জামাত শুরুর এক ঘণ্টা আগেই শোলাকিয়া ময়দান মুসল্লিতে পূর্ণ হয়ে যায়। নামাজ শুরুর সঙ্গে সঙ্গে আশপাশের সড়ক, অলিগলি এবং আবাসিক এলাকাও জনসমুদ্রে পরিণত হয়। লাখো মুসল্লির কণ্ঠে "আল্লাহু আকবার" ধ্বনিতে মুখরিত হয়ে ওঠে পুরো এলাকা।
কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাছান চৌধুরী জানান, এবার শোলাকিয়ায় ৬ লক্ষাধিক মুসল্লির অংশগ্রহণে দেশের সবচেয়ে বড় ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে।
ঈদের নামাজ শেষে বিশেষ মোনাজাতে দেশ ও জাতির শান্তি, সমৃদ্ধি এবং কল্যাণ কামনা করা হয়। এছাড়া, ফিলিস্তিনের নির্যাতিত মুসলমানদের জন্য দোয়া করা হয় এবং মুসলিম উম্মাহর শান্তি ও সংহতি কামনা করা হয়।
কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা
২০১৬ সালের জঙ্গি হামলার পর শোলাকিয়ার নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করা হয়। এবছরও চার স্তরের নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলা হয়। মাঠের নিরাপত্তায় ছিল পুলিশ, র্যাব, বিজিবি, সেনাবাহিনী ও আনসার সদস্যরা। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ৬৪টি সিসি ক্যামেরা এবং ৬টি ওয়াচ টাওয়ার স্থাপন করা হয়।
নামাজ চলাকালীন ১,১০০ পুলিশ সদস্য, ৫ প্লাটুন বিজিবি, র্যাব এবং আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের সদস্যরা মোতায়েন ছিলেন। নিরাপত্তা নজরদারিতে ছিল বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা, সাদা পোশাকধারী পুলিশ, বোম ডিসপোজাল ইউনিট, ফায়ার সার্ভিস ও অ্যাম্বুলেন্সসহ মেডিকেল টিম। মুসল্লিদের ঈদগাহে প্রবেশের জন্য একাধিক চেকপোস্ট ও তল্লাশি পয়েন্ট রাখা হয়েছিল।
শোলাকিয়া স্পেশাল ট্রেন
দূর-দূরান্ত থেকে মুসল্লিদের ঈদ জামাতে অংশগ্রহণের সুবিধার্থে বাংলাদেশ রেলওয়ে ‘শোলাকিয়া স্পেশাল’ নামে দুটি বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা করে। ভৈরব থেকে একটি এবং ময়মনসিংহ থেকে আরেকটি ট্রেন সকাল ৬টায় ছেড়ে আসে এবং নামাজ শেষে দুপুর ১২টায় কিশোরগঞ্জ থেকে ফিরে যায়।
ঐতিহ্য অনুযায়ী, জামাত শুরুর ১৫ মিনিট আগে পুলিশ সুপার শটগানের তিনটি গুলি ছোড়েন, এরপর ১০ ও ৫ মিনিট আগে আরও কয়েকটি গুলি ছুড়ে জামাত শুরুর সংকেত দেওয়া হয়।