সাতক্ষীরায় জগন্নাথদেবের উল্টা রথযাত্রা সম্পন্ন, হাজারো ভক্তের সমাগম..

শেখ আমিনুর হোসেন, সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার, সাতক্ষীরা avatar   
সাতক্ষীরায় জগন্নাথদেবের উল্টা রথযাত্রা বিভিন্ন ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে সম্পন্ন হয়েছে..

শেখ আমিনুর হোসেন, সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার, সাতক্ষীরা:

সাতক্ষীরায় জগন্নাথদেবের উল্টা রথযাত্রা শনিবার (০৫ জুলাই '২৫) বিশাল আয়োজনের মধ্য দিয়ে সম্পন্ন হয়েছে। এই ধর্মীয় উৎসবটি শহরের কাটিয়া (কর্মকার পাড়া) সর্বজনীন পূজা মন্দির থেকে শুরু হয় এবং হাজার হাজার ভক্তের উপস্থিতিতে শ্রীশ্রী জগন্নাথদেব নিজ বাড়ি সদরের ধুলিহর ব্রহ্মরাজপুর মঠ মন্দিরে ফিরে যান।

সনাতন ধর্মের শাস্ত্র অনুযায়ী, জগন্নাথ কলিযুগের ভক্তদের উদ্ধার করার জন্য রথযাত্রার আয়োজন করে থাকেন। তাঁর রশি টানার মাধ্যমে কল্যাণ লাভের বিশ্বাসে যুবক, বৃদ্ধ, তরুণ, শিক্ষার্থীসহ সব বয়সের মানুষ এই উৎসবে অংশ নেন। জগন্নাথ দেবের রশি টানা একটি পবিত্র কর্মকাণ্ড হিসেবে বিবেচিত হয় যা ভক্তদের সকল বিপদ থেকে মুক্ত রাখে বলে বিশ্বাস করা হয়।

জগন্নাথ দেব এবছর এক সপ্তাহের অধিক সময় মাসির বাড়িতে অবস্থান করেন। প্রতিদিন সন্ধ্যায় এখানে ভাগবত আলোচনা ও ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়। এই সময় উপস্থিত হাজার হাজার ভক্তদের দুপুরে অন্নপ্রসাদ বিতরণ করা হয়। প্রতিদিন হাজার হাজার ভক্তের সম্মিলনে কাটিয়া সার্বজনীন মন্দির মিলন মেলায় পরিণত হয়।

প্রতি বছর আষাঢ় মাসে শুক্লা পক্ষের দ্বিতীয় তিথিতে শ্রী জগন্নাথ, বলদেব ও সুভদ্র নিজ বাড়ি থেকে মাসির বাড়ির যান। এ সময় ভক্তরা বিভিন্ন লোভনীয় ফল ও মিষ্টি সহকারে তাদের সাথে থাকেন।

এই উৎসবে সাতক্ষীরা সদর সর্বজনীন পূজা মন্দিরের সভাপতি গৌর চন্দ্র দত্ত, রথযাত্রা উদযাপন কমিটির আহবায়ক শঙ্কর কুমার রায়, যুগ্ম আহ্বায়ক সমরেশ কুমার দাশ, বীর মুক্তিযোদ্ধা সুভাষ সরকার, প্রাক্তন শিক্ষা অফিসার কিশোরী মোহন সরকার, জেলা জুয়েলারি সমিতির সাধারণ সম্পাদক মনোরঞ্জন কর্মকার মন্টুসহ আরো অনেক বিশিষ্ট ব্যক্তি উপস্থিত ছিলেন। তাদের সাথে ছিলেন সাধু, পন্ডিত, পুরোহিত এবং হাজারো ভক্তবৃন্দ।

এই উৎসবটি শুধুমাত্র ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকেই নয়, বরং সামাজিক ও সাংস্কৃতিক মিলনমেলার একটি অনন্য উদাহরণ হিসেবে দেখা যায়। সমাজের সকল স্তরের মানুষ এই রথযাত্রায় অংশগ্রহণ করে, যা সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্যের বার্তা বহন করে। এছাড়াও, এই ধরনের অনুষ্ঠানে মানুষের মধ্যে ধর্মীয় বিশ্বাস ও ঐতিহ্যের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা বৃদ্ধি পায়।

ভবিষ্যতে এই ধরনের উৎসবগুলি আরও বৃহত্তর আকারে পালিত হবে বলে আশা করা যায়, যা সমাজের সকল স্তরের মানুষের মধ্যে ঐক্য ও সম্প্রীতি বজায় রাখতে সহায়ক হবে।

No se encontraron comentarios