অধিকৃত পশ্চিম তীরের জেনিন শহরে দখলদার ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে আত্মসমর্পণকারী দুই ফিলিস্তিনি যুবককে ঠান্ডা মাথায় গুলি করে হত্যার ঘটনায় বিশ্বজুড়ে নতুন করে উত্তেজনা ছড়িয়েছে। শুক্রবার (২৮ নভেম্বর) রয়টার্সসহ আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো এই মর্মান্তিক ঘটনার বিস্তারিত তুলে ধরেছে, যা বৃহস্পতিবার ফিলিস্তিনি টিভির প্রচারিত এক নৃশংস ফুটেজে ধরা পড়েছিল।
ফুটেজে স্পষ্ট দেখা যায়, জেনিনের উত্তরাঞ্চলে একটি ভবন অবরুদ্ধ করে রাখে সশস্ত্র ইসরায়েলি সেনারা। সেখান থেকে দুই যুবক বেরিয়ে আসেন। তারা নিরস্ত্র ছিলেন— বারবার নিজেদের শার্ট উপরে তুলে সেটি প্রদর্শন করেন এবং কোনো ধরনের প্রতিরোধ ছাড়াই মাটিতে শুয়ে পড়ে নিজেদের আত্মসমর্পণ নিশ্চিত করেন। এই দৃশ্য ক্যামেরাবন্দী হওয়ার পরও দখলদার বাহিনীর কয়েকজন সদস্য তাদের কাছে গিয়ে খুব কাছ থেকে গুলি চালায়।
ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় নিহতদের পরিচয় নিশ্চিত করেছে। তারা হলেন ২৬ বছর বয়সী মনতাসির আবদুল্লাহ এবং ৩৭ বছর বয়সী ইউসুফ আসাসা। মন্ত্রণালয়ের বিবৃতি অনুসারে, অত্যন্ত কাছ থেকে গুলি করার কারণেই তাদের মৃত্যু নিশ্চিত হয়।
জেনিনের গভর্নর কামাল আবু আল-রুব এই ঘটনাকে সরাসরি 'ঠান্ডা মাথায় হত্যাকাণ্ড' বলে আখ্যায়িত করেছেন। তিনি জোর দিয়ে বলেছেন যে, নিহতরা সম্পূর্ণ নিরস্ত্র ছিল এবং তারা স্বেচ্ছায় আত্মসমর্পণ করছিল। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো এই ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানিয়েছে।
বরাবরের মতোই, দখলদার ইসরায়েলি বাহিনী ঘটনাটি নিয়ে দায় স্বীকার বা স্পষ্ট কোনো বিবৃতি না দিয়ে তদন্তের দাবি করেছে। কেন আত্মসমর্পণকারী ও নিরস্ত্র ব্যক্তিদের ওপর গুলি চালানো হলো, সে বিষয়ে তাদের পক্ষ থেকে কোনো সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা দেওয়া হয়নি। এই ঘটনা পশ্চিম তীরে চলমান সংঘাতের মধ্যে মানবাধিকার লঙ্ঘনের এক নতুন ও গুরুতর দৃষ্টান্ত স্থাপন করল, যা আন্তর্জাতিক আইনের চরম লঙ্ঘন।



















