close

কমেন্ট করুন পয়েন্ট জিতুন!

রিজার্ভ বেড়ে ৩১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
প্রবাসী আয়ে রেকর্ড গড়ায় দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৩১.৬৮ বিলিয়ন ডলার ছাড়াল। ইতিহাসের সর্বোচ্চ রেমিট্যান্সপ্রবাহ রিজার্ভ বৃদ্ধিতে বড় ভূমিকা রাখছে।..

২০২৪-২৫ অর্থবছরের শেষ প্রান্তে এসে বাংলাদেশ পেল এক বিশাল অর্থনৈতিক স্বস্তির খবর। বাংলাদেশ ব্যাংকের আজকের প্রকাশিত হালনাগাদ প্রতিবেদন অনুযায়ী, দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ৩১ দশমিক ৬৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা চলতি অর্থবছরে রেমিট্যান্সপ্রবাহের রেকর্ড ভাঙা স্রোতের ফল।

বিশ্লেষকরা বলছেন, বিগত অর্থবছরের তুলনায় এই অগ্রগতি দেশের অর্থনীতির জন্য এক বিশেষ বার্তা বহন করে। ব্যাংকিং খাত থেকে শুরু করে আমদানি-রপ্তানি ভারসাম্য এবং বিনিয়োগ পরিস্থিতি—সবক্ষেত্রেই এই রিজার্ভ প্রবৃদ্ধি ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, বিদায়ী অর্থবছর ২০২৪-২৫-এর জুন মাসের শেষ সপ্তাহ পর্যন্ত (২৯ জুন) মোট রেমিট্যান্স এসেছে ৩০ দশমিক ২১ বিলিয়ন ডলার, যা দেশের ইতিহাসে এক অর্থবছরে সর্বোচ্চ প্রবাসী আয়।
এই প্রবল রেমিট্যান্স স্রোতই মূলত দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভকে এই উচ্চতায় নিয়ে এসেছে।

একজন ব্যাংক কর্মকর্তা জানান,প্রবাসীরা ঈদের মৌসুমে এবং অর্থবছরের শেষের দিকে পরিবারে অর্থ পাঠিয়েছেন আগের যেকোনো সময়ের তুলনায় বেশি। এর ফলেই এই রেকর্ড রিজার্ভ।

তবে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) মানদণ্ড অনুযায়ী হিসাব করলে—অর্থাৎ ব্যালান্স অব পেমেন্টস অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল ইনভেস্টমেন্ট পজিশন ম্যানুয়াল (বিপিএম৬) অনুসারে বাংলাদেশের নিট রিজার্ভ বর্তমানে দাঁড়ায় ২৬ দশমিক ৬৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার
এর মানে দাঁড়ায়—যেসব অর্থ আসলে ব্যবহারযোগ্য, সেই পরিমাণ কিছুটা কম হলেও এখনকার ২৬ বিলিয়ন ডলার নিট রিজার্ভও আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে যথেষ্ট ইতিবাচক ইঙ্গিত বহন করে।

বিশ্বব্যাপী ডলারের মজুদ কমে যাওয়ার প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের এই অর্জন বিশেষভাবে তাৎপর্যপূর্ণ। অনেক দেশ যেখানে মুদ্রাসঙ্কটে ভুগছে, সেখানে বাংলাদেশ তার বৈদেশিক লেনদেনের সক্ষমতা ধরে রেখেছে। আমদানি ব্যয় সামলানো, বৈদেশিক ঋণের কিস্তি পরিশোধ, এবং ব্যালান্স অব পেমেন্টসের ভারসাম্য রক্ষা—এই তিনটি ক্ষেত্রে রিজার্ভ একটি বড় ঢাল হিসেবে কাজ করে।

অর্থনীতিবিদ ড. মাহফুজুর রহমান বলছেন,রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়ে যাওয়াটা কেবল রিজার্ভ বৃদ্ধিই নয়, বরং দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার নির্দেশক। তবে এই গতি ধরে রাখতে হলে হুন্ডি রোধ, সহজ প্রেরণ প্রক্রিয়া এবং প্রণোদনা বজায় রাখতে হবে।

রিজার্ভ বাড়লেও অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন, আগামীতে এই রিজার্ভ ধরে রাখা একটি বড় চ্যালেঞ্জ হতে পারে। কারণ এলসি মঞ্জুরি, বিদেশি ঋণের পরিশোধ এবং অর্থবছরের শুরুতে আমদানি ব্যয় বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

তবে রেমিট্যান্স প্রবাহ যদি বর্তমান হারে বজায় থাকে এবং রপ্তানিখাতে প্রবৃদ্ধি দেখা দেয়, তাহলে বাংলাদেশ তার রিজার্ভ আরও শক্তিশালী করতে পারবে বলে আশা করা যায়।

প্রবাসীদের আন্তরিক শ্রম ও দেশের অর্থনৈতিক নীতির ফলেই এই সাফল্য এসেছে। তবে রিজার্ভ রক্ষা এবং আরও উন্নয়নের জন্য এখন প্রয়োজন বাস্তবভিত্তিক পরিকল্পনা এবং প্রবাসীদের আরও উৎসাহিত করার কার্যকর পদক্ষেপ।

Nema komentara