close

ভিডিও দেখুন, পয়েন্ট জিতুন!

পাচার হওয়া সম্পদ ফেরাতে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা চেয়েছে বাংলাদেশ..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশগুলোর অর্থনৈতিক টেকসইতা রক্ষায় বৈশ্বিক সচেতনতা ও কার্যকর পদক্ষেপের ডাক দিয়েছে। জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি সালাহউদ্দিন নোমান চৌধুরী নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সাউথ-সাউথ..

রাষ্ট্রদূত বলেন, উন্নয়নশীল দেশগুলো থেকে প্রতি বছর শত শত কোটি ডলারের সম্পদ অবৈধভাবে পাচার হয়ে যাচ্ছে, যার বেশিরভাগই উন্নত দেশগুলো বা করস্বর্গে চলে যায়। এই টাকার অভাবে দেশের জনগণ মৌলিক সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। তিনি এই বাস্তবতাকে 'আন্তর্জাতিক ন্যায়ের প্রতি চ্যালেঞ্জ' হিসেবে বর্ণনা করে বলেন, "আমরা যদি সত্যিকার অর্থে বৈশ্বিক সহযোগিতা ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে চাই, তবে এখনই প্রয়োজন রাজনৈতিক সদিচ্ছা ও বাস্তবভিত্তিক পদক্ষেপ।"


স্বল্পোন্নত দেশগুলোর জন্য বিশেষ সুবিধা অব্যাহত রাখার আহ্বান'

আলোচনায় রাষ্ট্রদূত চৌধুরী এলডিসি (স্বল্পোন্নত দেশ) থেকে উত্তরণের পথে থাকা দেশগুলোর জন্য চলমান বিশেষ বাণিজ্য ও সহায়তা সুবিধা অব্যাহত রাখার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি সতর্ক করেন, "এই সুবিধাগুলো হঠাৎ প্রত্যাহার করা হলে বহু দেশের উন্নয়ন থেমে যেতে পারে। এটি হতে হবে ধাপে ধাপে ও পরিকল্পিতভাবে।"


সোশ্যাল বিজনেস' দিয়ে পরিবর্তনের আহ্বান

উন্নয়নশীল দেশগুলোর নিজস্ব সম্পদ আহরণ এবং সেবামূলক কাঠামো মজবুত করার লক্ষ্যে রাষ্ট্রদূত ‘সোশ্যাল বিজনেস’ বা সামাজিক উদ্যোগের গুরুত্ব তুলে ধরেন। তিনি বলেন, “শিক্ষা, স্বাস্থ্য, খাদ্য নিরাপত্তা ও নবায়নযোগ্য শক্তির মতো খাতে সামাজিক উদ্যোগগুলো ইতিবাচক পরিবর্তন আনছে এবং এগুলোকে বৈশ্বিকভাবে সমর্থন করা উচিত।”


'তারুণ্যই শক্তি: বিনিয়োগ চাই শিক্ষা ও প্রযুক্তিতে'

রাষ্ট্রদূত সালাহউদ্দিন চৌধুরী বলেন, “তারুণ্য উন্নয়নশীল দেশগুলোর সবচেয়ে বড় সম্পদ। আমরা যদি এই তরুণদের সঠিক দিকনির্দেশনা, প্রযুক্তিগত দক্ষতা এবং নেতৃত্ব গঠনের সুযোগ দেই, তাহলে তারা হতে পারে পরিবর্তনের সবচেয়ে বড় চালিকা শক্তি।”

তিনি বিশেষভাবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, তথ্যপ্রযুক্তি এবং উদীয়মান ক্ষেত্রগুলোতে দক্ষতা বৃদ্ধিতে সরকারি-বেসরকারি বিনিয়োগ বৃদ্ধির আহ্বান জানান।


তিন শূন্যের বিশ্ব গঠনে বাংলাদেশের প্রতিশ্রুতি'

বক্তব্যের শেষভাগে রাষ্ট্রদূত চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশ ‘তিন শূন্যের বিশ্ব’ গঠনের পক্ষে—যেখানে থাকবে শূন্য দারিদ্র্য, শূন্য ক্ষুধা এবং শূন্য নিঃসরণ। এই লক্ষ্য অর্জনের জন্য প্রয়োজন আন্তঃসহযোগিতা, বিশেষ করে সাউথ-সাউথ সহযোগিতার ভিত্তিকে আরও শক্তিশালী করা।

তিনি জাতিসংঘের সদস্য দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানান, যেন তারা কেবল প্রতিশ্রুতি দিয়েই না থেমে থাকে, বরং সেই প্রতিশ্রুতিগুলো বাস্তবায়নে একসাথে কাজ করে।


 

বিশ্বের উন্নয়নশীল ও স্বল্পোন্নত দেশগুলোর উন্নয়ন গতিপথ আজও বাধাগ্রস্ত পাচার হওয়া অর্থ, বৈষম্যমূলক বাণিজ্যনীতি এবং প্রযুক্তিগত বৈষম্যের কারণে। বাংলাদেশ জাতিসংঘের মঞ্চে দাঁড়িয়ে কেবল নিজের পক্ষে নয়, বরং বিশ্বের পিছিয়ে পড়া কোটি মানুষের পক্ষে একটি সাহসী আওয়াজ তুলেছে। এখন সময়—এই আওয়াজকে বাস্তবে রূপ দেওয়ার।

কোন মন্তব্য পাওয়া যায়নি