রমজানের আগেই ভোট! ড. ইউনূস–তারেক বৈঠকে যুগান্তকারী সমঝোতা, নির্বাচন এগিয়ে আসছে ফেব্রুয়ারিতে..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
লন্ডনে ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও তারেক রহমানের বহুল আলোচিত বৈঠকে মিলল যুগান্তকারী সমাধান। আগামী জাতীয় নির্বাচন রমজানের আগেই—ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে আয়োজনের প্রাথমিক ঐকমত্য। রাজনৈতিক অচলাবস্থা কাটিয়ে জাতি পেল..

রমজানের আগেই জাতীয় নির্বাচন—রাজনীতিতে নতুন গতি আনল লন্ডনের এক বৈঠক। ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও তারেক রহমানের মধ্যে অনুষ্ঠিত ঐতিহাসিক আলোচনায় তৈরি হয়েছে আগামী নির্বাচনের নতুন সময়রেখা।

গতকাল লন্ডনের ডরচেস্টার হোটেলে অনুষ্ঠিত একান্ত বৈঠকে নির্বাচনের সময়সীমা, বিচার ও সংস্কার ইস্যুতে ঐকমত্যে পৌঁছান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। রুদ্ধদ্বার এই বৈঠক শেষেই প্রকাশিত যৌথ বিবৃতিতে জানানো হয়—২০২৬ সালের রমজানের আগেই জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের বিষয়ে দুই পক্ষ সম্মত হয়েছেন, যদি সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়।

🔍 বৈঠকের নেপথ্যে:

শুক্রবার লন্ডনের স্থানীয় সময় সকাল ৯টা থেকে সাড়ে ১০টা পর্যন্ত চলে দুই নেতার বৈঠক। রাজনৈতিক অঙ্গনে বহু চর্চিত এই বৈঠকের শুরু থেকেই উভয় পক্ষের মধ্যে ছিল সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্কের ইঙ্গিত। হাস্যোজ্জ্বল ছিলেন তারেক রহমান, যা রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে সংকট নিরসনের বার্তা দেয়।

যৌথ ব্রিফিংয়ে উপস্থিত ছিলেন খলিলুর রহমান ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, তারেক রহমান নিজে নির্বাচন এগিয়ে আনার প্রস্তাব দেন এবং খালেদা জিয়াও সেই প্রস্তাবে সম্মত। ড. ইউনূস জানান, যদি সংস্কার ও বিচার প্রক্রিয়ায় পর্যাপ্ত অগ্রগতি হয়, তবে নির্বাচন ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি আয়োজন করা যেতে পারে।

🗳 সম্ভাব্য তারিখ: ১২ ফেব্রুয়ারি?

চাঁদ দেখা সাপেক্ষে ২০২৬ সালের রমজান শুরু হতে পারে ১৮ ফেব্রুয়ারি। ফলে নির্বাচন ১২ ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এর আগে একাধিক জাতীয় নির্বাচনও বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত হয়েছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, রমজানের আগে ভোট হলে প্রশাসনিক প্রস্তুতি ও আনুষ্ঠানিকতা সহজভাবে সম্পন্ন করা যাবে।

🎤 ফখরুলের প্রতিক্রিয়া: “এটা দেশের গণতন্ত্রের জন্য সুসংবাদ”

তারেক রহমান বৈঠক শেষেই বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে ফোন করেন এবং বিস্তারিত জানান। পরে গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয়ে ফখরুল সাংবাদিকদের জানান, “এই বৈঠকটি একটি টার্নিং পয়েন্ট।” তিনি বলেন, “নেতারা দেখিয়েছেন, দরকার হলে দেশকে রক্ষা করতে ঐক্যবদ্ধ হওয়া সম্ভব।”

🖊 উপহার বিনিময়েও সৌহার্দ্য

বৈঠকের শুরুতেই ড. ইউনূসকে দুটি বই ও একটি কলম উপহার দেন তারেক রহমান। বই দুটি ছিল—গ্রেটা থুনবার্গের ‘No One Is Too Small to Make a Difference’ এবং ‘Nature Matters’। ইউনূস উপহারে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং খালেদা জিয়াকে ধন্যবাদ জানান।

🧠 বিশ্লেষণ: এখনই আশাবাদ নয়, বাস্তবায়নই মূল চ্যালেঞ্জ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক কাজী মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, “বৈঠকটি ইতিবাচক, তবে রাজনীতিতে কিছুই চূড়ান্ত নয়।” তিনি সতর্ক করে বলেন, “এই আলোচনার সফল বাস্তবায়ন নির্ভর করবে রাজনৈতিক দলগুলোর পরবর্তী পদক্ষেপ এবং সংস্কার প্রক্রিয়ার বাস্তব অগ্রগতির ওপর।”

🎯 বিএনপির অবস্থান পরিবর্তন

এর আগে বিএনপি নির্বাচন এগিয়ে আনতে চাপ দিচ্ছিল। তারা ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন দাবি করলেও, বৈঠকের মাধ্যমে নমনীয়তায় ফিরে আসে। দলীয় চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া নিজেই কূটনৈতিক সমঝোতার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের পরামর্শ দেন।

⏳ এখন কী?

যদিও এখনো নির্বাচন কমিশন নির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণা করেনি, তবে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান জানিয়েছেন, “দু’পক্ষ সম্মত হয়েছে। আশা করি, নির্বাচন কমিশন খুব শিগগিরই তারিখ জানাবে।”


শেষ কথা:
এই ঐতিহাসিক বৈঠক শুধু একটি নির্দিষ্ট তারিখ ঠিক করেনি, বরং দেশের রাজনৈতিক দৃশ্যপটকে করে দিয়েছে অনেকটাই পরিষ্কার। রমজানের আগেই ভোট হওয়া মানে রাজনৈতিক সংকট থেকে একটা কাঙ্ক্ষিত উত্তরণের সম্ভাবনা। তবে রাজনৈতিক বাস্তবতায় কিছুই স্থায়ী নয়—নেতারা ঠিক যে ঐক্য দেখালেন, সেটা যদি মাঠের রাজনীতিতে বাস্তবায়ন হয়, তাহলে এটাই হবে দেশের জন্য নতুন সূর্যোদয়।

Aucun commentaire trouvé


News Card Generator