close
ভিডিও আপলোড করুন পয়েন্ট জিতুন!
ফেসবুকে তৎকালীন আওয়ামী সরকারের বিরুদ্ধে পোস্ট করায় র্যাব পরিচয়ে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় ধামরাইয়ের রহমত উল্লাহকে। ১৬ মাস নিখোঁজ থাকার পর গত শনিবার (২১ ডিসেম্বর) তিনি অবশেষে বাড়ি ফিরেছেন। তার পরিবার ও স্বজনরা এই দীর্ঘ সময় ধরে তাকে খুঁজে না পেয়ে চরম উদ্বেগে ছিলেন।
রহমত উল্লাহ ধামরাইয়ের গাঙ্গুটিয়া ইউনিয়নের বড় নালাই গ্রামের মৃত আবদুর রবের ছেলে। পরিবারের দাবি, ২০২৩ সালের ২৯ আগস্ট রাত ১২টার দিকে র্যাব পরিচয়ে তাকে তুলে নেওয়া হয়।
নিখোঁজের পর কী ঘটেছিল?
রহমত উল্লাহর ভাই ওবায়দুল্লা বলেন, “তুলে নেওয়ার সময় আমাদের জানানো হয় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাকে নেওয়া হচ্ছে এবং পরে ছেড়ে দেওয়া হবে। কিন্তু এরপর মানিকগঞ্জ র্যাব ক্যাম্পসহ ঢাকার বিভিন্ন র্যাব অফিস, ডিবি অফিস, ও থানায় খোঁজ করেও কোনো সন্ধান পাইনি।”
পরিবারের অভিযোগ, থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করতে গেলেও শুরুতে তাদের ডায়েরি নিতে অস্বীকৃতি জানানো হয়। দেড় মাস পর পুলিশ ডায়েরি গ্রহণ করলেও কোনো অগ্রগতি দেখা যায়নি।
ভারতের মাটিতে রহমত উল্লাহ:
পরিবার জানতে পারে, রহমত উল্লাহকে অবৈধভাবে ভারতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। ভারতে পাসপোর্ট না থাকার কারণে তাকে ছয় মাস কারাভোগ করতে হয়।
ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) শুক্রবার তাকে ১৩ জন বাংলাদেশির সঙ্গে একটি নদী পার করিয়ে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেয়। সেখান থেকে অন্যরা বাড়ি ফিরে গেলেও রহমত স্থানীয় লোকজনের পরামর্শে রহনপুর পুলিশ তদন্তকেন্দ্রে আশ্রয় নেন।
রহমত উল্লাহর অভিজ্ঞতা:
রহমত উল্লাহ বলেন, “র্যাব পরিচয়ে আমাকে গাড়িতে তোলা হয় এবং কালো কাপড়ে চোখ বেঁধে দেওয়া হয়। কোথায় নেওয়া হচ্ছিল কিছুই বুঝতে পারিনি। কয়েক মাস বাংলাদেশে রাখার পর আমাকে ভারতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। এরপর ভারতীয় পুলিশ আমাকে ধরে জেলে পাঠায়।”
তিনি আরও জানান, এই দীর্ঘ সময়ের অধিকাংশ ঘটনা তার মনে নেই। তাকে দেখা গেছে মানসিকভাবে অস্বাভাবিক অবস্থায়।
পরিবারের প্রতিক্রিয়া:
রহমত উল্লাহর মা মমতাজ বেগম বলেন, “আমার ছেলেকে খুঁজতে অনেক চেষ্টা করেছি। র্যাব, থানা, ডিবি—সবখানে গিয়েছি। কেউ কোনো তথ্য দেয়নি। আমি শুধু আল্লাহর কাছে বিচার চেয়েছি। আজ আমার ছেলে ফিরে এসেছে, এটাই বড় শান্তি।”
পুলিশের বক্তব্য:
গোমস্তাপুর থানার ওসি খায়রুল বাসার বলেন, “রহমত উল্লাহ আমাদের তদন্তকেন্দ্রে এসে তার পরিচয় দেন। তিনি জানান, র্যাব পরিচয়ে তাকে তুলে নেওয়া হয়েছিল এবং পরে ভারতে পাচার করা হয়। তাকে অস্বাভাবিক মনে হয়েছে এবং তিনি খুব কম কথা বলেছেন।”
নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে:
এই ঘটনা কি নিছক এক অপহরণ, নাকি এর পেছনে রয়েছে আরও গভীর ষড়যন্ত্র? পরিবারের প্রশ্ন, একজন নাগরিককে কীভাবে র্যাব পরিচয়ে তুলে নিয়ে দেশের বাইরে পাঠানো হলো এবং কেন এ বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হলো না?
এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা এবং রহমত উল্লাহর পরিবার।
Hiçbir yorum bulunamadı



















