close
লাইক দিন পয়েন্ট জিতুন!
সচিবালয়ে আগুন, টঙ্গী হত্যাকাণ্ড ও ইসকনের আস্ফালন: একই সূত্রে গাঁথা বলে দাবি মামুনুল হকের
বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা মুহাম্মদ মামুনুল হক বলেছেন, সচিবালয়ে আগুন, টঙ্গী হত্যাকাণ্ড ও ইসকনের কর্মকাণ্ড একই ষড়যন্ত্রের অংশ। তিনি এ ঘটনাগুলোকে দেশের স্বার্থবিরোধী ফ্যাসিবাদী শক্তির অপচেষ্টা বলে দাবি করেন।
আজ শুক্রবার জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেইটে বাংলাদেশ খেলাফত যুব মজলিসের ১৫ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে আয়োজিত যুব সমাবেশে প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
জাতীয় সংকটের বিবরণ
মাওলানা মামুনুল হক তার বক্তব্যে বলেন, “বাংলাদেশ এখন দুটি ভাগে বিভক্ত—একদিকে ভিনদেশি দালালরা, আরেকদিকে দেশপ্রেমিক জনতা। দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে এক সেবাদাসীর মাধ্যমে দেশকে জিম্মি করে রাখা হয়েছিল। ৫ আগস্টের বিপ্লবের পর সেই সেবাদাসী পালিয়ে গেলেও ষড়যন্ত্র থেমে নেই। সচিবালয়ে অগ্নিসংযোগ সেই ষড়যন্ত্রেরই অংশ।”
তিনি আরও বলেন, “আগুন দিয়ে তোমরা কাগজ পুড়িয়ে ফেলতে পারো, কিন্তু মানুষের মনে যে ঘৃণা জন্মেছে, তা কখনো মুছে ফেলতে পারবে না।”
টঙ্গী হত্যাকাণ্ড ও ইসকনের ভূমিকা
মাওলানা মামুনুল বলেন, “ইসকনের মাধ্যমে দেশের স্থিতিশীলতা ধ্বংসের চেষ্টা পরিষ্কার হয়েছে। টঙ্গী ইজতেমা মাঠে গভীর রাতে ঘুমন্ত মুসল্লিদের ওপর হামলা ও হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে। এই ঘটনা যারা ঘটিয়েছে, তারা তাবলীগ জামাতের কেউ নয়। তারা খুনী এবং ভিনদেশি শক্তির অংশ।”
তিনি দেশপ্রেমিক যুবকদের এই ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান।
অন্তর্বর্তী সরকারকে হুঁশিয়ারি
অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, “দেশবিরোধী শক্তিকে যদি আপনারা জায়গা দেন, তাহলে আপনাদের অবস্থান দুর্বল হয়ে পড়বে। সময় সীমিত, সঠিকভাবে সময় কাজে লাগান।”
ফ্যাসিবাদবিরোধী ঐক্যের ডাক
মাওলানা মামুনুল হক ফ্যাসিবাদবিরোধী সকল রাজনৈতিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেন, “আমরা আর কোনো ফেলানিকে সীমান্তে ঝুলতে দেখতে চাই না। আমরা সীমান্ত রক্ষীদের লাশ দেখতে চাই না। আমরা ছাত্র-জনতার অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে চাই। আওয়ামী লীগ বিভাজনের রাজনীতি করেছে, কিন্তু আজকের প্রজন্ম সেই বিভাজন ভেঙে দিয়েছে।”
তিনি দেশের অর্থনৈতিক সংকটের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, “মানুষ এখন ব্যাংকে গিয়ে টাকা পাচ্ছে না। পলাতক স্বৈরশাসকের দোসররা দেশের অর্থ বিদেশে পাচার করেছে। সেই টাকা দেশে ফিরিয়ে আনতে হবে।”
প্রধান অতিথির বক্তব্য
সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা ইসমাঈল নূরপুরী। তিনি তার বক্তব্যে বলেন, “শেখ হাসিনা ২০১৩ সালে জিকিররত মুসল্লিদের ওপর হামলা চালিয়ে ইসলামপ্রিয় জনতাকে শহিদ করেছেন। আজ যারা নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে, তারা এখনও প্রকৃত নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করতে পারেনি।”
তিনি আরও বলেন, “শেখ হাসিনা দেশের কাঠামো ধ্বংস করে পালিয়েছেন। যারা মনে করে তিনি ফিরে আসবেন, তারা ভুল করছে। ফ্যাসিবাদের দোসরদের ধরে প্রকাশ্যে মৃত্যুদণ্ড দিলে তবেই দেশে শান্তি ফিরবে।”
অন্যান্য বক্তাদের বক্তব্য
সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন খেলাফত মজলিসের সিনিয়র নেতারা। তারা দেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করে ঐক্যের ডাক দেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন মাওলানা ইউসুফ আশরাফ, মাওলানা জালালুদ্দিন আহমাদসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
সমাবেশটি পরিচালনা করেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের প্রকাশনা সম্পাদক মাওলানা রাকিবুল ইসলাম ও মজলিসে শূরা খাসের সদস্য মাওলানা ওয়ালী উল্লাহ মাহমুদ
কোন মন্তব্য পাওয়া যায়নি



















