close

ভিডিও আপলোড করুন পয়েন্ট জিতুন!

"বনের শিকড়, শহরের বিশ্বাস—আর মাঝখানে লুকিয়ে থাকা বিপদ!"..

Sumon Hawlader avatar   
Sumon Hawlader
ছবি লেখক—কিন্তু গন্ধে-রঙে যেন গ্রামের হারিয়ে যাওয়া ওষুধের দোকান।

"বনের শিকড়, শহরের বিশ্বাস—আর মাঝখানে লুকিয়ে থাকা বিপদ!"

সুমন হাওলাদারঃ

রাস্তার পাশে ছোট্ট একটা চৌকি, তার ওপর থরে থরে সাজানো কাঁচের বোতল। বোতলের ভেতরে ঘোলাটে লালচে তরল, শুকনো শিকড়, ছাল, অজানা গুঁড়া। বসে আছেন এক বৃদ্ধ—চোখে ক্লান্তি, কণ্ঠে অদ্ভুত এক আস্থা।

“এইটা হাড়ের ব্যথা সারায়, হাঁপানি ভালো হয়। আর পুরুষদের জন্য তো একেবারে নিশ্চিত ফল!”
বলে বোতল তুলে ধরেন বৃদ্ধ। আশপাশে কৌতূহলী পথচারীরা, কেউ শুনছে, কেউ কিনতে চাইছে।

কেউ একজন বলছে, "আম্মার পায়ে ব্যথা—একটা নিই না হয়।"

লোকজ চিকিৎসা না লোক ঠকানো ফন্দি?
ঢাকার অলিগলি এখন বনজ ওষুধের ভ্রাম্যমাণ দোকানে পরিপূর্ণ। এমন দৃশ্য যেন এখন স্বাভাবিক। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে—এইসব ওষুধের বৈজ্ঞানিক ভিত্তি কোথায়? লাইসেন্স? সরকারি অনুমোদন? উত্তর—নেই।

বৃদ্ধের ভাষ্য অনুযায়ী, “মাটির নিচে যে শক্তি, সেটা বুঝি আমি!”
কিন্তু বিজ্ঞান কি বলে?

বিশ্বাসে বাজিমাত, কিন্তু বিপদের কিনারায়
বিশেষজ্ঞদের মতে, “ভেষজ উপাদানের গুরুত্ব আছে, কিন্তু সেগুলো যদি পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়া ব্যবহার করা হয়, তাহলে মারাত্মক বিপদ ঘটতে পারে।”
একদিকে গরিব মানুষের অসহায়ত্ব, অন্যদিকে চিকিৎসা-ব্যবস্থার নাগালের বাইরে চলে যাওয়া—এই দুইয়ের ফাঁকে গজিয়ে উঠেছে এই 'ভেষজ বাজার'।

মেয়াদ নেই, গুণগত মান নেই, তদারকি নেই
এসব ভেষজ উপাদানে কী আছে, কী ক্ষতি হতে পারে—কেউ জানে না। শুধু মুখের কথার ওপর ভর করে চলছে বিপণন। অথচ এতে থাকতে পারে বিষাক্ত যৌগ, অ্যালার্জিক উপাদান, কিংবা এমন কিছু যার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় প্রাণহানিও ঘটতে পারে।

উপসংহার: ওষুধ নয়, এক নিঃশব্দ প্রতারণা?
লোকজ চিকিৎসা আমাদের সংস্কৃতির অংশ। কিন্তু তা যেন না হয়ে পড়ে বাণিজ্যিক প্রতারণার মোড়কে ঢেকে রাখা ঝুঁকির উৎস। সরকারি তদারকি ছাড়া, বৈজ্ঞানিক যাচাই ছাড়া এই বাজার এক ভয়াবহ বাস্তবতার জন্ম দিতে পারে।

তাই প্রশ্ন রয়ে যায়—মাটির নিচের শক্তি বুঝলেও, তার ব্যবহারে কি সচেতনতা আছে?
নাকি এই বিশ্বাসই একদিন পরিণত হবে বিষে?

कोई टिप्पणी नहीं मिली