শেখ আমিনুর হোসেন, সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার, সাতক্ষীরা:
বাংলাদেশের দক্ষিণ পশ্চিম অঞ্চলের শেষ জেলা সাতক্ষীরা। জেলার শ্যামনগর উপজেলা বাংলাদেশের মধ্যে সবচেয়ে বড় উপজেলা। এ উপজেলার শেষ প্রান্তে কপোতাক্ষ নদ ও খোলপেটুয়া নদী বেষ্টিত দ্বীপভূমি গাবুরা। এখানকার প্রায় সাত হাজার পরিবারের ৫০ হাজার মানুষের বসবাস। গাবুরার মানুষের প্রতি মুহুর্তে সিডোর ও আইলাসহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের সঙ্গে লড়াই করে বেঁচে থাকতে হয়। প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জে থাকতে হয়। তাই এখানকার সকল বাসিন্দার বিনামূল্যে সরকারি আইনগত সুবিধা পাওয়ার সূযোগ রয়েছে। গাবুরার মানুষের মধ্যে শতভাগ বিনামূল্যে সরকারি আইনগত সুবিধা পৌঁছে দিয়ে একটি মডেল ইউনিয়ন হিসেবে পরিণত করা হবে।
শুক্রবার (২৩ মে '২৫) বিকালে সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার গাবুরা ইউনিয়নের জেলিয়াখালী রাধা গোবিন্দ মন্দির মাঠে জেলা লিগ্যাল এইড কমিটি আয়োজিত বিনামূল্যে সরকারি আইনগত সহায়তা বিষয়ক মত বিনিময় ও উদ্বুদ্ধকরণ সভায় সভাপতির বক্তব্যে জেলা লিগ্যাল এইড কমিটির চেয়ারম্যান ও সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মোঃ নজরুল ইসলাম এসব কথা বলেন।
জেলা লিগ্যাল এইড কমিটির চেয়ারম্যান ও সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মোঃ নজরুল ইসলামের সভাপতিত্বে সাতক্ষীরা জজ কোর্টের সরকারি কৌসুলী অ্যাড. অসীম কুমার মণ্ডলের ব্যবস্থাপনায় আয়োাজিত সভায় বক্তব্য রাখেন মুখ্য বিচারিক হাকিম মোঃ মাইনুদ্দিন, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাড. এম শাহ্ আলম, সরকারি কৌশুলী (জিপি) অ্যাড. অসীম কুমার মণ্ডল (১), জেলা লিগ্যাল এইডের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিচারক সিনিয়র সহকারি জজ মোহাম্মদ নাসিরউদ্দিন ফরাজী, জজ কোর্টের পাবিলক প্রসিকিউটার অ্যাড. আব্দুস সাত্তার, প্রমুখ।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন সাতক্ষীরার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক শরিফ মোঃ সানাউল হক, অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতের বিচারক আবু বক্কর ছিদ্দিক, চতুর্থ আদালতের বিচারক মোঃ গোলাম কিবরিয়া, পঞ্চম আদালতের বিচারক নুসরত জাবিন, অতিরিক্ত মুখ্য বিচারিক হাািকম প্রনব কুমার হুইসহ ২০ জন বিচারক।
এ ছাড়া বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের লিগ্যাল এইড কমিটির সদস্য অ্যাড. মাসুদুল আলম দোহা, জজ কোর্টের প্রশাসনিক কর্মকর্তা আবু সুফিয়ান, আব্দুল কাদের, জুডিশিয়াল কোর্টের প্রশাসনিক কর্মকর্তা ইসমাইল হোসেনসহ বিভিন্ন কর্মকর্তা কর্মচারি, জজ কোর্টের কয়েকজন অতিরিক্ত পিপি ও আইনজীবীগণ এ সভায় উপস্থিত ছিলেন।
সভাপতির বক্তব্যে মোঃ নজরুল ইসলাম আরো বলেন, মহামান্য হাইকোর্টে রেজিষ্টার হিসেবে কাজ করার সময় প্রত্যন্ত অঞ্চলে কাজ করার আকাঙ্খা জাগে। তাই সাতক্ষীরায় বদলী হয়ে আসার পর তিনি পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী, আদিবাসী, মুণ্ডা, নৃগোষ্ঠী, প্রাকৃতিক বিপর্যয় কবলিত জনগোষ্ঠীর মাঝে কাজ করার চেষ্টা করে যাচ্ছেন। গাবুরাকে বাদ দিয়ে শ্যামনগর তথা সাতক্ষীরার উন্নয়ন সম্ভব নয়। যারা আয়কর রিটার্ণ জমা দেন না তারা সকলেই বিনামূল্যে সরকারি সহায়তা পাওয়ার যোগ্য। গাবুরার মানুষ কত কষ্ট করে বেঁচে থাকে তা এখানে আসার সময় বৃষ্টি না হলে বুঝতে পারতাম না।
গাবুরাবাসী ইতিহাসের একটি অংশ উল্লেখ করে তিনি বলেন, শুধুমাত্র তিনি নন, তার বিচারক মণ্ডলীর ২০ থেকে ২২ জন গাবুরাতে এসে বৃষ্টির মধ্যে এখানকার জনগোষ্ঠীর যে দুর্ভোগ দেখেছেন তা বিচারিক ক্ষেত্রে অভিজ্ঞতায় হিসেবে কাজে আসবে। গাবুরার বিচারপ্রার্থীদের জন্য সময়ের আবেদন মঞ্জুর করে হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, গাবুরায় সরকারি আইনগত সহায়তার ব্যাপারে নতুন দিগন্ত উন্মেচন হবে। এ অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে পর্যায়ক্রমে সাতক্ষীরার বিভিন্ন প্রত্যন্ত অঞ্চলে সরকারি আইনগত সহায়তার বিষয়টি সুদৃঢ় করা হবে। এ ছাড়া এই প্রত্যন্ত অঞ্চলে লিগ্যাল এইড এর উদ্বুদ্ধকরণ সভা করানোর ব্যাপারে সরকারি কৌসুলী অ্যাড. অসীম কুমার মণ্ডলের ভূয়সী প্রশাংসা করেন তিনি।
এর আগে জেলা ও দায়রা জজ মোঃ নজরুল ইসলামের নেতৃত্বে বিচারক মণ্ডলী, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি, জজ কোর্টের পিপি, জিপিসহ অনেকেই লিগ্যাল এইড এর পরিষেবাকে মাঠ পর্যায়ে পৌঁছে দিতে ও জনসচেতনতা সৃষ্টি করতে পায়ে হেঁটে ইউনিয়নের সকল শ্রেণীর মানুষের বাড়ি বাড়ি যেয়ে লিফলেট ও  ভিজিটিং কার্ড বিতরণ করেন। লিগ্যাল এইড এ কি কি সহায়তা পাওয়া যাবে সে সম্পর্কে গ্রামবাসিকে সম্যক ধারণা দেন তারা।
অনুষ্ঠান শুরুতেই পবিত্র কোরান তেলোয়াত ও পবিত্র গীতাপাঠ করা হয়। এরপর সভাপতিকে এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে ফুলের তোড়া দিয়ে বরণ করে নেওয়া হয়।
সমগ্র অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন, শ্যামনগর সহকারি জজ আদালতের বিচারক মোঃ রুবায়েত হাসান শাওন।
 'আই নিউজ বিডি' অ্যাপ
  'আই নিউজ বিডি' অ্যাপ
  
  
 
		 
				 
			



















 
					     
			 
						 
			 
			 
			 
			 
			 
			