close

কমেন্ট করুন পয়েন্ট জিতুন!

সবাই ভেবেছিলেন ঘুমোচ্ছেন, আদতে চিরঘুমে রিকশাচালক

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণকেন্দ্রে বসে ছিলেন এক রিকশাচালক। পথচারীরা ভেবেছিলেন তিনি হয়তো ঘুমোচ্ছেন। কিন্তু কিছুক্ষণ পর জানা যায়—তিনি আর জেগে উঠবেন না কখনও। ছাউনির পাশে বসে তিনি চিরতরে ঘুমিয়ে গেছেন, নীর..

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রস্থলে ঘটে গেল এক হৃদয়বিদারক ঘটনা, যা থমকে দিয়েছে শত পথচারীর মন। আজ ১ জুলাই, মঙ্গলবার বিকেলের দিকে টিএসসি সংলগ্ন ডাস এলাকায় একটি যাত্রী ছাউনির পাশে একটি রিকশায় বসে ছিলেন এক মধ্যবয়সী রিকশাচালক। তিনি ছিলেন নিশ্চল। কেউ ভাবেননি, সেই নিশ্চলতা চিরন্তন ঘুম হয়ে থাকবে।

প্রথমে সবাই ভেবেছিলেন, রিকশাচালক হয়তো ক্লান্ত হয়ে একটু বিশ্রাম নিচ্ছেন। কিন্তু ঘটনা মোড় নেয় ভিন্ন দিকে যখন একদল পথচারী, যারা আগেও তাকে একই অবস্থায় দেখেছিলেন, ফিরে এসে দেখেন—তার অবস্থার কোনো পরিবর্তন নেই। তখন সন্দেহ করে তারা তার শরীরে স্পর্শ করেন এবং বুঝতে পারেন—তিনি আর জীবিত নন।

এই মর্মান্তিক ঘটনাটি প্রথম সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেন ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় নেত্রী মানসুরা আলম। তিনি তার ফেসবুক পোস্টে লেখেন,

প্রথমে আমরা সবাই ভেবেছিলাম উনি ঘুমোচ্ছেন। কিন্তু পরে বুঝি—উনি চিরনিদ্রায় চলে গেছেন। এ যেন এক অবিশ্বাস্য মৃত্যু, যেখানে কেউ কান্নাও শোনেনি।

রিকশাচালকের মৃত্যু স্বাভাবিক না আকস্মিক—তা নিয়ে প্রথম থেকেই প্রশ্ন তৈরি হয়। অনেকের ধারণা, তিনি স্ট্রোক করেছিলেন। তবে পোস্টমর্টেম ছাড়া নিশ্চিত হওয়া সম্ভব নয়। এ ঘটনায় প্রাথমিকভাবে কোনো সহিংসতা বা আঘাতের আলামত পাওয়া যায়নি।

ঘটনাস্থলে পুলিশ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল টিম দ্রুত পৌঁছায়। তারা লাশটি নিজেদের হেফাজতে নেয় এবং পরিচয় শনাক্ত করার জন্য প্রয়োজনীয় কার্যক্রম শুরু করে। এখন পর্যন্ত নিহত ব্যক্তির পরিচয় জানা যায়নি। তার সঙ্গে কোনো জাতীয় পরিচয়পত্র বা মোবাইল ফোন ছিল না, যা পরিচয় শনাক্ত করতে সাহায্য করত।

ডিএমপি রমনা থানার একটি টিম এই মৃত্যুর ঘটনার প্রেক্ষিতে প্রাথমিক তদন্ত শুরু করেছে। প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্য গ্রহণ করা হয়েছে এবং আশপাশে থাকা সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করা হচ্ছে।

এই মৃত্যু কেবল একজন রিকশাচালকের নয়, বরং সমাজের এক গভীর বাস্তবতা—যেখানে কেউ ক্লান্ত হয়ে একটু বসলে আমরা ভাবি সে বিশ্রামে আছে, অথচ বাস্তবে সে চিরতরে বিদায় নিচ্ছে।

পথচারীদের অনেকেই এই ঘটনাকে ব্যথিত মন নিয়ে দেখেছেন। এক শিক্ষার্থী বলেন

আমরা প্রতিদিন এখানে কত লোক দেখি, কথা বলি, কেউ হয়তো একদিন আর ফিরে আসে না—এটাই হয়তো জীবনের নির্মমতা।

এখন পর্যন্ত মরদেহটি সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের হিমঘরে রাখা হয়েছে। কেউ যদি তার স্বজন হন বা তাকে চিনে থাকেন, দ্রুত যোগাযোগের আহ্বান জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন।

لم يتم العثور على تعليقات