্ষেপে সংকটে অবৈধ বাংলাদেশি নেতারা

ভারত সরকার চলতি বছরের আগস্ট থেকে অবৈধ বিদেশিদের দেশে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া আরও জোরদার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর বিশেষ নজরদারির তালিকায় রয়েছেন বাংলাদেশের কিছু বিতর্কিত রাজনৈতিক নেতা। ফলে ‘পুশব্যাক’ এবং গ্রেফতারের আশঙ্কায় ভারতের অভ্যন্তরে থাকা এসব নেতা দ্রুত দেশ ত্যাগের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

প্রসঙ্গত, বাংলাদেশে চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা, মানবাধিকার লঙ্ঘন, দুর্নীতি ও প্রশাসনিক অপব্যবস্থার অভিযোগে অনেক নেতা বিভিন্ন সময়ে ভারতে পালিয়ে যান। তাঁদের বেশিরভাগের বিরুদ্ধে মামলাও চলমান রয়েছে, যা দেশে ফেরার ক্ষেত্রে প্রধান বাধা হিসেবে দেখা দিচ্ছে।

আন্তর্জাতিক সহযোগিতায় কঠোর অভিযান চালানোর ইঙ্গিত

সরকারি একাধিক সূত্র জানিয়েছে, যেসব নেতা দেশে ফিরে আসবে না, তাদের বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের রেড নোটিশ জারি, ভারত ও পশ্চিমা দেশের সঙ্গে সমন্বয় করে গ্রেফতার ও প্রত্যাবাসনের প্রক্রিয়া শুরু করা হবে। এমনকি বিদেশে থাকা তাদের সম্পদ জব্দ ও ব্যাংক হিসাব বরফ করার মতো পদক্ষেপও নেওয়া হতে পারে।

একজন নিরাপত্তা বিশ্লেষক বলেন, “প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ একটি টার্নিং পয়েন্ট। এতদিন যারা ভাবতেন বিদেশে পালিয়ে নিরাপদ থাকবেন, তাদের জন্য দিন শেষ হয়ে এসেছে। সরকার এবার আন্তর্জাতিক চাপ ও কূটনৈতিক কৌশল ব্যবহার করে তাদের আইনের আওতায় আনতে বদ্ধপরিকর।”

দলের অভ্যন্তরেও প্রতিক্রিয়া

আওয়ামী লীগের ভেতরেই এখন এই নির্দেশ নিয়ে আলোচনা তুঙ্গে। দলের অনেকে মনে করছেন, প্রধানমন্ত্রীর এই কড়া অবস্থান ভবিষ্যতের জন্য একটি বার্তা—দলীয় শৃঙ্খলা ভাঙলে বা অপরাধে জড়ালে কোনো রকম ছাড় পাওয়া যাবে না।

তবে দলের একটি অংশ বলছে, যেসব নেতা নির্দোষ অথচ পরিস্থিতির চাপে দেশ ছেড়েছেন, তাদের জন্য কি কোনো বিচারের সুযোগ রাখা হবে না? এ নিয়ে দলের অভ্যন্তরে মতবিরোধ থাকলেও, শেখ হাসিনার নির্দেশে আপাতত কোনো নমনীয়তার জায়গা রাখা হয়নি।

 

ভারতে আশ্রয় নেওয়া আওয়ামী লীগ নেতাদের জন্য সময় ফুরিয়ে আসছে। সরকারের কঠোর অবস্থান, আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ও শেখ হাসিনার হুঁশিয়ারি—সব মিলিয়ে এক নতুন মোড় নিচ্ছে বাংলাদেশের রাজনৈতিক চিত্রপট। যারা এখনও ভাবছেন নিরাপদে আছেন, তাদের জন্য আগামী দিনগুলো হতে পারে ভয়াবহ ঝুঁকিপূর্ণ। এখন দেখার বিষয়, শেখ হাসিনার এই আল্টিমেটামের পর কে কে দেশে ফিরে আসেন, আর কে কে পালানোর নতুন পথ খোঁজেন।

No comments found