যুদ্ধ নাকি বার্তা?
চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মি (PLA) ও চায়না স্টেট শিপবিল্ডিং কর্পোরেশনের ৭০৫ নম্বর গবেষণা ইনস্টিটিউট যৌথভাবে এমন এক বোমার পরীক্ষা চালিয়েছে, যা মাত্র দুই সেকেন্ডে ভয়ানক ধ্বংস চালাতে সক্ষম। পারমাণবিক নয় হলেও, এটি ১০০০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি তাপমাত্রা তৈরি করে— যা দিয়ে রাস্তাঘাট, সেতু বা সেনা ঘাঁটিকে নিমেষেই ভস্মে পরিণত করা যায়।
কীভাবে কাজ করে এই বোমা?
এই বোমার মূল উপাদান ম্যাগনেশিয়াম হাইড্রাইড, যা বিস্ফোরণের পর চক্রাকারে হাইড্রোজেন গ্যাস তৈরি করে এবং আগুন আরও বাড়িয়ে দেয়। এই আগুন এতটাই তীব্র যে অ্যালুমিনিয়াম পর্যন্ত গলে যেতে পারে। এটি শুধু সামরিক হামলা নয়, বরং কৌশলগত এলাকা দখল বা বাধা সৃষ্টির জন্য ব্যবহারযোগ্য।
ক্লিন এনার্জি, তবে ভয়াবহ আঘাত
চীন এটিকে পরিবেশবান্ধব "ক্লিন এনার্জি অস্ত্র" হিসেবে তুলে ধরলেও, এর ব্যবহার সরাসরি সামরিক উদ্দেশ্যেই— শত্রু ঘাঁটি ধ্বংস, নির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুতে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক এবং এলাকা দখল রোধ। বিশেষজ্ঞদের মতে, চীন এখন যুদ্ধের নতুন ঘরানার দিকে এগোচ্ছে, যেখানে পরমাণু ছাড়া একই ধরনের কৌশলগত ক্ষয়ক্ষতি ঘটানো সম্ভব।
তাইওয়ান ও যুক্তরাষ্ট্রকে ঘিরে উত্তেজনা বাড়ছে
সম্প্রতি তাইওয়ানের উপকূলে চীনের বড় পরিসরের সামরিক মহড়া ও লাইভ ফায়ার ড্রিল ছিল এই উত্তেজনার বড় ইঙ্গিত। যুক্তরাষ্ট্র এটিকে "ভয় দেখানো কৌশল" বললেও, চীনের ভাষ্য— তারা সব ধরনের যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত এবং শুধু পরমাণু নয়, বিকল্প শক্তিতেও তারা সক্ষম।
ল্যাব থেকে যুদ্ধক্ষেত্রে
এই হাইড্রোজেনভিত্তিক বোমার উপাদান ম্যাগনেশিয়াম হাইড্রাইড আগে শুধু ল্যাবে তৈরি হতো। এখন চীনে এর বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু হয়েছে এবং বছরে ১৫০ টন উৎপাদনের লক্ষ্য ধরা হয়েছে।
কৌশলগত বার্তা নাকি প্রস্তুতির ঘোষণা?
চীনের এই অস্ত্র প্রদর্শন কেবল একটি বিজ্ঞান-ভিত্তিক উন্নয়ন নয়, বরং বিশ্বশক্তিগুলোর প্রতি স্পষ্ট বার্তা— “আমরাও প্রস্তুত, এবং আগামীর যুদ্ধ হবে আরও নিখুঁত, আরও দ্রুত, এবং আরও কৌশলগত।”
সারাংশে বলা যায়:
চীনের নতুন এই বোমা শুধু আগুনের নয়, আগামীর ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনার ঘি-তে আগুন দেয়ার মতো। ‘ক্লিন এনার্জি’ শব্দটি শান্তির বার্তা হতে পারতো, কিন্তু বাস্তবে এটি হতে চলেছে আধুনিক যুদ্ধের নতুন রূপ।