close

ভিডিও আপলোড করুন পয়েন্ট জিতুন!

প্রতীক নয়, রাজনীতি ফেরত! জামায়াত পেল নিবন্ধন, ইসি'র কাঁধে এখন দাড়িপাল্লা..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
এক দশকের বেশি সময় ধরে নিষ্ক্রিয় অবস্থায় থাকা জামায়াতে ইসলামীর রাজনৈতিক নিবন্ধন অবশেষে ফিরে পেল দলটি। সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ রায়ে জানায়, বাতিল হওয়া নিবন্ধন পুনর্বহাল করা হবে। এখন প্রতীক বিষয়ে সিদ্ধ..

দীর্ঘ অপেক্ষা ও রাজনৈতিক বিতর্কের পর অবশেষে আবারও রাজনীতির মাঠে ফিরতে যাচ্ছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামি। দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ আজ (১ জুন) এক ঐতিহাসিক রায়ে দলটির রাজনৈতিক নিবন্ধন ফিরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে।

এই রায়ে জামায়াতে ইসলামীর রাজনৈতিক বৈধতা পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হলেও দলটির পুরনো প্রতীক ‘দাড়িপাল্লা’ ফিরবে কিনা, সে সিদ্ধান্ত এখন নির্বাচন কমিশনের (ইসি) ওপর নির্ভর করছে।

এই রায় দেন প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের আপিল বেঞ্চ। সংশ্লিষ্ট রায়ের মাধ্যমে ২০১৩ সালে হাইকোর্টের দেওয়া জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল সংক্রান্ত সিদ্ধান্তটি কার্যকরভাবে বাতিল হয়ে গেল।

রায়ের প্রেক্ষাপট ও রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া

২০১৩ সালে জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্ট। সেই রায়ের ভিত্তিতে পরবর্তীতে দলটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারেনি। প্রায় এক যুগ ধরে দলটি রাজনীতির মূলধারা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিল।

তবে আজকের আপিল বিভাগের রায় অনুযায়ী, দলটির নিবন্ধন ফিরিয়ে দিতে বাধ্য নির্বাচন কমিশন। এর ফলে একেবারে সাংবিধানিক বৈধতা ফিরে পেল জামায়াত, যা তাদের ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক পরিকল্পনায় বড় ধরনের গতি আনতে পারে।

বিষয়টি নিয়ে ইতোমধ্যে রাজনৈতিক মহলে আলোচনার ঝড় উঠেছে। একপক্ষ বলছে, এ রায় গণতন্ত্রের পরিধি প্রশস্ত করল, অন্যপক্ষ এটিকে গণতন্ত্রের জন্য হুমকি হিসেবে দেখছে।

দাড়িপাল্লা প্রতীকের ভবিষ্যৎ: কী বলছে নির্বাচন কমিশন?

রায় অনুযায়ী, জামায়াতের প্রতীক 'দাড়িপাল্লা' ব্যবহারের অনুমতি এখনো নিশ্চিত নয়। এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, প্রতীক সংক্রান্ত বিষয়ে কমিশন নিজস্ব নীতিমালার আলোকে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে।

তিনি বলেন, “দল নিবন্ধন ফিরে পেয়েছে আদালতের নির্দেশে। কিন্তু প্রতীক ব্যবহারের অনুমতি সম্পূর্ণ আলাদা প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নির্ধারিত হবে।”

অন্যদিকে জামায়াত সংশ্লিষ্ট নেতারা আশা প্রকাশ করেছেন যে, দলটি অতীতের মতোই 'দাড়িপাল্লা' প্রতীকেই নির্বাচন করতে পারবে।

ভবিষ্যৎ রাজনীতিতে প্রভাব পড়বে কেমন?

জামায়াতের নিবন্ধন ফিরিয়ে দেওয়ার রায় বাংলাদেশের রাজনীতিতে বড় পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে। এটি শুধু একটি দলের রাজনৈতিক অধিকার ফিরিয়ে দেওয়া নয়, বরং ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক জোট ও নির্বাচন কাঠামোতে প্রভাব ফেলতে পারে।

বিশেষ করে জাতীয় নির্বাচনের প্রাক্কালে এই রায় বিএনপি ও অন্যান্য বিরোধী দলের সঙ্গে জামায়াতের সম্ভাব্য সমঝোতার সম্ভাবনা উন্মুক্ত করছে। তবে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী শক্তিগুলো বিষয়টিকে উদ্বেগের চোখে দেখছে।

আইনজীবীদের প্রতিক্রিয়া ও বিশ্লেষণ

রায়ের পরপরই সিনিয়র আইনজীবী ও সংবিধান বিশেষজ্ঞদের মাঝে মতবিরোধ লক্ষ্য করা গেছে। কেউ কেউ বলছেন, জামায়াতের রেজিস্ট্রেশন ফিরিয়ে দেওয়ার অর্থ দলটির সাংবিধানিক অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা, আবার কেউ এটিকে “সাংবিধানিক মূল্যবোধের সাথে সাংঘর্ষিক” বলে আখ্যায়িত করেছেন।

বিশ্লেষকরা বলছেন, এই রায় শুধু জামায়াত নয়, ভবিষ্যতে যেকোনো রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন সংক্রান্ত আইনি লড়াইয়ে একটি নজির হয়ে থাকবে।

Nenhum comentário encontrado