নুসরাত ফারিয়া গ্রেপ্তার হলে তিশা, ফারুকীও গ্রেপ্তার হওয়ার কথা”—রাশেদ খানের বিস্ফোরক অভিযোগ
নুসরাত ফারিয়াকে ঘিরে সাম্প্রতিক গ্রেপ্তার ইস্যু নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খান। রোববার (১৮ মে) রাতের দিকে তিনি তার ফেসবুক প্রোফাইলে দেওয়া এক দীর্ঘ পোস্টে বলেন, “নুসরাত ফারিয়াদের গ্রেপ্তার করে মূলত গণহত্যার বিচারকে হালকা করা হচ্ছে।” তিনি দাবি করেন, এই ধরনের পদক্ষেপ মূল অপরাধীদের আড়াল করে জনমনে বিভ্রান্তি ছড়ানোর একটি চেষ্টামাত্র।
রাশেদ খান আরও বলেন, “নুসরাত ফারিয়া গ্রেপ্তার হলে তিশাও গ্রেপ্তার হবে। এমনকি সারাজীবন আওয়ামী লীগের সুযোগ-সুবিধা নেওয়ার জন্য ফারুকীকেও অ্যারেস্ট হওয়ার কথা। কিন্তু তারা নিরাপদেই আছেন। প্রশ্ন হলো, কেন এই দ্বৈতনীতি?”
তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে লেখেন, “ডামি ৩০০ এমপিদের বিরুদ্ধে কোনো আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। তাদের দুর্নীতির সম্পদ বাজেয়াপ্ত করার উদ্যোগ নেই। অথচ মিডিয়া ফোকাস ঘোরাতে নুসরাত ফারিয়াদের গ্রেপ্তার করে হাস্যকর একটা পরিবেশ তৈরি করা হচ্ছে।”
‘ছিঁচকে চোর’ বনাম ‘ডাকাত’ ইস্যু তুললেন রাশেদ খান
রাশেদ খান সরকারকে প্রশ্ন ছুড়ে দেন, “স্বয়ং বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপুর বিরুদ্ধে লুটপাটের অভিযোগ রয়েছে, অথচ তার সম্পদ পাহারা দিচ্ছে উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানার স্বামী আবু বক সিদ্দিক! অন্যদিকে, সাবেক মন্ত্রীদের জামিন তদবির করছেন রেজওয়ানা আপারা। তাহলে সরকার আসলে কাদের নিরাপত্তা দিচ্ছে?”
তিনি লেখেন, “উপদেষ্টা পরিষদে রয়েছেন আলী ইমাম মজুমদারের মতো শেখ মুজিবপ্রেমী ব্যক্তিত্ব। যারা কথায় কথায় মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বলেন, তারাই আজ ডাকাতদের প্রটেকশন দিচ্ছেন। এটা কি চেতনার অবমাননা নয়?”
রাশেদ খান মন্তব্য করেন, “সরকার আসল ডাকাতদের না ধরে ছিঁচকে চোরদের ধরতে ব্যস্ত। অথচ জনসাধারণ জানে কারা আসল অপরাধী। এসব নাটক করে মূল গণহত্যার বিচার প্রক্রিয়াকে নরমালাইজড করার চেষ্টা চলছে।”
বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা না দিয়ে তদন্ত নয় কেন?
পোস্টে রাশেদ বলেন, “যদি কারো বিরুদ্ধে সন্দেহ থাকে, তাহলে তাকে বিদেশ যেতে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে, যথাযথ তদন্তের মাধ্যমে বিচার করা যেত। কিন্তু তা না করে, মিডিয়া শোর তুলতে ছিঁচকে চোরদের ধরে হৈচৈ তৈরি করার উদ্দেশ্য কী?”
তিনি আরও যুক্ত করেন, “সরকার এই মুহূর্তে একটি দুর্বল অবস্থানে রয়েছে। জনগণের দৃষ্টি অন্যদিকে সরাতে এই ধরনের ‘ফাতরামো’ শুরু করেছে তারা। কিন্তু মানুষ বোঝে—কারা প্রকৃত অপরাধী, আর কারা শুধু বলির পাঁঠা।”
উপসংহার:
রাশেদ খানের এই মন্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। অনেকে একমত প্রকাশ করলেও, অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন—তথ্যপ্রমাণ ছাড়া এমন বিস্ফোরক মন্তব্য কতটা গ্রহণযোগ্য। তবে এটি স্পষ্ট, নুসরাত ফারিয়ার গ্রেপ্তার এবং তার প্রেক্ষিতে রাশেদ খানের এই প্রতিক্রিয়া দেশের রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।