close

ভিডিও দেখুন, পয়েন্ট জিতুন!

নওগাঁ থানায় হেফাজতে থাকা ট্রাংক ভেঙে এইচএসসি প্রশ্ন ফাঁস! তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি, প্রশ্নে পুরো জেলা জুড়ে চাঞ্চল্য..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
নওগাঁর ধামইরহাট থানায় সিলগালা করা ট্রাংক ভেঙে ২০২৫ সালের এইচএসসি পরীক্ষার ‘ইসলামের ইতিহাস’ বিষয়ের প্রশ্নপত্র ছেঁড়া অবস্থায় পাওয়া গেছে। প্রশ্নফাঁসের আতঙ্কে শিক্ষাঙ্গন তোলপাড়, গঠিত হয়েছে তিন সদস্যের তদন..

নওগাঁ জেলার ধামইরহাট থানা এখন সারাদেশের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু। থানা হেফাজতে থাকা সিলগালা করা প্রশ্নপত্রের ট্রাংক ভেঙে এইচএসসি পরীক্ষার প্রশ্নফাঁসের ঘটনায় গোটা জেলার শিক্ষাঙ্গনে নেমে এসেছে আতঙ্কের ছায়া। যেটি ঘটেছে ১৮ জুন (মঙ্গলবার), তা জানাজানি হয় ২০ জুন (বৃহস্পতিবার)। আর এতেই ছড়িয়ে পড়ে ব্যাপক চাঞ্চল্য।

ঘটনার সূত্রপাত একটি ভাইরাল ছবিকে ঘিরে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ছবিতে দেখা যায়—এইচএসসি ২০২৫ সালের পরীক্ষার জন্য সংরক্ষিত ট্রাংকটির দুটি তালা ভাঙা। ভেতরে থাকা ‘ইসলামের ইতিহাস’ বিষয়ের প্রশ্নপত্রের একটি সেট ছেঁড়া অবস্থায় ছড়িয়ে–ছিটিয়ে আছে।

সিলগালা করা প্রশ্ন ট্রাংক কীভাবে থানার মত একটি নিরাপদ জায়গায় ভাঙা হলো—তা নিয়েই উঠছে বড় প্রশ্ন।

নওগাঁর জেলা প্রশাসক আবদুল আউয়াল ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন,-থানা হেফাজতে থাকা প্রশ্নের বাক্সের তালা ভাঙা ছিল—এটি এক অঘটন। প্রশ্নপত্র চুরি হয়েছে কি না, তা তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। কেউ জড়িত থাকলে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জেলা প্রশাসনের তরফ থেকে বিষয়টি রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের প্রধানকে অবহিত করা হয়েছে এবং আগামীকাল ২১ জুন শনিবার বোর্ডের একটি প্রতিনিধিদল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করবে বলে নিশ্চিত করা হয়েছে।

নওগাঁর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (আইসিটি ও শিক্ষা) সাদিয়া আফরিন জানান,ঘটনাস্থল পরিদর্শনের পর দেখা গেছে, বাক্সে থাকা প্রশ্নপত্রের সংখ্যার কোনো ঘাটতি নেই। তবে তালা ভাঙা ছিল। প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়ে থাকতে পারে, এমন আশঙ্কা অস্বীকার করা যাচ্ছে না।

এই ধরনের ঘটনাকে শুধু মাত্র “তালা ভাঙা” হিসেবে দেখার সুযোগ নেই বলে মনে করছেন স্থানীয় অভিভাবক ও শিক্ষাবিদরা।

এ ঘটনায় ধামইরহাট থানার ওসি আব্দুল মালেকের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে নওগাঁর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাফিউল সরওয়ার বিষয়টির সত্যতা স্বীকার করে বলেন,আদালতে নেওয়ার সময় এক আসামি ওই প্রশ্নপত্রের বাক্স খুলে চুরি করার চেষ্টা করেছিল। প্রশ্নপত্র নিতে পারেনি, তবে এক সেটের কিছু অংশ ছিঁড়ে ফেলে। তদন্ত চলছে।

এ ঘটনায় পুলিশ বিভাগের কারও গাফিলতি থাকলে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছেন তিনি।

২৬ জুন শুরু হতে যাচ্ছে এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা। তার আগেই এমন একটি ভয়াবহ ঘটনা দেশের গোটা পরীক্ষাব্যবস্থার বিশ্বাসযোগ্যতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রশ্নপত্রের ছবির ছড়িয়ে পড়া, ট্রাংক ভাঙা অবস্থায় পাওয়া, আর প্রশাসনের “তদন্তাধীন” মন্তব্যে সাধারণ শিক্ষার্থী ও অভিভাবক মহলে দেখা দিয়েছে চরম আতঙ্ক।

শিক্ষা বোর্ড ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তরফে এখনও পর্যন্ত পরীক্ষার সূচি পরিবর্তন বা প্রশ্ন পরিবর্তন বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত জানানো হয়নি। তবে রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের প্রতিনিধি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শনের পর বড় কোনো সিদ্ধান্ত আসতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থার প্রতি ভরসা ফিরিয়ে আনতে এ ধরনের প্রশ্নফাঁসের ঘটনাকে দৃষ্টান্তমূলকভাবে মোকাবিলা করা দরকার। নওগাঁ থানায় হেফাজতে থাকা প্রশ্নপত্র ফাঁসের মতো ঘটনা শুধুই একটি থানার গাফিলতি নয়—এটি গোটা জাতির শিক্ষাগত ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন তোলে।

নতুন প্রজন্মের জন্য নিরাপদ, সুশৃঙ্খল এবং স্বচ্ছ একটি পরীক্ষাব্যবস্থা নিশ্চিত করতে প্রশাসন, পুলিশ ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে কঠোর ও দ্রুত পদক্ষেপ প্রত্যাশা করছেন সচেতন অভিভাবক মহল।

कोई टिप्पणी नहीं मिली