ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের গঠন ও শপথের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে দায়ের করা লিভ টু আপিলের চূড়ান্ত রায়ের দিন ধার্য করা হয়েছে আগামীকাল বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর)। প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন ৭ বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চ আজ, বুধবার (৩ ডিসেম্বর) উভয় পক্ষের দীর্ঘ শুনানি শেষে এই রায় ঘোষণার দিন নির্ধারণ করেন। এই ঐতিহাসিক রায়ের দিকে তাকিয়ে আছে দেশের রাজনৈতিক ও আইনি মহল।
হাইকোর্টের দেওয়া সেই আদেশের বিরুদ্ধে দায়ের করা এই আপিলের শুনানি শুরু হয়েছিল গত ২ ডিসেম্বর। আদালতের আজকের আদেশের মাধ্যমে একটি গুরুত্বপূর্ণ আইনি বিতর্কের সমাপ্তি ঘটতে চলেছে, যা দেশের বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে সুদূরপ্রসারী প্রভাব ফেলবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
শুনানির সময় আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে অংশ নেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান এবং অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার অনীক আর হক। রিটকারী পক্ষের শুনানিতে ছিলেন অ্যাডভোকেট মহসীন রশিদ। এছাড়া, ইন্টারভেনর হিসেবে ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল ও অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য উপস্থাপন করেন। অ্যাডভোকেট শিশির মনির শুনানিতে জোর দিয়ে বলেন, ‘জনগণের বৈধতাই সবচেয়ে বড় বৈধতা। বৈধতার ভিত্তি জনগণের আস্থা ও বিশ্বাস।’
উল্লেখ্য, এই মামলার সূত্রপাত হয়েছিল হাইকোর্টে। গত ১৩ জানুয়ারি হাইকোর্ট ড. ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকারের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করা রিটটি খারিজ করে দেন। হাইকোর্টের রায়ে বলা হয়েছিল, রাষ্ট্রপতির বিশেষ রেফারেন্সের পর সুপ্রিম কোর্টের মতামতের ভিত্তিতেই এই সরকার গঠিত হয়েছে এবং এই সরকার আইন মেনেই জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। হাইকোর্টের সেই রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল দায়ের করা হয়েছিল।
এই আইনি প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের এক ঐতিহাসিক মতামত প্রদানের মাধ্যমে। অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের আগে, ২০২৪ সালের ৮ আগস্ট তৎকালীন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানসহ আপিল বিভাগের সাতজন বিচারপতি স্পেশাল রেফারেন্সের মাধ্যমে এই সরকার গঠনের পক্ষে মতামত দিয়েছিলেন, যা সংবিধানে প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ গ্রহণের বাধ্যবাধকতাকে শিথিল করেছিল।



















