close

কমেন্ট করুন পয়েন্ট জিতুন!

সাতক্ষীরার কালিগঞ্জে আইন লঙ্ঘন করে প্রকাশ্যে অবৈধভাবে ইট পোড়ানোর অভিযোগ..

শেখ আমিনুর হোসেন, সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার: avatar   
সাতক্ষীরার কালিগঞ্জে সরকারি আইন লঙ্ঘন করে প্রকাশ্যে অবৈধভাবে ইট পোড়ানোর প্রস্তুতি চলছে। ইট পোড়াতে ইতিমধ্যে উপকরণ হিসেবে হাজার হাজার মন আম, কাঁঠাল, শিশুফুল, বাবলা, খেঁজুর গাছসহ অন্যান্য উপকারী কাঠ স্তু..

শেখ আমিনুর হোসেন, সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার, সাতক্ষীরা:

সাতক্ষীরার কালিগঞ্জে সরকারি আইন লঙ্ঘন করে প্রকাশ্যে অবৈধভাবে ইট পোড়ানোর প্রস্তুতি চলছে। ইট পোড়াতে ইতিমধ্যে উপকরণ হিসেবে হাজার হাজার মন আম, কাঁঠাল, শিশুফুল, বাবলা, খেঁজুর গাছসহ অন্যান্য উপকারী কাঠ স্তুপ করা হয়েছে মর্মে অভিযোগ। পরিবেশ বিপর্যয় উপেক্ষা করে ইটপোড়াতে উপজেলার কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের রঘুনাথপুর গ্রামের মৃত আব্বাস শেখের পুত্র মারুফ হোসেন চ্যালেঞ্জ দিয়েছে।

সরেজমিন (শনিবার ১৪ জুন ২৫) ঘটনাস্থলে গেলে মারুফ হোসেনের বড় ভাই আয়ূব আলী শেখ বলেছেন বিগত ৩- ৪ বছর ধরে ইট পোড়ানোর কাজ চলছে। কেউ কোনদিন বাঁধা দেইনি। আপাতত এবারও কোন সমস্যা হবেনা। এভাবে ইটপোড়ানোর কাজ চলবে। এখানে কোন পরিবেশ দুষণ হচ্ছেনা।পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন এখানে কোন পরিবেশ দুষণ হয়না। কোন বাঁধাবিঘ্ন আসেনা। দুই একজন গ্রাম্য শত্রুতা বশত অভিযোগ করতে পারে। আমার ভাই কাঠের ব্যবসা করে, সেই কাঠ দিয়ে ইট পোড়াচ্ছি। মারুফ হোসেন নিজে বলেন পাজা সংলগ্নের এখানের সকল সম্পত্তি আমার। পরিবেশ দুষণ হওয়ার মতো কিছু নেই। 

লোকালয়ে মধ্যে ৩-৪ বিঘা জমির উপর ৫০ হাজার ইট পোড়ানোর জন্য ইট সাজানো হচ্ছে। পাশাপাশি আরও লক্ষাধিক ইট পোড়ানোর জন্য পাশে সংরক্ষণ করে রাখা হয়েছে। ইট পোড়ানোর জন্য আগে থেকে হাজার হাজার মন উপকারী গাছের কাঠ জড়ো করে রাখলেও মারুফ হোসেনের কোন অনুশোচনা নেই। বরঞ্চ তিনি বাংলাদেশের গর্বিত সেনাবাহিনীর দোহায় দিয়ে অন্যদের নিয়ে নিজে ব্যঙ্গাত্বক আচারণ প্রদর্শণ করেন। স্থানীয় ভুক্তভোগী মোঃ আরশাদ আলী বলেন, মারুফ হোসেন বিগত ৪-৫ বছর ধরে এখানে ইট পোড়ায়। লোকালয়ের মধ্যে ইট পোড়ালে ধোয়ায় এলাকায় কার্বণডাইঅক্সাইড ছড়িয়ে পড়ে। মানুষের দম বন্ধ হয়ে আসে। তাকে কিছু বল্লে আমাদের নামে মামলা ঠুকে দেয়। আমরা তাদের দেওয়া মামলায় জর্জরিত। দীর্ঘদিন তাদের ভয়ে বাড়ী থাকতে পারিনা। এলাকার অধিকাংশ পুরুষ মানুষের নামে ২ থেকে ১৫-২০টি করে মামলা রয়েছে। সাবেক এমপি জগলুল হায়দারসহ আওয়ামীগের নেতাদের সহায়তায় গ্রামের মানুষের বিগত ১৪/১৫ বছরে বেশ ক্ষতি করেছে। আমরা গরিব মানুষ কোর্টে হাজিরা দিতে দিতে আমাদের কাজের সময় ও অর্থ চলে যায় যাতায়াত করতে। রঘুনাথপুর গ্রামের রাফিজা বিবি, রেশমা বেগম, রফিকুল ইসলাম, আব্দুল হামিদ, শহিদুল ইসলাম, জামাত আলী মোল্লা, মেহেদী হাসান, নুরুজ্জামান সরদার, আবু সাঈদ সরদার, আশরাফ হোসেন, আব্দুর রহিম সহ শতাধিক মানুষ বলেন, প্রতিবছর মারুফ হোসেন ২-৪ ধাপে লোকালয়ে দুই তিন লাখ ইট পোড়ায়। ধোয়া, গন্ধ ও পরিবেশ দুষণে আমরা গ্রামে টিকতে পারিনা। প্রতিবাদ করলে আমাদের উপর হামলা করে। অন্যথা মামলা দিয়ে বাড়ী ছাড়া করে। 

সরকারি নীতিমালা উপেক্ষা করে মারুফ হোসেন লোকালয়ের ভিতর ইট পোড়াচ্ছে। ইট প্রস্তুত ও পোড়ানোর আইন থাকলেও তিনি তা মানছে না। স্কুল -মাদ্রাসা, হাসপাতাল এমনকি সড়কের ৩ কিলোমিটারের মধ্যে ইট পোড়ানো সরকারি আইন লঙ্ঘনের মধ্যে পড়লেও তিনি তা তোয়াক্কা করেননা। বিষয়টি কৃষ্ণনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাফিয়া পারভিন এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ইট পোড়ানোর বিষয়টি আমার জানা নেই। পরিবেশ বিপর্যয় করে কোন কাজের পক্ষে আমি নেই। বিষয়টি আমি খোজ খবর নেব। কালিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার অনুজা মন্ডলের হোটসএ্যাপ নম্বরে বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি জবাব দেননি। তবে রঘুনাথপুর গ্রামের শতশত মানুষ প্রচলিত আইনে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে অবৈধ ইটেরপাজা বন্ধ করার দাবী তুলেছেন।

Geen reacties gevonden


News Card Generator