অ'স্ত্র হাতে উপদেষ্টা! আসিফ মাহমুদের লাইসেন্সহী'ন অ'স্ত্র কান্ডে বি'স্ফো'রক মন্তব্য করলেন সাবেক এমপি নিলুফার মনি..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
স্বনির্ভর বিষয়ের সাবেক সহ-সম্পাদক ও সংসদ সদস্য নিলুফার চৌধুরী মনি বলেছেন, আসিফ মাহমুদের হাতে অস্ত্র থাকা আইনত অপরাধ। তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, একজন বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া কীভাবে লাইসেন্সধারী অস্ত্রধারী হয়ে উঠ..

বর্তমান রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন করে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এসেছেন সরকারদলীয় উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া। অস্ত্রধারী অবস্থায় তার সাম্প্রতিক ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর এই ঘটনায় বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেত্রী ও সাবেক সংসদ সদস্য নিলুফার চৌধুরী মনি।

তিনি বলেন, “একজন ব্যক্তি যার অতীত পরিচয় ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের হলের সাধারণ ছাত্র হিসেবে—সে কীভাবে মাত্র ১০ মাসে অস্ত্রধারী ‘ক্ষমতাবান’ হয়ে ওঠে? এটি শুধু সামাজিক নয়, বরং আন্তর্জাতিক আইনও লঙ্ঘনের শামিল।

নিলুফার মনি বলেন, “আসিফ মাহমুদের অস্ত্র রাখার বিষয়টি নিঃসন্দেহে আইনত অপরাধ। তার লাইসেন্স ছিল কি না, সেটিই এখন প্রশ্নবিদ্ধ। যদি লাইসেন্স না থাকে, তবে তিনি কিভাবে গুলি ভর্তি ম্যাগাজিনসহ অস্ত্র হাতে চলাফেরা করছিলেন? সরকারের উচিত বিষয়টি তদন্ত করে তার বিরুদ্ধে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া।

তিনি আরও বলেন, “আমি নিজে সংসদ সদস্য ছিলাম, আমি চাইলে অস্ত্রের লাইসেন্স করতে পারতাম। কিন্তু শর্ত পূরণের কঠিনতা দেখে পিছিয়ে এসেছিলাম। যেখানে আমি পারলাম না, সেখানে মাত্র ১০ মাসে একজন উপদেষ্টা কীভাবে সব শর্ত পূরণ করে লাইসেন্সধারী হতে পারে—এটা কি প্রশ্ন তুলতে বাধ্য করে না?

নিলুফার মনি আরও বলেন, একজন অস্ত্র লাইসেন্সধারীর জন্য টিন (TIN) সার্টিফিকেট বাধ্যতামূলক। আমি জানতে চাই, আসিফ মাহমুদের কি তিন বছরের পরপর টিন সার্টিফিকেট রয়েছে? মাত্র ১০ মাস আগেও যে ব্যক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের হলের ডাল-ভাত খেত, তার এত দ্রুত লাইসেন্স পাওয়ার ক্ষমতা কোথা থেকে এলো?

তিনি সংশয় প্রকাশ করে বলেন, “বাংলাদেশে ছাত্রজীবনে ১ লাখে ১ জন টিন সার্টিফিকেট করে কি না তা নিয়েই সন্দেহ রয়েছে। তাহলে সে কীভাবে আইনত অস্ত্র বহনের অনুমতি পেল? এ প্রশ্ন সরকারের প্রতি, প্রশাসনের প্রতি, এবং সর্বোপরি, জনগণের প্রতি।

নিলুফার মনি বলেন, “যে ঘটনার ভিডিও ও ছবি ভাইরাল হয়ে গেছে, সেটি নিয়ে কয়টি জাতীয় পত্রিকা প্রতিবেদন করেছে? কয়টি টিভি চ্যানেল প্রতিবেদন করেছে? সংবাদমাধ্যম এখনো যদি মেরুদণ্ড সোজা করে দাঁড়াতে না পারে, তাহলে এই জাতির জন্য ভবিষ্যৎ কোথায়?

তিনি প্রশ্ন তোলেন, এটা কি রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতা নাকি প্রশাসনিক ব্যর্থতা? কোনো বিচার না হলে তা দেশের আইন-শৃঙ্খলা ব্যবস্থার ওপর বড় ধাক্কা হয়ে দাঁড়াবে।

নিলুফার মনি জোরালোভাবে বলেন, “এই ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত হওয়া দরকার। আসিফ মাহমুদের উচিত এখনই পদত্যাগ করা এবং আইনের মুখোমুখি হওয়া। রাষ্ট্রের প্রতি আমাদের আস্থা তখনই ফিরবে, যখন আমরা দেখবো আইন সবার জন্য সমানভাবে কার্যকর হচ্ছে।

তিনি বলেন, “হলে আমি থেকেছি। আমি জানি, মাসের ২০ তারিখের পর কিভাবে একজন ছাত্র বা ছাত্রী হলজীবনে কষ্টে থাকে। আজকে যারা ক্ষমতার কাছে থাকে, তারা যেন মুহূর্তেই অস্ত্রধারী ক্ষমতাবান হয়ে ওঠে। এটা থামাতে হবে।

নিলুফার মনির বক্তব্য আসলে বৃহত্তর এক প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে—দেশে কি এখনো আইনের শাসন বিদ্যমান, নাকি রাজনৈতিক পরিচয়ই সর্বস্ব? একজন সাবেক এমপির মুখ থেকে উঠে আসা এ প্রশ্নগুলো কেবল আসিফ মাহমুদের বিরুদ্ধে নয়, বরং সমগ্র ব্যবস্থার ওপর এক কঠিন চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছে।

সরকার ও প্রশাসন কি নিরপেক্ষ তদন্তে এগিয়ে আসবে? নাকি এই ঘটনাও অতীতের অনেক ঘটনার মতো ধামাচাপা পড়ে যাবে?

No comments found