শেখ আমিনুর হোসেন, সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার, সাতক্ষীরা;
সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ধুলিহর ইউনিয়নের জেয়ালা গ্রামে এক হৃদয়বিদারক ঘটনা ঘটে গেছে। মঙ্গলবার (২৪ জুন ২০২৫) ভোরে পুকুরে ভাসমান অবস্থায় তারামান বিবি (৬৫) নামের এক বৃদ্ধার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তাঁর নিজ ছেলে মোঃ আহাদ আলী প্রথমে মরদেহটি দেখতে পান।
নিহতের পরিবার জানায়, তারামান বিবি প্রতিদিন সকালে পুকুরে কাপড় ধোয়ার জন্য যেতেন। মঙ্গলবার সকালে তিনি পুকুরে গিয়ে আর বাসায় ফিরে আসেননি। তাঁর নাতি মোঃ মিলন হোসেন বলেন, "আমার দাদী প্রতিদিনের মতোই সকালে পুকুরে গিয়েছিলেন। কিন্তু পরে আব্বু ও আম্মুর চিৎকার শুনে পুকুরের ঘাটে এসে দেখি সেখানে তাঁর বালতি ও কাপড় পড়ে আছে। হয়তো তিনি পুকুরের ঘাট থেকে অসাবধানতাবশত পড়ে গিয়েছিলেন।"
পুকুরে মৃতদেহ ভাসতে দেখে তার ছেলে ও পুত্রবধু আয়েশা দ্রুত পুকুরে নেমে মরদেহটি পাড়ে নিয়ে আসেন। পাড়ে নিয়ে আসার পর গ্রাম্য ডাক্তার গৈয়রপদ ঢালিকে খবর দেয়া হয়। তিনি এসে পরীক্ষা করে তারামান বিবিকে মৃত ঘোষণা করেন। এরপর দুপুর ২.৩০ মিনিটে নামাজে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তার মরদেহ দাফন করা হয়।
এই ঘটনা স্থানীয় জনগণের মধ্যে শোকের ছায়া ফেলে। তারামান বিবির মৃত্যুতে এলাকাবাসী দুঃখ প্রকাশ করেছেন এবং পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করেছেন। তবে এই মৃত্যু কি দুর্ঘটনা নাকি অসাবধানতা, তা নিয়ে এলাকায় আলোচনা চলছে।
স্থানীয় প্রশাসন বিষয়টি সম্পর্কে জানেন এবং তারা এই ব্যাপারে তদন্ত শুরু করেছে। সাতক্ষীরা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ জানান, "আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি এবং পরিবারের সদস্যদের সাথে কথা বলেছি। এই মুহূর্তে এটি একটি দুর্ঘটনা বলেই ধারণা করা হচ্ছে, তবে আমরা বিষয়টি আরও পর্যালোচনা করছি।"
এই ঘটনার পর থেকে এলাকাবাসীর মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি পেয়েছে এবং অনেকেই পুকুরে যাওয়ার সময় আরও সাবধানতা অবলম্বন করছেন। এই ধরনের দুর্ঘটনা এড়ানোর জন্য এলাকাবাসীকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে।
ভবিষ্যতে এ ধরনের দুর্ঘটনা এড়াতে স্থানীয় প্রশাসন ও স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে সচেতনতা প্রচারাভিযান পরিচালনা করা যেতে পারে। পুকুরগুলোর চারপাশে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করাও প্রয়োজন। এছাড়া, স্থানীয় স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের সাথে আলোচনা করে এ ধরনের দুর্ঘটনা প্রতিরোধে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে।