প্রশাসনে ৫ উপ-সচিব পদে রদবদল

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
প্রশাসনের ৫ উপ-সচিবকে একযোগে বদলি করেছে সরকার। হঠাৎ রদবদলের সিদ্ধান্তে প্রশাসনে নানা গুঞ্জন—কারা এলেন আলোচনায়, কারা হারালেন পুরনো দায়িত্ব?..

বুধবার (২ জুলাই) দেশের প্রশাসনে গুরুত্বপূর্ণ এক রদবদলের সাক্ষী হলো জনপ্রশাসন। রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় একসাথে পাঁচজন উপ-সচিবের বদলি করে চারটি পৃথক প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। এই রদবদলে উঠে এসেছে একাধিক আলোচিত ও দক্ষ কর্মকর্তার নাম, যা প্রশাসনিক অঙ্গনে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে।

প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন সচিবালয়ের পরিচালক (উপ-সচিব) মিজ আসমাউল হুসনা লিজাকে নতুন করে বাংলাদেশ ফলিত পুষ্টি গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের পরিচালক হিসেবে বদলি করা হয়েছে। তার এই বদলির পর চাকরির দায়ভার পড়েছে কৃষি মন্ত্রণালয়ের ওপর। পুষ্টি গবেষণার ক্ষেত্রে তার পূর্ব অভিজ্ঞতা থাকায় এই পদে তাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এদিকে, প্রযুক্তি খাতে দায়িত্ব পালনে দক্ষ হিসেবে পরিচিত মো. মিজানুর রহমান, যিনি আইটি ট্রেনিং ও ইনকিউবেশন সেন্টার স্থাপন (দ্বিতীয় সংশোধিত) প্রকল্পের উপ-প্রকল্প পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন, তাকে বদলি করে পাঠানো হয়েছে বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের পরিচালক (বিনিয়োগ) পদে। তার চাকরি এখন থেকে থাকবে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের অধীনে।

শুধু তাই নয়, আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের উপ-প্রকল্প পরিচালক মো. ইলিয়াস মেহদীকেও গুরুত্বপূর্ণ একটি পদে বদলি করা হয়েছে। তাকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে বাংলাদেশ জাহাজ পুনঃপ্রক্রিয়াজাতকরণ বোর্ডের পরিচালক হিসেবে। এ বদলির ফলে তার চাকরি বর্তমানে শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ হয়েছে। অর্থনৈতিক ও শিল্প খাতে নতুন দৃষ্টিভঙ্গি আনার জন্যই সম্ভবত তাকে এই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বলে অনেকে মনে করছেন।

অর্থনৈতিক খাতেও দেখা গেছে এক বড় রদবদল। বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প কর্পোরেশনের (বিসিক) পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করা মো. আবদুল ওয়াদুদ এবার নতুন করে অর্থ বিভাগের ফাইনান্সিয়াল রিপোর্টিং কাউন্সিলে পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন। তার চাকরিও এখন থেকে অর্থ বিভাগের অধীনে থাকবে।

সবশেষে, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (উপ-সচিব) কাইজার মোহাম্মদ ফারাবীকেও রদবদল করা হয়েছে। তাকে নতুন করে বিসিকের পরিচালক হিসেবে পদায়ন করা হয়েছে এবং সেই সঙ্গে তার চাকরি শিল্প মন্ত্রণালয়ে ন্যস্ত করা হয়েছে।

প্রশাসনিক পর্যায়ে এই ধরনের হঠাৎ পরিবর্তন সাধারণত বিশেষ কারণেই হয়ে থাকে। অনেকে ধারণা করছেন, মন্ত্রণালয়গুলোর অভ্যন্তরীণ পারফরম্যান্স মূল্যায়নের ভিত্তিতে এই রদবদল হয়েছে। আবার কেউ কেউ বলছেন, সরকারের ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনায় কিছু চমকপ্রদ পরিবর্তনের অংশ হিসেবেই এ পদক্ষেপ।

তবে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের কাছ থেকে কোনো প্রতিক্রিয়া এখনো পাওয়া যায়নি। অনেকেই এ রদবদলকে প্রশাসনিক গতিশীলতা বৃদ্ধির জন্য ইতিবাচক বলে দেখছেন, আবার কেউ কেউ বলছেন এটি ভিন্ন কোনো উচ্চস্তরের সিদ্ধান্তের প্রতিফলন।

প্রশাসনের এই হঠাৎ রদবদল আগামী দিনে কী বার্তা বহন করে তা নিয়ে জোর আলোচনা চলছে প্রশাসনিক মহলে। এখন দেখার বিষয়, নতুন দায়িত্বপ্রাপ্ত উপ-সচিবরা কীভাবে নিজ নিজ মন্ত্রণালয়ে দায়িত্ব পালনে পারদর্শিতা দেখান।

コメントがありません