close

ভিডিও দেখুন, পয়েন্ট জিতুন!

রাজনীতির আলোচনার মঞ্চে এক নেতার বিয়ে পড়ালেন চরমোনাই পীর

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
রাজনৈতিক সভার মাঝেই সবাইকে চমকে দিয়ে এক নেতার বিয়ে পড়ালেন চরমোনাই পীর। ইসলামী শরিয়ত মেনে আকস্মিক এই বিয়েতে উপস্থিত সবাই অভিভূত হয়ে পড়েন।..

রাজনীতির মঞ্চে যখন আলোচনা চলছে দেশের বিভিন্ন সংকট, দলীয় অবস্থান ও ধর্মীয় ঐক্য নিয়ে—ঠিক তখনই ঘটে যায় এমন এক ঘটনা, যা কেউ কল্পনাও করেনি। ওলামা ও সুধী সমাবেশের সেই অনুষ্ঠানে হঠাৎ করেই বেজে ওঠে মাইকে এক ঘোষণার শব্দ, “এখনই একজন নেতার বিয়ে পড়ানো হবে!”—প্রথমে অনেকেই ভেবেছিলেন, এটি হয়তো রসিকতা বা প্রতীকী কিছু। কিন্তু না, মুহূর্তের মধ্যেই বদলে যায় পুরো পরিবেশ।

চরমোনাই পীর, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম নিজ হাতে সম্পন্ন করেন ইসলামী শরিয়াহ মোতাবেক সেই বিয়ের কাজ। দোয়া-মোনাজাত, বিয়ের কবুল, সাক্ষীর উপস্থিতি এবং শরিয়াহ অনুযায়ী সব আনুষ্ঠানিকতা মেনে সম্পন্ন হয় এই আকস্মিক বিবাহ।

বর হচ্ছেন সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার রফিনগর ইউনিয়নের মাওলানা সাইফুল ইসলাম, যিনি ওলামা ঐক্যের সক্রিয় সদস্য। তাঁর বাবা আবু বকর এবং মা মুছাম্মৎ সামিয়া বেগম। কনে তানজিনা আক্তার মৌ, যিনি একই উপজেলার বাগবাড়ি উলুকান্দি গ্রামের মানিক মিয়া ও ফুলমতি বেগমের মেয়ে। উভয় পরিবারের সম্মতি ও উপস্থিতিতে এই বিয়ে সম্পন্ন হয়।

বর মাওলানা সাইফুল ইসলাম নিজেই জানান, “পীর সাহেবের আগমনের খবর পেয়েই আমাদের মনে হয়, হুজুরের হাতেই যদি বিয়ে হয়, তা হবে আমাদের জীবনের বড় সৌভাগ্য। এই ভেবেই তাৎক্ষণিকভাবে তাঁর অনুমতি চাই। তিনি দেরি না করে সাথে সাথেই আমাদের বিয়ে পড়িয়ে দেন।”

অনুষ্ঠানে উপস্থিত অতিথিরা প্রথমে বিস্মিত হলেও পরে প্রশংসা করেন এই ব্যতিক্রমী উদ্যোগের। অনেকে বলেন, “এটা শুধু বিয়ে নয়, বরং ইসলামী সমাজ ব্যবস্থার এক বাস্তব রূপ। একজন প্রখ্যাত আলেমের মাধ্যমে, জনসম্মুখে এবং শরিয়াহ মোতাবেক বিয়ে—এমন উদাহরণ আরও হওয়া উচিত।”

বিয়ের পর অতিথিদের আপ্যায়নের জন্য খেজুর বিতরণ করা হয়। অনাড়ম্বর এই আয়োজন ছিল কিন্তু তাতে আন্তরিকতার কোনো ঘাটতি ছিল না। উপস্থিত অনেকে বলেন, এই অভিজ্ঞতা তাঁরা জীবনেও ভুলবেন না।

যেখানে রাজনীতির মাঠে হিংসা, কলহ, বিতর্কের ছড়াছড়ি, সেখানে এই একটিমাত্র মুহূর্ত যেন শান্তির বার্তা দিল। ভালোবাসা, সম্মান ও ধর্মীয় অনুশাসনকে সামনে রেখে এই বিয়ের ঘটনা সমাজে এক নতুন দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।

সামাজিক মাধ্যমে ইতোমধ্যে ভাইরাল হয়েছে এই ঘটনার ভিডিও ও ছবি। হাজারো মানুষ ইতিবাচক মন্তব্যে ভরিয়ে দিচ্ছেন। কারও কারও মতে, “রাজনীতি যদি এমন মানবিকতা শেখায়, তাহলে তা শুধু ক্ষমতার খেলা নয়—একটি সামাজিক দায়িত্বও বটে।”

এই ঘটনা শুধু একটি বিয়ের কাহিনি নয়, এটি ধর্মীয় দায়িত্ববোধ, সামাজিক বন্ধন এবং রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে এক ব্যতিক্রমী অধ্যায়। এক পীর সাহেবের মাধ্যমে শুরু হওয়া এই নতুন জীবনের গল্প আজ সারা দেশের মানুষের মুখে মুখে।

कोई टिप्पणी नहीं मिली