close

কমেন্ট করুন পয়েন্ট জিতুন!

রমজানের মধ্যে ভোট প্রচারণা? এপ্রিল নির্বাচনের প্রস্তাব ঘিরে ফুঁসছে বিএনপি!..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
প্রধান উপদেষ্টার ঘোষিত এপ্রিল মাসে জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তাবে তীব্র আপত্তি জানিয়েছে বিএনপি। দলটি বলছে, রমজানের মধ্যে প্রচারণা কঠিন হবে এবং জাতির প্রত্যাশা পূরণ হয়নি। ঈদের পর যুগপৎ আন্দোলনের শরিকদের সঙ..

রমজানের মধ্যে নির্বাচন! এপ্রিলের ভোটের প্রস্তাবে ফুঁসছে বিএনপি, বলছে "এটা জনগণের সঙ্গে প্রতারণা"

বাংলাদেশে ১৩তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সম্ভাব্য সময়সূচি ঘোষণার পর থেকেই রাজনীতির মাঠে শুরু হয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। সর্বশেষ গত শুক্রবার সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস জানান, ২০২৬ সালের এপ্রিল মাসের প্রথমার্ধে যেকোনো একদিন জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তাঁর এই ঘোষণার পরপরই বিরোধী দল বিএনপি একে “অবাস্তব, অপ্রস্তুত এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত” আখ্যা দিয়ে তীব্র আপত্তি জানিয়েছে।

 “রমজানে প্রচারণা সম্ভব নয়, এটা পরিকল্পিত কৌশল”— বিএনপি

বিএনপির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, এপ্রিল মাসে নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণের ফলে রাজনৈতিক দলগুলোকে রমজানের মধ্যে প্রচারণা চালাতে হবে, যা ধর্মীয় দিক, আবহাওয়া এবং জনগণের সার্বিক অবস্থা বিবেচনায় মোটেও যুক্তিসঙ্গত নয়। বিশেষ করে গ্রীষ্মকালীন প্রচণ্ড গরম, ঝড়বৃষ্টি ও রোজার ক্লান্তির মধ্যে নির্বাচনী কার্যক্রম এক প্রকার অসম্ভব বলে উল্লেখ করেছে দলটি।

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, “রমজানের রোজা রেখে জনগণ প্রচারণায় অংশ নিতে পারবে না। আর এপ্রিল মাসে পাবলিক পরীক্ষা থাকে, আবহাওয়া থাকে অস্থিতিশীল। ফলে এই সময়ে নির্বাচন আয়োজন জাতির সঙ্গে প্রতারণার শামিল।” তিনি আরও বলেন, “যে সময় নির্বাচন নির্ধারণ করা হয়েছে, তাতে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবেই বিরোধী মত দমনের সুযোগ রাখা হয়েছে।”

 “ডিসেম্বরে নির্বাচন চাই”— বিএনপির অবস্থান স্পষ্ট

বিএনপি দীর্ঘদিন ধরেই ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন চেয়ে আসছে। দলটির ভাষ্য, বছরের শেষ ভাগে নির্বাচনের আয়োজন হলে তা আবহাওয়া, ধর্মীয় অনুষ্ঠান এবং শিক্ষাবর্ষ সবকিছুর সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়। প্রধান উপদেষ্টার ঘোষণার পর রাতেই বিএনপির স্থায়ী কমিটির জরুরি ভার্চুয়াল বৈঠক বসে, যেটিতে সভাপতিত্ব করেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

সেই বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, ঈদুল আজহার ছুটি শেষে দলের যুগপৎ আন্দোলনের শরিক ও সমমনা রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে পরবর্তী কর্মসূচি নির্ধারণ করা হবে। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, “প্রধান উপদেষ্টার ঘোষণা জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণ করেনি। ঈদের পর আমরা সবাই মিলে বসে সিদ্ধান্ত নেব।”

“অন্য গোষ্ঠীর প্রভাব?” — সময়সূচির পেছনে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ

বিএনপি মনে করছে, প্রধান উপদেষ্টার এই ঘোষণার পেছনে রাজনৈতিক প্রভাব রয়েছে। তাদের মতে, সরকার বা সরকারঘেঁষা গোষ্ঠী একতরফাভাবে ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য সময়সূচি এমনভাবে নির্ধারণ করেছে, যাতে বিরোধী দলের আন্দোলন এবং প্রচার কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হয়।

বিএনপির নেতা আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, “৯০ শতাংশ দলের দাবিকে পাশ কাটিয়ে যে সময়সূচি দেওয়া হলো, তা জনগণকে অবজ্ঞা করার সামিল।”

🔍 নির্বাচন কমিশনের অবস্থান

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূস জানান, তার ঘোষিত সময়সীমার ভিত্তিতেই নির্বাচন কমিশন নির্ধারিত সময়সূচিতে নির্বাচনের রোডম্যাপ প্রকাশ করবে। তবে কমিশন এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো সময়সূচি বা তফসিল ঘোষণা করেনি। ফলে রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা বহাল রয়েছে।


 সারসংক্ষেপ:

  • এপ্রিল মাসে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তাব দিয়েছে প্রধান উপদেষ্টা

  • রমজানে নির্বাচনী প্রচারণা কঠিন, বলছে বিএনপি

  • দলটির দাবি, ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন হতে হবে

  • ঈদের পর যুগপৎ আন্দোলনের শরিকদের সঙ্গে বসবে বিএনপি

  • ঘোষণা ঘিরে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের ইঙ্গিতও দিয়েছে দলটি


 উপসংহার:
রমজান মাস, গরমের দাপট ও পাবলিক পরীক্ষার মতো বাস্তব পরিস্থিতি সামনে রেখে নির্বাচন আয়োজনের সময়সূচি নিয়ে জনমনে বিভ্রান্তি এবং রাজনৈতিক অস্থিরতা বাড়ছে। এই মুহূর্তে বিএনপি সরাসরি কোনো আন্দোলনে না গেলেও ঈদের পর যে রাজপথ গরম হতে চলেছে, তা বলাই বাহুল্য।

Geen reacties gevonden