প্রতিদিন সড়ক, নৌ ও আকাশ পথে ঝরছে প্রিয়জনদের প্রান, যখন বড় কোন দূঘটনা ঘটে তখন আমাদের সকলেই সজাগ হইয়া বিভিন্ন পন্থা ও কৌশল লইলা আমরা আলোচনা ও সমালোচনা করিয়া থাকি, কিন্তু আমারা কজন জানি যাত্রা পথ কিভাবে এবং কোন মাধ্যমে নির্ধ্রান করা প্রয়োজন, আমরা কি জানি বাংলাদেশের কোন পথে কত শতাংশ লোক যাতায়াত করে? এখনও বেশির ভাগ লোক নৌ পথে যাতায়াত করেন, দক্ষিন অঞ্চলের জনগন পদ্মা ব্রিজ হওয়ার পর নৌ পথে চলাচল অনেক কমে এসেছে।
৬/৭ বছর আগে অফিসে লাঞ্চের সময় তৎকালিন কোন এক বড় দূঘটনার বিষয় লইয়া আলোচনা হইতেছিল, তখন আলোচনা আসিয়াছিল কোন্ পথে যাতায়াত অন্যটির তুলনামুলক নিরাপদ, বিভিন্ন জন বিভিন্ন মন্তব্য করিল কাহার মতে আকাশ পথ, প্লেন ই ভাল, কোন যানজট নাই, কাহার মতে সাইকেলই ভাল, ইচ্ছামত চালাইতে চালাইতে গেলাম, অন্য একজন অভিমত দিল, সাইকেল চালাইয়া যাওয়ার সময় অন্য গাড়ি আসিয়া ধাক্কা দিয়া ফেলিয়া দিলে কি করিবেন? সাইকেল চালাইয়া কতদুর, কয়দিনে যাইবেন? ঈদের সময় সাইকেল চালাইয়া শশুর বাড়ি যাওয়ার পর, পায়ে যে বদেনা হইবে তাহা নিবারনের জন্য ম্যাসেজ করিবার লোক ও নিয়োগ দেওয়া লাগিবে, বিষয়টা খারাপ না।” কাহার মতে, ট্রেনই ভাল, বাস বা প্রাইভেট কারের মত রাস্তার মধ্যে বিকল হয় না বা ধাক্কা লাগাইয়া দূর্ঘটনায় পতিত হয় না। কিন্ত কেউই নিরাপদ যাতায়াতের সর্বত্তম মাধ্যম সম্পর্কে কোন মন্তব্যই করিল না, ফলে আমার ধারনা হইল আমাদের সকলের নিকট কোন বিষয়ে সমক্ক্য ধারণা করিবার জন্য প্রয়োজনীয় তথ্যের যথেষ্ট ঘাটতি আছে।
এখন নিরাপদ যাতায়াতের উত্তম মাধ্যম সম্পর্কে আমার মন্তব্য জানিলে সকলে সম্ভবত ভয় পাইয়া যাইতে পারেন, এজন্য ধাপে ধাপে আমি বিষয়টিতে আসিব, প্রথমে আলোচনা করি আকাশ পথ, আকাশ পথ হইল সব হইতে ঝুকিপুর্ণ এর মধ্যে প্লন হইতে হেলিকপ্টার অধিক ছুকি পুর্ণ, কেননা এখানে ইঞ্জিন বিকল হইলে আচড়ে পড়া ব্যতিরেকে অন্য কোন পথই খোলা নাই, যেমনটি আমরা আহমেদাবাদের ঘটনায় দেখিলাম, নদি বা সমুদ্যেও মধ্যে যদি পড়ে তাহইলে কিছুটা রক্ষা, এজন্যই বোধ হয় এয়ারপোর্টে জলাধারের ব্যবস্তা থাকে।
এবার আলোচনা করা যাক, সড়ক পল লইয়া, সড়ক পথে যাতায়াত আকাশ পথের তুলনায় নিরাপদ, কেননা এখানে ইঞ্জিন বিকল হইলেও অনেক ক্ষেত্রে দূর্ঘটনা এড়ান সম্ভব, ড্রাইভারের ভুলের কারণে সংঘর্ষ না ঘটিলে ইঞ্জিন বিকল হইলে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ড্রাইভার গাড়ি নিয়ন্ত্রন করিতে সমর্থ হইয়া থাকে, সড়ক পথে চলাচলের ক্ষেত্রে, ছোট যানবাহনের তুলনায় বড় যানবাহন নিরাপদ, কেননা বড় যানটি ছোট যানটিকে ধাক্কা প্রদান করিলে বা ছোটটি বড়টিকে ধাক্কা প্রদান করিলে ছোটটিই বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়। আমার একটা অভিজ্ঞতা আছে, একবার বাসে করিয়া বাগেরহাট হইতে রামপাল আসিরার সময় বাসটি নির্ধারিত স্থানে থামিতে ব্যর্থ হইতেছিল তখন যাত্রিরা বিষয়টি জানিতে চাহিলে ড্রাইভার জানাইল ”ব্রেকে কাজ করিতেছে না তাই নির্ধারীত স্থানের একটু আগে পরে থামিতেছে, কোন সমস্যা নাই, স্টারিং ঠিক আছে।”
রেল পথ সড়ক পথের মতই, তবে সড়ক পথ হইতে নিরাপদ।
এবার আলোচনা করা যাক নৌ পথ লইয়া, নৌ পথের যানবাহন গুলি চলন্ত অবস্থায় ইঞ্জিন বিকল হইলেও হটাৎ করিয়া সকলে আহত নিহত হইবে না, যানটি নদীতে ভাসিয়া থাকিবে এই সময়ে উদ্ধারকারীদের সহযোগীতায় উদ্ধার হওয়া যাইবে, যাহারা সাঁতার জানে তাহারা সাঁতওে কিনারে উঠিতে পাঁের। নদীর ¯্রােতে যানটি কোন দিকে ধাবমান হইলেও উদ্ধার পাওয়ার জন্য বিভিন্ন পন্থা ও সুযোগ থাকিবে, ঝড়ের কারনে বিপদের সম্ভবনা থাকিলেও পূর্ব হইতে সতর্কতার সহিল চলিলে এ বিপদও প্রায় সর্ব ক্ষেত্রে এড়িয়ে চলা সম্ভব, কেননা ঝড় কখন হটাৎ আসে না সে পূর্বাভাস প্রদান করিয়া আসে, একমাত্র সারেং এর ভুলে ¯্রােতের ঘুর্ণিবাকে না পড়িলে এটাই নিরাপদ যাতাযাত পথ।
চলাচলের ক্ষেত্রে আমাদের কিছু শৃংখলা অনুস্মরন করা অতিব জরুরী, যেমন প্রাইভেট কার বা এসকল যানবাহনে ৪০/৫০ কিমির বেশি একাধারে চলা ঠিক নয় কেননা এই দূরত্বের পর ড্রাইভারের গাড়ি চালনার প্রতি মনোযোগ কমিয়া আসে, তেমনি বাস এর ক্ষেত্রে ১৫০/২০০কিমি এর অতিরিক্ত যাত্রাপথ হইলে ট্রেনে যাওয়াই উত্তম, আকাশ পথে যতটা কম চলাচল করা যায় ততই উত্তম যদিও আমরা আকাশ পথে যাতায়াতের ক্ষেত্রে এ্যডভেন্সার পাই এবং সময় কম ব্যয় করিতে হয়, অনেকের স্বপ্নই থাকে এক রাব প্লেনে চড়িবার এবং কোন দেশের বেশিরভাগ জনগোষ্ঠির এটা স্বপ্নই থাকিয়া যায়।