close

কমেন্ট করুন পয়েন্ট জিতুন!

রাঙামাটিতে ছাত্রলীগ নেতাকে মারধর করে পুলিশের হাতে তুলে দিল ছাত্রদল-শিবির, সংঘর্ষে আহত ৫..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
রাঙামাটিতে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের এক নেতাকে ধরে পুলিশের হাতে তুলে দেয় ছাত্রদল ও শিবির। পরে একে কেন্দ্র করে ছাত্রদল-শিবিরে নিজেদের মধ্যে তীব্র সংঘর্ষ হয়, আহত হন অন্তত পাঁচজন। ঘটনাস্থলে হস্তক্ষেপ করে পরিস্থ..

রাঙামাটির শান্ত শহর বনরূপা শুক্রবার দুপুরে হঠাৎ রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। জুমার নামাজ শেষে যখন শহরবাসী ছায়া খুঁজছিল, তখনই ছাত্ররাজনীতির উত্তপ্ত দ্বন্দ্ব বিস্ফোরিত হয় শহরের কেন্দ্রস্থলে।

সেখানে নিষিদ্ধ ঘোষিত রাঙামাটি জেলা ছাত্রলীগ কমিটির সিনিয়র সহ-সভাপতি আনোয়ার হোসেন কায়সার এক ট্যাক্সিতে করে চট্টগ্রাম যাচ্ছিলেন। পথে বনরূপা এলাকায় ছাত্রদল ও ছাত্রশিবিরের কর্মীরা তার গতিরোধ করে। প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, ট্যাক্সি থামানোর পর কায়সারকে গাড়ি থেকে টেনে নামানো হয় এবং তার ওপর চলে বেধড়ক মারধর। এক পর্যায়ে তার পরনে থাকা পাঞ্জাবিও ছিঁড়ে ফেলা হয়।

স্থানীয় জনতা ও পথচারীদের মধ্যে মুহূর্তেই ছড়িয়ে পড়ে উত্তেজনা। কেউ ভিডিও করতে শুরু করে, কেউ আবার পুলিশের হটলাইন নম্বরে ফোন দেয়। কয়েক মিনিটের মধ্যে ঘটনাস্থলে আসে রাঙামাটি কোতোয়ালি থানা পুলিশ।

থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. সাহেদ জানান, “আমরা খবর পেয়েই দ্রুত ঘটনাস্থলে যাই এবং কায়সারকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসি। ঘটনাটি তদন্ত করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”

তবে পরিস্থিতি এখানেই থেমে থাকেনি। কায়সারকে মারধরের সময় হঠাৎ ছাত্রদল ও ছাত্রশিবিরের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি শুরু হয়।

ছাত্রদল নেতাদের অভিযোগ—আক্রমণের সময় শিবিরের একজন কর্মী ছাত্রদলের দুই নেতাকে উদ্দেশ্যহীনভাবে মারধর করেন।
রাঙামাটি সরকারি কলেজ ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বাহাদুর শাহ বলেন,

আমরা সবাই কায়সারকে ঘিরে আছি, এমন সময় হঠাৎ শিবিরের এক কর্মী আমাকে ও আকাশকে বিনা উস্কানিতে ঘুষি মারে। ওখান থেকেই গন্ডগোল শুরু হয়।

এই ঘটনার পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। উত্তেজিত ছাত্রদল কর্মীরা শিবিরকর্মীদের ওপর পাল্টা হামলা চালান। এতে শিবিরের অন্তত ৫ জন সদস্য গুরুতর আহত হন। আহতদের রাঙামাটি সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে বলে জানা গেছে।

পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করলে পুলিশ ও সেনাবাহিনী যৌথভাবে অভিযান চালায় এবং উভয় পক্ষকে ছত্রভঙ্গ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

ছাত্রলীগের চিহ্নিত সন্ত্রাসী কায়সারকে ধরার সময় আমরা তাকে ঠিকমতো চিনতে পারিনি। এ কারণে ছাত্রদল ও শিবিরের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি হয়। আমরা দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়েই সবাইকে থামাতে পেরেছি।

এদিকে রাঙামাটি জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মামুনুর রশীদ একে ‘দুঃখজনক ভুল বোঝাবুঝি’ বলে উল্লেখ করেছেন।

আমরা দুই পক্ষকেই বোঝাচ্ছি। এমন অনাকাঙ্ক্ষিত সংঘর্ষে কেউই লাভবান হয় না। আমরা বসে আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টি মীমাংসার চেষ্টা করছি।

এই ঘটনা আবারো দেখিয়ে দিল—বাংলাদেশের ছাত্ররাজনীতিতে সংঘর্ষ ও বিভেদ কতটা তুচ্ছ কারণে বিস্ফোরিত হতে পারে। যেখানে রাজনীতির কথা হওয়ার কথা ছিল আদর্শ, সংগঠন আর ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব গঠনের, সেখানে শত্রুতা আর ভুল বোঝাবুঝির রাজনীতি সমাজে আতঙ্ক ও হতাশা ছড়াচ্ছে।

Walang nakitang komento


News Card Generator