close
লাইক দিন পয়েন্ট জিতুন!
শবেবরাত, যা 'ক্ষমার রজনী' হিসেবে পরিচিত, একটি বিশেষ রাত যা মুসলমানদের জন্য অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। আল্লাহ তায়ালা এই রাতে তার বান্দাদের প্রতি বিশেষ দয়া প্রদর্শন করেন এবং তাদের গুনাহ মাফ করে দেন। তবে, এমন কিছু মানুষ আছেন যাদের আল্লাহ ক্ষমা করবেন না, তারা হলেন হিংসা বা বিদ্বেষ পোষণকারী এবং মুশরিক ব্যক্তি।
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, "এটি অর্ধ শাবানের রাত, আল্লাহ তায়ালা এ রাতে তার বান্দাদের দিকে বিশেষ মনোযোগ দেন এবং ক্ষমা প্রার্থনাকারীদের ক্ষমা করেন।" তবে, এই রাতে আল্লাহ তায়ালা দুটি শ্রেণির মানুষকে ক্ষমা করেন না:
১. হিংসা পোষণকারী: যারা অন্যদের প্রতি বিদ্বেষ বা হিংসা ধারণ করেন। ২. মুশরিক ব্যক্তি: যারা আল্লাহর সঙ্গে কাউকে শরিক করেন, অর্থাৎ শিরক করেন।
শবেবরাতের ক্ষমা না পাওয়া ২ শ্রেণির মানুষ
মুয়াজ বিন জাবাল (রা.) থেকে বর্ণিত একটি হাদিসে উল্লেখ রয়েছে, নবীজি (সা.) বলেছেন, "মহান আল্লাহ অর্ধ-শাবানের রাতে তার সৃষ্টির দিকে রহমতের দৃষ্টি দেন, তবে মুশরিক ও হিংসা পোষণকারী ছাড়া সবাইকে ক্ষমা করে দেন।" (সহিহ ইবনে হিব্বান ৫৬৬৫)
মহান আল্লাহ সবচেয়ে বেশি অপছন্দ করেন শিরককারীকে, যাদের আল্লাহর সঙ্গে কাউকে অংশীদার সাব্যস্ত করা হয়। শিরক হল সবচেয়ে বড় গুনাহ, এবং আল্লাহ কখনও শিরকের গুনাহ ক্ষমা করবেন না, যদি না কেউ তাওবা করে এবং আল্লাহর কাছে ফিরে আসে। কোরআনে আল্লাহ ঘোষণা করেছেন, "নিঃসন্দেহে আল্লাহ তার সঙ্গে শিরক করাকে ক্ষমা করবেন না। তবে শিরক ছাড়া অন্য সব গুনাহ তিনি যাকে চান ক্ষমা করবেন।" (সুরা নিসা ৪৮)
হিংসা: একটি ভয়ংকর রোগ
হিংসা একটি অন্ধকার অনুভুতি যা মানুষের আমল, ভালো কাজ, নেকি এবং পুণ্য নষ্ট করে দেয়। হিংসার কারণে মানুষ নিজের পতনে পতিত হয়ে যায়। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, "হিংসা থেকে সাবধান! কারণ হিংসা নেকিকে এমনভাবে ধ্বংস করে, যেমন আগুন কাঠকে ধ্বংস করে।" (আবু দাউদ ৪৯০৩)
সাহাবি হজরত যুবাইর ইবনুল আওয়াম (রা.) থেকে বর্ণিত একটি হাদিসে নবীজি (সা.) বলেছেন, "তোমাদের পূর্বপুরুষদের একটি রোগ তোমাদের মধ্যে ছড়িয়েছে, তা হলো পরস্পর হিংসা-বিদ্বেষ এবং ঘৃণা। এই রোগ দীনকে ধ্বংস করে দেয়।" (সুনানে তিরমিজি : ২৫১০)
আল্লাহর প্রতি তাওবার পথ
তবে, আল্লাহ অতি দয়াশীল ও ক্ষমাপারায়ণ। তিনি বারবার নিজেকে ক্ষমাশীল বলে বর্ণনা করেছেন। শবেবরাত বা যেকোনো রাতেই, যদি বান্দা তার গুনাহের জন্য তাওবা করে, আল্লাহ তার গুনাহ মাফ করে দেন। হাদিসে এসেছে, "আল্লাহ প্রতি রাতে প্রথম আসমানে নেমে আসেন যখন রাতের দুই-তৃতীয়াংশ অতিক্রম হয়। তিনি বলেন, 'আমি বিশ্ব জগতের প্রতিপালক, এমন কেউ কি আছেন যিনি আমাকে ডাকবেন এবং আমি সাড়া দেব?'" (সহিহ বুখারি)
এ রাত আমাদের জন্য একটি সুযোগ, যেখানে আমরা আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইতে পারি, আমাদের গুনাহ মাফ করানোর জন্য তার দরবারে উপস্থিত হতে পারি। তাই শবেবরাতের রাতটি আমাদের জন্য একটি মহান সুযোগ, যাতে আমরা হিংসা, বিদ্বেষ, শিরক এবং অন্য সকল খারাপ গুণাবলী থেকে মুক্তি পেতে পারি এবং আল্লাহর রহমত লাভ করতে পারি।
نظری یافت نشد