close

লাইক দিন পয়েন্ট জিতুন!

অবৈধ নির্বাচনের পর আদালত আর নিবাচন কমিশনকে জি ম্মি করে মেয়র হওয়ার শখ ক্যান : হান্নান মাসউদ..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
দক্ষিণ সিটির মেয়র পদে বৈধতার প্রশ্নে উত্তাল রাজধানী! ইশরাক হোসেনকে শপথ না পড়ানোয় টানা আন্দোলন—নগর ভবনে তালা, বন্ধ সব সেবা। ফেসবুকে বিস্ফোরক মন্তব্য হান্নান মাসউদের!..

জনগণের রায় না মানলে সেবা বন্ধ থাকবে: নগর ভবনে বিক্ষোভ, মেয়র ইস্যুতে উত্তাল ঢাকা

নিজস্ব প্রতিবেদক:
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নিয়ে শুরু হওয়া মেয়র পদের বৈধতা প্রশ্নে নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। একটি অবৈধ রায়ের মাধ্যমে মেয়র হওয়ার অপচেষ্টার বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির সিনিয়র যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসউদ। সোমবার (১৯ মে) দুপুরে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া পোস্টে তিনি লিখেছেন, “স্থানীয় সরকার নির্বাচন দেন, বৈধ নির্বাচনের মাধ্যমে বৈধভাবে নির্বাচিত হয়েই মেয়রের দায়িত্ব গ্রহণ করুন।”

তিনি আরও লিখেন, “অবৈধ নির্বাচনের পর আদালত আর নির্বাচন কমিশনকে জিম্মি করে অবৈধ রায়ের মাধ্যমে মেয়র হওয়ার শখ ক্যান!!!”—এই বক্তব্যের মাধ্যমে হান্নান মাসউদ ইঙ্গিত দিয়েছেন, যে প্রক্রিয়ায় বর্তমান মেয়রের অবস্থান, তা আইন এবং ন্যায়বিচারের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।

এই মন্তব্যের সঙ্গে সঙ্গে নতুন করে উত্তাপ ছড়িয়েছে ঢাকার রাজনীতিতে। এরই মধ্যে ইশরাকপন্থি কর্মী-সমর্থকরা রীতিমতো নগর ভবনে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন। ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র হিসেবে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়ার দাবিতে তারা টানা চতুর্থ দিনের মতো আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন।


নগর ভবন ঘেরাও, জনসেবা বিপর্যস্ত

সোমবার (১৯ মে) সকাল থেকে ঢাকার বিভিন্ন এলাকা থেকে ছোট ছোট মিছিল নিয়ে আন্দোলনকারীরা নগর ভবনের সামনে জড়ো হন। ‘ঢাকাবাসী’ ব্যানারে সমবেত হয়ে তারা প্রধান ফটকসহ নগর ভবনের গুরুত্বপূর্ণ বিভাগগুলোর গেটে তালা ঝুলিয়ে দেন।

এর ফলে, নগর ভবনের সকল প্রকার সেবা কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। নাগরিকদের জরুরি সেবা পেতে এসে ফিরে যেতে হয়েছে। অনেকে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “আমরা ভোট দিই উন্নয়নের জন্য, কিন্তু এখন ভোটের নামে হচ্ছে নাটক!”

এক আন্দোলনকারী বলেন, “এই শহরের মানুষকে উন্নয়ন বঞ্চিত করে অবৈধভাবে মেয়র হওয়ার কোনো মানে নেই। জনগণের রায় মানতেই হবে। যতদিন ইশরাক হোসেন শপথ না নেবেন, ততদিন নগর ভবনে ঢুকতে দেব না।”

আরেকজন বলেন, “যদি এখনি সঠিক সিদ্ধান্ত না আসে, তাহলে আমরা আরও কঠোর কর্মসূচি নেব। এই আন্দোলন এখন জনগণের আন্দোলন হয়ে উঠেছে।”


আইনি প্রেক্ষাপট: রায় বদল, গেজেট প্রকাশে দ্বিধা

২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী ইশরাক হোসেনকে প্রায় পৌনে ২ লাখ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করে আওয়ামী লীগের শেখ ফজলে নূর তাপস মেয়র নির্বাচিত হন।

তবে গেল ২৭ মার্চ একটি ট্রাইব্যুনালের রায়ে ওই নির্বাচনের ফলাফল বাতিল করে ইশরাক হোসেনকে মেয়র ঘোষণা করা হয়। রায় পাওয়ার পর ২২ এপ্রিল নির্বাচন কমিশন আইন মন্ত্রণালয়ের কাছে গেজেট প্রকাশ বিষয়ে পরামর্শ চায়।

তবে এখনও পর্যন্ত ইশরাকের শপথের কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। এই বিলম্বকে কেন্দ্র করেই উত্তাল হয়ে উঠেছে নগর ভবন।


রাজনৈতিক বিশ্লেষণ ও ভবিষ্যত

বিশ্লেষকরা বলছেন, এই ঘটনার মাধ্যমে বোঝা যাচ্ছে, দেশের স্থানীয় সরকার নির্বাচন প্রক্রিয়ায় জনমত উপেক্ষা করে প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়ার প্রবণতা বেড়ে চলেছে। একজন নির্বাচিত প্রতিনিধি যখন আইনগতভাবে রায় পান, তখন তার শপথে বাধা সৃষ্টি হলে সেটা বিচার বিভাগের প্রতি জনগণের আস্থা নষ্ট করে।

তারা আরও মনে করছেন, আন্দোলনের ধরন দেখে এটা স্পষ্ট, শুধুমাত্র রাজনৈতিক কর্মী নয়, সাধারণ নাগরিকও ইশরাকের পক্ষে মত প্রকাশ করছেন।


 

ঢাকার প্রাণকেন্দ্রে এখন চলছে এক নতুন ধারা—জনগণের রায় প্রতিষ্ঠার জন্য সশব্দ প্রতিবাদ। নগর ভবনের তালা যতক্ষণ না খুলছে, ততক্ষণ আন্দোলন অব্যাহত থাকবে বলেই ঘোষণা দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা।

একই সঙ্গে উঠছে গুরুতর প্রশ্ন—জনগণের ভোটে নির্বাচিত না হয়ে ক্ষমতা দখলের অপচেষ্টা কি গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে দিচ্ছে না?

コメントがありません