নারায়ণগঞ্জ কোর্ট প্রাঙ্গণে রোববার দুপুরে এক নাটকীয় ঘটনা ঘটে, যেখানে ফতুল্লা মডেল থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মঞ্জুর কাদের জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীদের রোষানলে পড়েন। ২০১৩ সালের ‘ফ্যাসিস্ট আমলে’ গ্রেফতার ও নির্যাতনের শিকার হওয়ার ক্ষোভে জামায়াত ও শিবিরের নেতাকর্মীরা দলবেঁধে মঞ্জুর কাদেরের পথরোধ করেন এবং তাকে ‘মব জাস্টিস’ করার চেষ্টা চালান। তবে ঠিক সেই মুহূর্তে পরিস্থিতি সামাল দিতে এগিয়ে আসেন নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির শীর্ষস্থানীয় নেতারা, যারা জামায়াত কর্মীদের হাত থেকে মঞ্জুর কাদেরকে উদ্ধার করে নিরাপদে সরিয়ে দেন।
প্রত্যক্ষদর্শী ও সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, ঘটনার সূত্রপাত নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে। জামায়াত ও শ্রমিক ফেডারেশনের নেতা অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম জানান, ২০১৩ সালে ছাত্রশিবিরের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে তৎকালীন ওসি মঞ্জুর কাদের এবং ডিবি হারুনের নির্দেশে তাকে গ্রেফতার, নির্যাতন এবং প্রায় তিন দিন গুম করে রাখা হয়েছিল। এমনকি, সে সময় তার পরিবারের কাছ থেকে পাঁচ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয় বলেও তিনি অভিযোগ করেন। দীর্ঘদিন পর সেই সাবেক ওসিকে জনসম্মুখে পেয়ে তারা তাকে আইনের হাতে তুলে দিতে চেয়েছিলেন, যা দ্রুতই উত্তেজনার জন্ম দেয়।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ার উপক্রম হলে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছান নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান, সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট আবু আল ইউসুফ খান টিপু এবং নারায়ণগঞ্জ আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আনোয়ার প্রধান। তারা অবিলম্বে জামায়াত কর্মীদের পথরোধ করেন এবং মব জাস্টিসের চেষ্টার তীব্র প্রতিবাদ জানান।
অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেন, তারা মব জাস্টিসের বিরোধিতা করেছেন এবং স্পষ্ট জানিয়েছেন যে, কারো বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ থাকলে আইন নিজের হাতে তুলে না নিয়ে বরং মামলা করে বিচারের আওতায় আনতে হবে। তাদের হস্তক্ষেপে শেষ পর্যন্ত মঞ্জুর কাদেরকে জামায়াত নেতাকর্মীদের কবল থেকে মুক্ত করে নিরাপদে সরিয়ে দেওয়া হয়। এ ঘটনায় উভয়পক্ষের মধ্যে ব্যাপক বাগবিতণ্ডা হয়, যা আদালতপাড়ায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে।



















