close

কমেন্ট করুন পয়েন্ট জিতুন!

পরকীয়ার সংবাদ প্রকাশ করলে পরিণাম খারাপ হবে,সাংবাদিকে ব্লাকমেইল করে  হুমকি ..

Md Sohel Rana avatar   
Md Sohel Rana
প্রভাবশালী হ‍্যাচারি মালিকের আপত্তিকর ভিডিওয়ের সংবাদ প্রকাশ না করতে ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা যুগান্তর উপজেলা প্রতিনিধি সোহেল রানাকে ব্লাকমেইল করে যুগান্তরে সংবাদ প্রকাশ করলে পরিণাম খারাপ হবে জানিয়ে হুমক..

মুক্তাগাছা উপজেলায় এক বিবাহিত নারীর সঙ্গে প্রভাবশালী মৎস্য হ‍্যাচারী মালিকের পরকীয়া ও অসামাজিক শারীরিক সম্পর্কের একটি স্কীনশট ছবি ও ভিডিও ফুটেজ যুগান্তরের হাতে আসলে পরকীয়ার ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে ওই প্রতিবেদকের বিরুদ্ধে মানহীন মামলাসহ দেখে নেওয়ার হুমকি দেন মৎস হ‍্যাচারীর মালিক ও তার পরকীয়া প্রেমিকার স্বামী।

ঈদের দুইদিন আগে উপজেলার বাঁশাটি  এলাকার সাদিয়া মৎস্য হ‍্যাচারীর মালিক  আবু বক্কর সিদ্দিক অরফে সিদ্দিক হাজীর একটি অসামাজিক ও অবৈধ শারীরিক  সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ার স্কীনশট ছবি চারিদিকে ছড়িয়ে পড়লে এলাকায় চাঞ্চল্যকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করে। ছবির সত‍্যতা যাচাইবাছাই করতে গিয়ে ওই আপত্তিকর মূহুর্ত্তের একটী ভিডিও ফুটেজ যুগান্তরের হাতেও চলে আসে। এ বিষয়ে জানতে হ‍্যাচারি মালিক সিদ্দিকের সঙ্গে কথা হলে তিনি বিষয়টি ধামাচাপা দিতে প্রতিবেদকে টাকার অফার করে। তাতেও কাজ না হলে,বিভিন্ন মাধ্যমে সুপারিশ করতে থাকেন। তাতেও কাজ না হলে,  মানহীন মামলার হুমকি দেন সিদ্দিক। 

জানা যায়,উপজেলার পদুরবাড়ী এলাকার এক লাখপতি মার্কেট মালিকের স্ত্রীর সঙ্গে অসামাজিক ও অবৈধ শারীরিক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছেন উপজেলার প্রভাবশালী মৎস্য হ‍্যাচারীর মালিক আবু বক্কর সিদ্দিক অরফে সিদ্দিক হাজী। তিনি সম্পর্কে ওই নারীর উকিল শ্বশুর হন। যা স্বীকার করেছেন,
হাজীর পরকীয়া প্রেমিকা এবং তার স্বামী।যুগান্তরের হাতে আসা ৪৫ মিনিট ২৬ সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে দেখা গেছে, পরকীয়া প্রেকিকারে সঙ্গে নিয়ে একটি নির্জন বাড়ির ঘরের ভিতরে হ‍্যাচারীর মালিক সিদ্দিক ও তার প্রেমিকা গল্পগুজব করছেন। পরবর্তীতে উভয়ের মধ্যে আপত্তিকর ও অবৈধ অসামাজিক সম্পর্কে জড়িত পড়তে দেখা গেছে। উভয়ের মধ্যে ঘটে যাওয়া আপত্তিকর অন্তরঙ্গ মূহুর্ত্তের সেই দৃশ্য এক যুবক তার  মোবাইলে ভিডিও ধারণ করছেন। যা ওই ভিডিওতেই যুবকের চেহারা স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে। 

এদিকে,গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়ে তথ‍্য দেওয়ার কথা বলে বৃহস্পতিবার প্রতিবেদকে ময়মনসিংহের একটি রেস্টুরেন্টে ডেকে নিয়ে চার-পাঁচ জনের একটি দল মুক্তাগাছা যুগান্তর প্রতিনিধিকে ভিডিওয়ের বিষয়টি ধামাচাপা দিতে ব্লাকমেইল করে প্রায় আধাঘন্টা অবরুদ্ধ করে রাখেন এবং যুগান্তরে সংবাদ প্রকাশ করলে পরিণাম খারাপ হবে বলেও হুমকি দেন তারা। পরবর্তীতে অবস্থার বেগতিক দেখে কৌশলে ওয়াসরুমে যাওয়ার অজুহাতে ময়মনসিংহের পরিচিত দুইজনের কাছে মোবাইলে টেক্সট পাঠিয়ে তারা ঘটনাস্থলে আসলে তাদের মাধ্যমে সেখান থেকে বেরিয়ে আসেন সাংবাদিক। যার ডকুমেন্ট ভিডিও যুগান্তর প্রতিনিধির কাছে রয়েছে। পরে বিভিন্ন উপায়ে ব্লাকমেইল করতে থাকেন সিদ্দিকের বেয়াই সম্পর্কের ঢাকার নুর আলম ও নাটরের আনোয়ার। বাকীদের পরিচয় এখনো পাওয়া যায়নি। বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ ব‍্যক্তিকে অবগত করা হয়েছে।

রেস্টুরেন্টের ভিতরে যুগান্তর প্রতিনিধিকে ডেকে নেওয়া ঢাকা থেকে আসা সিদ্দিকের বেয়াই নুর আলম বলেন,ঢাকার সব মিডিয়া হাউজ ও সাংবাদিক আমাকে এক নামে চেনে। আমি আইটি সেক্টরে কাজ করি। যুগান্তরের সম্পাদকে যদি বিষয়টি বলি তবে তোমার চাকরিই থাকবে না। আমি ঢাকা থেকে এসেছি বিষয়টি মেনে নিয়ে এখানেই শেষ করে দাও। প্রয়োজনে কিছু টাকা দিয়ে তোমাকে খুশী করা হবে।

এ প্রসঙ্গে জানতে মোবাইলে কথা হয় হ‍্যাচারি মালিক আবু বক্করের সঙ্গে,প্রথমে বিষয়টি প্রথমে অস্বীকার করলেও পরে দোষ স্বীকার করে তিনি বলেন,যা করেছি সেটা মটেও ঠিক হয়নি। আর যে প্রমাণ রয়েছে। এর চেয়ে কম থাকলেও চলতো।  আমি যা করেছি ভুল করেছি,আমি তাকে বিয়ে করে নিব। পরবর্তীতে প্রতিবেদকের সঙ্গে সরকারি সাক্ষাৎ করতে চেয়ে টাকার অফার করে বিষয়টি ধামাচাপা দিতে এবং সংবাদ প্রকাশ না করার অনুরোধ করেন সিদ্দিক। নুর আলম ও আনোয়ার সম্পর্কে তার বেয়াই হয় স্বীকার করেন সিদ্দিক।প্রতিবেদকে ব্লাকমেইল করা বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি ফোন কল কেটে দেন।

নিজেকে পরকীয়া প্রেমিকার স্বামী দাবি  করে মার্কেট মালিক তাইজ উদ্দিন বলেন,আপনার নিয়ে মামলা করা হয়েছে। এ নিয়ে আপনার মাথা ব‍্যাথা কিসের? যা করার আইন করবে। আর এ বিষয়ে সিদ্দিকের সঙ্গে কথা বলেন। 

নিজের মোবাইল দিয়ে প্রতিবেদকের মোবাইলে কল দিয়ে  মামলার ভয় দেখিয়ে সিদ্দিকের পরকীয়া প্রেমিকা বলেন,অপরাধ করেছে কি না করেছি জনগণ ও আইন বিচার করবে,আপনি কথা বলার কে? আপনার মাথা ঘামাতে হবে কেনো? ঘরে স্বামী ও সন্তান রেখে অন‍্যের সঙ্গে পরকীয়া সম্পর্কে জড়ানো অপরাধ কি না তা জানতে চাইলে তিনি কলটি কেটে দেন। 

সিদ্দিক হাজীর একাধিক প্রতিবেশী বলেন,ওদের বিরুদ্ধে এধরনের অনেক অভিযোগ রয়েছে। ওদের পরিবারের অধিকাংশ পুরুষই পরকীয়া জড়িত থাকাই একাধিকবার বিচার শালিসও হয়েছে। এমনকি জরিমানাও হয়েছে।  একাধিক নারীর সঙ্গে তার সম্পর্কে রয়েছে সিদ্দিকের বলেও জানান এলাকাবাসী। অনেক হয়েছে,এবার  হাজীর বিচার হওয়া দরকার। 

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আতিকুল ইসলাম যুগান্তরকে জানান,ভিডিও খুবই স্পষ্ট,অস্বীকার করার কোন সুযোগ নেই। ব্লাকমেইল বিষয়টি দুঃখজনক, এমনটি মটেও কাম‍্য নয়। 

No comments found