close

ভিডিও দেখুন, পয়েন্ট জিতুন!

রাষ্ট্রপতিকে শপথ পড়ানো নিয়ে রুলের চূড়ান্ত শুনানি ৭ জুলাই..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
রাষ্ট্রপতিকে শপথ পড়াবেন কে—স্পিকার না প্রধান বিচারপতি? হাইকোর্ট ৭ জুলাই চূড়ান্ত শুনানির তারিখ নির্ধারণ করেছে। সংবিধানিক বিতর্কে উত্তাল হচ্ছে রাজনৈতিক অঙ্গন।..

রাষ্ট্রপতির শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে ‘স্পিকার না প্রধান বিচারপতি’—এমন সংবেদনশীল প্রশ্ন নিয়ে দেশজুড়ে শুরু হয়েছে আইনি ও রাজনৈতিক আলোড়ন। এই প্রশ্নের চূড়ান্ত নিষ্পত্তি হতে চলেছে আগামী ৭ জুলাই, যেদিন হাইকোর্ট চূড়ান্ত শুনানির জন্য দিন নির্ধারণ করেছে।

গত সোমবার (২৩ জুন) বিচারপতি শশাঙ্ক শেখর সরকারের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চ এই দিন ধার্য করেন। বিষয়টি এখন কেবল একটি আইনি লড়াই নয়, বরং একটি সংবিধানিক ব্যাখ্যার দ্বন্দ্ব—যা দেশটির শাসনব্যবস্থার মৌলিক কাঠামোর সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত।

রিটের সূচনা হয় গীতিকবি শহীদুল্লাহ ফরায়জীর এক আবেদন থেকে। তিনি গত ১০ মার্চ একটি রিট দায়ের করেন, যেখানে তিনি ১৯৭২ সালের সংবিধানের আলোকে রাষ্ট্রপতির শপথ প্রধান বিচারপতির মাধ্যমে গ্রহণের বিধান পুনরায় চালুর নির্দেশনা প্রার্থনা করেন।

১৯৭২ সালের মূল সংবিধান অনুযায়ী, রাষ্ট্রপতিকে শপথ পাঠ করাতেন প্রধান বিচারপতি। কিন্তু চতুর্থ সংশোধনীর মাধ্যমে এই ধারাটি পরিবর্তিত হয়, এবং এর পর থেকে রাষ্ট্রপতির শপথ করানোর দায়িত্ব জাতীয় সংসদের স্পিকারের কাঁধে বর্তায়। এই পরিবর্তনেই তৈরি হয় জটিলতা, যা আজ আদালতের দরজায়।

১১ মার্চ রিটের প্রাথমিক শুনানি শেষে হাইকোর্ট রুল জারি করেন এবং চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে নির্দেশ দেন আইন সচিব, মন্ত্রিপরিষদ সচিবসহ সংশ্লিষ্টদের।

কিন্তু এখন পর্যন্ত রুলের জবাব আদালতে দাখিল করা হয়নি। এ অবস্থায় সোমবার রিটটি হাইকোর্টের কার্যতালিকায় ৪ নম্বর ক্রমিকে ওঠে, এবং কেবল শুনানির তারিখ নির্ধারণের জন্য শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।

আবেদনকারীর পক্ষে আদালতে ছিলেন আইনজীবী ওমর ফারুক, আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ মেহেদি হাসান।

এই রুল শুধু একটি রুটিন আদালতের আদেশ নয়; বরং এটি একটি মৌলিক প্রশ্নের জবাব খুঁজছে—রাষ্ট্রপতির শপথ সংবিধান অনুযায়ী সঠিকভাবে হচ্ছে কি না?

এটি ভবিষ্যতের রাষ্ট্রপতি, সরকার ও বিচার বিভাগের সম্পর্ক নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই রুলের রায় বাংলাদেশের সাংবিধানিক শৃঙ্খলা ও ভারসাম্যে দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেলবে।

আইনজীবী ওমর ফারুক সাংবাদিকদের জানান, “এখনো রুলের জবাব পাওয়া যায়নি। তাই কেবল শুনানির তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে আমরা আশাবাদী ৭ জুলাই চূড়ান্ত শুনানি অনুষ্ঠিত হবে এবং আদালত এ বিষয়ে দিকনির্দেশনামূলক রায় দেবেন।”

আইন অঙ্গনের অনেকেই বলছেন, এই রুলের মাধ্যমে হয়তো দীর্ঘদিনের একটি সাংবিধানিক বিতর্কের অবসান ঘটবে।

রাষ্ট্রপতির শপথ গ্রহণ প্রক্রিয়া নিয়ে এমন প্রশ্ন আগে কখনো সামনে আসেনি। কিন্তু বর্তমান বাস্তবতা এবং সংবিধানের মূল চেতনার আলোকে হাইকোর্ট যে সিদ্ধান্ত নেবে, তা ভবিষ্যতের পথনির্দেশ হয়ে থাকবে।

কোন মন্তব্য পাওয়া যায়নি