close

ভিডিও আপলোড করুন পয়েন্ট জিতুন!

নতুন রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের আবেদনের শেষ দিন আজ

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
নিবন্ধনের সময়সীমার শেষ দিনে শতাধিক রাজনৈতিক দল ইসিতে আবেদন জমা দিয়েছে। যাচাই-বাছাই শেষে আসছে নতুন রাজনীতিক শক্তি—ভোটের মাঠে বদলে যেতে পারে হিসাব!..

নতুন রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের আবেদন গ্রহণের সময়সীমা শেষ হচ্ছে আজ রোববার (২২ জুন)। নির্বাচন কমিশনের (ইসি) নির্ধারিত সময় অনুযায়ী, আজকের মধ্যেই যেসব দল আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে চায়, তাদেরকে নিবন্ধনের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ আবেদনপত্র জমা দিতে হবে। এরপর আর কোনো আবেদন গ্রহণ করবে না ইসি।

ইসির নির্বাচন সহায়তা শাখার সূত্রে জানা গেছে, এ পর্যন্ত প্রায় ১০০টি রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের জন্য আবেদন করেছে। এর মধ্যে অনেক নতুন রাজনৈতিক দল রয়েছে যারা দেশের রাজনীতিতে প্রথমবারের মতো আনুষ্ঠানিকভাবে অংশ নিতে যাচ্ছে। ইসি সূত্র বলছে, আজ দিনশেষে এ সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।

নিবন্ধনের আবেদনের সময়সীমা ইতিমধ্যে একবার বাড়ানো হয়েছিল। জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) সহ কয়েকটি রাজনৈতিক দলের আবেদনের প্রেক্ষিতে নির্বাচন কমিশন দেড় মাস সময়সীমা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয়। সেই বাড়ানো সময়সীমা আজ শেষ হচ্ছে। ইসির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সংশোধিত সময় অনুযায়ী আজই এনসিপিসহ বেশ কিছু দল তাদের আবেদনপত্র জমা দেবে।

রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের জন্য আইন অনুযায়ী কিছু নির্দিষ্ট শর্ত পূরণ করা বাধ্যতামূলক। এর মধ্যে রয়েছে—

একটি কার্যকর ও সক্রিয় কেন্দ্রীয় কমিটি

 দেশের অন্তত এক-তৃতীয়াংশ জেলায় সক্রিয় জেলা কমিটি

অন্তত ১০০টি উপজেলা বা সমপর্যায়ের কার্যকর কমিটি অতীতে কোনো নির্বাচনে বৈধ ভোটের কমপক্ষে ৫ শতাংশ প্রাপ্তি বা সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার ইতিহাস

এইসব শর্ত পূরণ করতে না পারলে কোনো দলকে নিবন্ধন দেওয়া হবে না। নির্বাচনের আগে এই যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে জানিয়েছে কমিশন।

ইসি’র তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে বাংলাদেশে ৫০টি রাজনৈতিক দল নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধনভুক্ত। ২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে দেশে রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের প্রথা চালু হয়। এরপর থেকে মোট ৫৫টি দল নিবন্ধন পেয়েছিল।

তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে অনেকে শর্ত পূরণ করতে না পারায় নিবন্ধন বাতিল হয়েছে। এর মধ্যে জামায়াতে ইসলামী, ফ্রিডম পার্টি, ঐক্যবদ্ধ নাগরিক আন্দোলন, পিডিপি ও জাগপা—এই পাঁচটি দলের নিবন্ধন বাতিল করা হয়েছে। যদিও সাম্প্রতিক সময়ের আদালতের রায় অনুযায়ী জামায়াত ও জাগপা’র নিবন্ধন ফেরত এসেছে, তবে এ বিষয়ে এখনো ইসির পক্ষ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক প্রজ্ঞাপন প্রকাশ করা হয়নি।

বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে যেসব দল নিবন্ধন পেয়েছে, তার বেশিরভাগই আদালতের নির্দেশনার মাধ্যমে পেয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে—
বাংলাদেশ মাইনরিটি জনতা পার্টি (বিএমজেপি)
এবি পার্টি
গণঅধিকার পরিষদ (নুরুল হক নুর), নাগরিক ঐক্য (মাহমুদুর রহমান মান্না)
গণসংহতি আন্দোলন

এইসব দল আবেদন করার প্রায় পাঁচ থেকে ছয় বছর পর আদালতের রায়ে নিবন্ধনের সুযোগ পেয়েছে। ফলে এবারও অনেক নতুন দল আইনি প্রক্রিয়ার আশায় রয়েছে বলে জানা গেছে।

আবেদনের সময়সীমা শেষ হওয়ার পরপরই শুরু হবে দলগুলোর প্রাথমিক যাচাই-বাছাই। যেসব দল নির্ধারিত শর্তগুলো পূরণ করতে পারবে, তাদেরই নিবন্ধনের জন্য বিবেচনায় নেওয়া হবে।

ইসির এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, আমরা প্রতিটি আবেদন গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করব। প্রয়োজন হলে মাঠপর্যায়ে গিয়ে তদন্তও করা হবে। যেসব দল প্রকৃত রাজনৈতিক কার্যক্রমে সক্রিয়, তারাই নিবন্ধন পাবে।

আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে নতুন রাজনৈতিক দলগুলোর নিবন্ধনের প্রক্রিয়া দেশের রাজনীতিতে একটি বড় পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে। নতুন মুখ, নতুন মতাদর্শ আর নতুন নেতৃত্ব—এসব কিছুই এবারের নির্বাচনের মাঠে এক নতুন মাত্রা যোগ করতে পারে। অনেক দলই ভোটের রাজনীতিতে নিজেদের শক্ত অবস্থান গড়তে চায়, আর এই নিবন্ধন সেই যাত্রার প্রথম ধাপ।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, যদি কমিশন নিরপেক্ষভাবে শর্তানুযায়ী দলগুলোকে নিবন্ধন দেয়, তাহলে ভোটের মাঠে প্রতিযোগিতা আরও তীব্র হবে। আর সেটাই ভবিষ্যতের রাজনীতিকে আরও গতিশীল করে তুলবে।

कोई टिप्पणी नहीं मिली