আসন্ন ঈদুল আযহা উপলক্ষে সাতক্ষীরা জেলার ৭টি উপজেলায় কোরবানির জন্য মোট একলাখ ৬০৬টি পশু প্রস্তুত করা হয়েছে। এর মধ্যে ৪৯ হাজার ১৯৯টি গরু এবং বাকী ৫১ হাজার ৪০৭টির মধ্যে রয়েছে মহিষ, ছাগল ও ভেড়া। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের জেলা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এবছর জেলায় কোরবানির পশুর চাহিদা রয়েছে ৮৫ হাজার ৩১৮টি। চাহিদা মিটিয়ে এ জেলা থেকে এবার ১৫ হাজার ২৮৮টি পশু ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠানো যাবে।
জেলার ৭টি উপজেলার ১২ হাজার ৮৯৪টি ছোট-বড় খামার রয়েছে। ভারত সীমান্ত দিয়ে অবৈধ পথে গরু আসা বন্ধ থাকায় দেশী ও শংকর জাতের পশুপালনে আগ্রহ বাড়ছে সাতক্ষীরার খামারিদের। তাই কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে জেলার বিভিন্ন এলাকায় গড়ে উঠেছে কোরবানির গরু খামার। তবে দ্রব্যমূল্যের উর্দ্ধগতি ও গোখাদ্যের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় পশুপালন ব্যয় কিছুটা বেড়েছে। বিশেষত, শহরাঞ্চলে যেসব খামারিরা পশু পালন করেন তারা পুরোটাই বাজার থেকে কেনা খাবারের ওপর নির্ভরশীল।
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা বিষ্ণপদ বিশ্বাস জানান, এবছর সাতক্ষীরা জেলায় চাহিদার তুলনায় পর্যাপ্ত কোরবানির পশু রয়েছে। জেলায় কোরবানির পশুর চাহিদা রয়েছে ৮৫ হাজার ৩১৮টি। তার বিপরীতে জেলার ১২ হাজার ৮৯৪টি ছোট বড় খামারে বিক্রির জন্য প্রস্তুত রয়েছে একলাখ ৬০৬টি পশু। চাহিদার তুলনায় উদ্বৃত্ত থাকবে ১৫ হাজার ২৮৮টি পশু। এসব উদ্ধৃত পশু দেশের অন্য জেলায় পাঠানো যাবে।
তিনি আরো জানান, কোরবানির পশু বিক্রির জন্য জেলায় স্থায়ী হাট রয়েছে ৯টি। আর অস্থায়ী গরুর হাট তৈরি করা হয়েছে আরো ৬টি। এসব হাটে ক্রয় বিক্রয় করা যাবে যেকোন পশু। এছাড়াও রয়েছে অনলাইন বিক্রির ব্যবস্থা। গরুর হাটগুলোতে ১৫টি মেডিকেল টীম কাজ করছে। বাজার মনিটরিং করার জন্য জেলা প্রশাসনের রয়েছে ৯ সদস্যের একটি টিম। বাজারগুলোতে রয়েছে ব্যাংকিং ব্যবস্থা যাতে ক্রেতা-বিক্রেতা প্রতারনার শিকার না হন।
সাতক্ষীরা জেলার খামারিদের এ উৎসাহ শুধু অর্থনৈতিক উন্নয়নেই নয়, বরং স্থানীয় সামাজিক কাঠামোতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলছে। পশুপালন খাতে কর্মসংস্থানের সুযোগ বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং এ শিল্পে নতুন উদ্যোক্তাদের আগমন ঘটছে। এছাড়াও, স্থানীয় বাজারে গবাদিপশুর মূল্য স্থিতিশীল রাখতে এ উদ্যোগ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, সময়োপযোগী পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে কোরবানির পশু খাত আরও সমৃদ্ধ হতে পারে। সরকার এবং স্থানীয় প্রশাসনের সহায়তায় খামারিদের জন্য সহজ শর্তে ঋণ প্রদানের ব্যবস্থা করলে খাতের বিকাশ আরও ত্বরান্বিত হবে। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে এ খাতের সম্ভাবনা অনেক এবং সঠিক নীতিমালা প্রণয়নের মাধ্যমে তা নিশ্চিত করা সম্ভব।



















