রাজনীতির মুখোশে লুকানো দানব: এম এ খালেকের বিরুদ্ধে স্ত্রী নির্যাতন ও দুর্নীতির ভয়াবহ অভিযোগ....

Md Ismail Hossain avatar   
Md Ismail Hossain
একজন মিস্ত্রির ছেলের রাজনীতির পথচলা—এ এক অনুপ্রেরণার গল্প হতে পারত। কিন্তু সেই গল্পই আজ রূপ নিয়েছে এক নারীর কান্না, এক সন্তানের বিচ্ছেদ, আর সমাজের বিবেককে নাড়া দেওয়া রাজনৈতিক দুর্নীতির ভয়ানক কাহিনিতে।..

দুর্নীতির সিঁড়ি বেয়ে রাজনীতির চূড়ায় -

২০১৪ সাল পর্যন্ত এম এ খালেক ছিলেন একজন ভিডিও ক্যামেরাম্যান। বাবার মিস্ত্রির আয়ে চলত সংসার। তবে রাজনীতির ‘আলাদিনের চেরাগ’ তার জীবন পালটে দেয় রাতারাতি। স্থানীয় যুবলীগ নেতা রমজানের ছত্রছায়ায় শুরু হয় চাঁদাবাজি, দখলবাজি ও সন্ত্রাসের রাজত্ব।

শুধু এখানেই শেষ নয়—রাজশাহীর বড় নেতাদের সান্নিধ্য, মেয়র খায়রুজ্জামান লিটনের ঘনিষ্ঠতা এবং রাজনৈতিক সুবিধাবাদী লেনদেনে খালেক হয়ে উঠেন কোটি টাকার ঠিকাদার। বিশ্ববিদ্যালয়, রুয়েটসহ একাধিক সরকারি প্রকল্পের কাজ এককভাবে পেতে থাকেন।

সূত্র জানায়, কিছু রাজনৈতিক নেতার সঙ্গে অবৈধ নারী সংক্রান্ত সম্পর্কের মাধ্যমেও খালেক তার অবস্থান পাকাপোক্ত করে।

পারিবারিক নির্যাতনের নারকীয় অধ্যায়-

২০০৬ সালে এম এ খালেক বিবাহ করেন তার আপন মামাতো বোনকে। বিয়ের পরপরই শুরু হয় শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন। প্রতিবেশীদের মতে, স্ত্রীকে প্রায় প্রতিদিনই মারধর করতেন খালেক। তার বিকৃত মানসিকতা ছিল এলাকাজুড়ে আলোচনার বিষয়।

শ্বশুরবাড়ির সদস্যরাও এই নির্যাতনে অংশ নেন, কারণ তারা খালেকের টাকার প্রভাবে নিরব সম্মতি দেন। স্ত্রীর বিরুদ্ধে চলে ষড়যন্ত্র, যাতে তাকে সংসার থেকে উৎখাত করা যায়।

ছাত্র আন্দোলনে গুলিবর্ষণ ও পরকীয়ার অভিযোগ-

২০২৪ সালের ছাত্র আন্দোলনের সময় এম এ খালেকের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের ওপর গুলিবর্ষণ ও মারধরের অভিযোগ ওঠে। কিন্তু অর্থের জোরে কোনো মামলা পর্যন্ত হয়নি।

এরপর ঢাকায় পালিয়ে গিয়ে বন্ধুর শালির সঙ্গে অবৈধ সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। একমাত্র সন্তানকে স্ত্রীর কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন করে নিয়ে যান ঢাকায়, যেখানে তিনি এখন একটি ভাড়া বাসায় অবস্থান করছেন বলে জানা গেছে। 

তালাক ও সন্তান অপহরণের অভিযোগ-

২০২৫ সালের মে মাসে, পোস্ট অফিসের মাধ্যমে তালাক পাঠান এম এ খালেক। স্ত্রী কাবিনের ন্যূনতম অর্থও পাননি। বর্তমানে অর্থনৈতিক অসচ্ছলতার কারণে মামলা পর্যন্ত করতে পারেননি তিনি। ১৯ বছরের সংসার জীবনে শুধু দিয়েছে শারীরিক নির্যাতন আর লাঞ্ছনা ।

এদিকে তার একমাত্র পুত্র সন্তানকে রাতের আঁধারে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এখনো পর্যন্ত সন্তান মায়ের কাছে ফেরেনি।

স্থায়ী প্রতিরোধের আহ্বান স্থানীয়দের-

স্থানীয় জনগণের মধ্যে এম এ খালেকের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করছে। তারা জানান, খালেক বা তার পরিবারের কেউ এলাকায় ঢুকলে প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে এবং তাকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হবে।

বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, খালেক এখন বিএনপি-জামায়াত সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের মাসোয়ারা দিয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নাচোল, নওগাঁসহ বিভিন্ন এলাকায় ঠিকাদারি কাজ করে যাচ্ছে। আরও উল্লেখ, নিয়মিত বিগত সরকারের অনুগত পুলিশ প্রশাসনের সাথে নিয়মিত কথা বলে আসছে। তার প্রতিষ্ঠান " মেসার্স খালেক এন্টারপ্রাইজ" সরকারি টেন্ডারে অংশগ্রহন করে আসছে । শুধু তাই নয় তার বোন জানাই লক্ষীপুর এর মাছ ব্যবসায়ী মোহন এর মাধ্যমে এখন অবৈধ টাকা বিভিন্ন জায়গায় নেওয়া দেওয়া দায়িত্ব আছেন । 

এক সন্তানের কান্নায় ভেঙে পড়া মা এখন শুধু প্রার্থনা করেন—"আমার ছেলেটা যেন ফিরে আসে আমার কাছে"।

প্রশ্ন ওঠে—রাজনীতির ক্ষমতা কি এমনই ভয়াবহ রূপ নিতে পারে? যেখানে একজন নারী তার সম্মান, সংসার ও সন্তান হারায়? যেখানে একজন দুর্নীতিবাজ নেতা অবাধে ঘুরে বেড়ায়, আর একজন মা আইনের সহায়তা পাওয়ার আশায় পথ চেয়ে বসে থাকে?

এই কি বাংলাদেশে রাজনীতির সত্যিকারের রূপ?

Nessun commento trovato


News Card Generator