সত্যজিৎ দাস:
সিলেটের জনপ্রিয় কনটেন্ট ক্রিয়েটর ও তরুণ প্রজন্মের আইডল দ্বীপঙ্কর দাস দ্বীপের শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়েছে হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলার পুটিজুড়ি গ্রামে। বুধবার (১৯ নভেম্বর) দুপুরে হিন্দু ধর্মীয় রীতিনীতি অনুযায়ী তাঁর অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন হয়।
এর আগে সকাল ৯টায় মরদেহ পৌঁছালে স্বজন, বন্ধু ও এলাকাবাসীর কান্নায় শোকাবহ পরিবেশ সৃষ্টি হয়। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছুটে আসেন অসংখ্য মানুষ-প্রিয় এই তরুণকে শেষবারের মতো বিদায় জানাতে।
মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) সকাল ৮টা ৩০ মিনিটে ইউএস-বাংলার একটি ফ্লাইটে দ্বীপের মরদেহ ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছায়। সেখান থেকে গাড়িযোগে সিলেটে আনা হয়। রাত ৩টার দিকে গোপালটিলায় মরদেহ পৌঁছালে পরিবার-পরিজন ও স্থানীয়রা ভেঙে পড়েন শোকে। ভোর থেকেই হাজারো মানুষ ভিড় করেন তাঁর প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানাতে। সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকেও ফুলেল শ্রদ্ধা জানানো হয়।
গত ১২ নভেম্বর মালয়েশিয়ার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মাত্র ২১ বছর বয়সী দীপ শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। হঠাৎ এই মৃত্যুতে নেমে আসে গভীর শোক- ভক্ত, পরিবার, বন্ধুবান্ধব এবং অনুরাগীদের মাঝে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমজুড়ে চলছে স্মরণ,শ্রদ্ধা ও ব্যথাভরা বিদায়।
দ্বীপ সিলেটের গোপালটিলার বাসিন্দা হলেও তাদের মূল বাড়ি হবিগঞ্জের বাহুবলের পুটিজুড়ি গ্রামে। বাবা দিব্যোজ্যোতি দাসের দুই ছেলের মধ্যে তিনি ছিলেন বড়। উচ্চশিক্ষার জন্য মাত্র এক মাস আগে মালয়েশিয়ায় পাড়ি জমিয়েছিলেন।
পরিবার-ভিত্তিক হাস্যরসাত্মক কনটেন্ট তৈরি করে স্বল্প সময়েই তিনি হয়ে ওঠেন তরুণ সমাজের প্রিয় মুখ। তাঁর মা ও পরিবারের সদস্যরা নিয়মিত অংশ নিতেন এসব ভিডিওতে।
পরিবার সূত্রে জানা গেছে,গত ১১ নভেম্বর দিবাগত রাতে কুয়ালালামপুরে হঠাৎ বুকে ব্যথা অনুভব করলে দ্বীপকে স্থানীয় একটি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। পরদিন ভোর ৫টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
এদিকে,তরুণ এই কনটেন্ট ক্রিয়েটরের মৃত্যুর খবরে বাংলাদেশ জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মনোনয়ন প্রত্যাশী এবং নবীগঞ্জের কৃতি সন্তান দুর্জয় দাশ গুপ্ত দ্বীপের পরিবারের পাশে দাঁড়ান। তার সঙ্গে ছিলেন প্রসেনজিৎ দাশ গুপ্ত কানাই, সঞ্জব উল্লাহ, রিয়াসত মিয়া, ইকবাল মিয়া, আলমগীর মিয়া, সালেহ আহমেদ বাচ্চুসহ আরও অনেকে।
তিনি প্রয়াত দ্বীপের বিদেহী আত্মার চিরশান্তি কামনা করেন এবং শোকাহত পরিবারকে সান্ত্বনা জানান। দুর্জয় দাশ গুপ্ত গভীর শোক প্রকাশ করে বলেন, “এমন প্রতিভাবান তরুণকে হারানো শুধু একটি পরিবারের নয়,পুরো সমাজের জন্য অপূরণীয় ক্ষতি। আমরা পরিবারটির পাশে আছি এবং থাকবো।"
দুর্জয় দাশ গুপ্ত উপস্থিত থেকে দ্বীপের বাবা দিব্যোজ্যোতি দাসকে সান্ত্বনা দেন এবং শেষকৃত্য পর্যন্ত পরিবারসহ স্থানীয়দের সঙ্গে থেকে শোক ভাগাভাগি করেন।
“দ্বীপ শুধু একটি পরিবারের নয়,পুরো প্রজন্মের সম্ভাবনা ছিল। তাঁর মৃত্যু আমাদের সকলকে ব্যথিত করেছে। এমন মেধাবী তরুণকে আমরা খুব তাড়াতাড়ি হারালাম। আমি ও আমার সহযোদ্ধারা শেষ পর্যন্ত পরিবারের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি।”



















