close

ভিডিও দেখুন, পয়েন্ট জিতুন!

নির্বাচনে নামার ঘোষণা শাজাহান খানের, বললেন: রাজাকাররা ক্ষমতায়, মুক্তিযোদ্ধারা জেলখানায়..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
শাহবাগে জুট ব্যবসায়ী হত্যাকাণ্ডে গ্রেফতার দেখানো শাজাহান খান আদালতে বললেন—তিনি নির্বাচনে অংশ নেবেনই। সরকারের সমালোচনা করে বললেন, আজ মুক্তিযোদ্ধারা জেলে, রাজাকাররা ক্ষমতায়। ঘটনা ঘিরে নতুন করে উত্তেজনা।..

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় শাহবাগে সংঘটিত জুট ব্যবসায়ী মো. মনির হত্যাকাণ্ডের মামলায় আজ সাবেক নৌমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ নেতা শাজাহান খানকে আদালতে হাজির করা হয়। এদিন তার বিরুদ্ধে গ্রেফতার দেখানোর শুনানি অনুষ্ঠিত হয় ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে।

শুনানির সময় ও পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন শাজাহান খান। নির্বাচন করার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি সরাসরি বলেন, “নির্বাচন করবোই। নির্বাচন কেন করবো না?” এরপর তিনি আরও বলেন, “রাজাকাররা এখন ক্ষমতায়, আর মুক্তিযোদ্ধারা জেলখানায়।”

আদালতপাড়ায় এমন বক্তব্যে উপস্থিত অনেকেই চমকে ওঠেন। শাজাহান খানের এই মন্তব্য রাজনৈতিক মহলে নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। তিনি বলেন, “তোমরা কিছু বলো না, শুধু আমাকে দিয়েই বলাতে চাও।” তার কণ্ঠে ছিল ক্ষোভ আর হতাশা।

এর আগে গত ১৩ এপ্রিল, শাহবাগ থানার তদন্ত কর্মকর্তা মাইনুল ইসলাম খান পুলক আদালতে আবেদন করেন, যাতে শাজাহান খানকে আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রেফতার দেখানো যায়। সেই আবেদনের প্রেক্ষিতে ২১ এপ্রিল শুনানির দিন ধার্য করেন আদালত। আজ সেই শুনানিতে তাকে হাজির করা হয় এবং আদালত গ্রেফতার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করেন।

শুনানি চলাকালে শাজাহান খানকে সিএমএম আদালতের হাজতখানায় রাখা হয় এবং পরবর্তীতে তাকে এজলাসে তোলা হয়। সেখানে দাঁড়িয়েই তিনি উল্লেখ করেন, “আমি সত্য বলেছি। যা ঘটেছে, তাই বলেছি। যারা অন্যায় করেছে, তাদের বিরুদ্ধেই কথা বলেছি।”

এই বক্তব্যের আগে, ২০ এপ্রিল আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চত্বরে দুই পুলিশ সদস্যকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে। সাংবাদিকরা সেই প্রসঙ্গে জানতে চাইলে শাজাহান খান দাবি করেন, “তাদের সঙ্গে অবিচার করা হচ্ছে।”

পেছনের ঘটনার বিস্তারিত

২০২৪ সালের ৫ আগস্ট, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় শাহবাগ থানাধীন চানখারপুল এলাকায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সেখানে ক্ষুদ্র জুট ব্যবসায়ী মো. মনির আন্দোলনে অংশ নিতে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই নিহত হন। তার স্ত্রী ওই বছরের ১৪ মার্চ শাহবাগ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

এ ঘটনার প্রায় এক মাস পর, ২০২৪ সালের ৫ সেপ্টেম্বর দিবাগত রাতে, ধানমন্ডির নিজ বাসা থেকে শাজাহান খানকে গ্রেফতার করে গোয়েন্দা পুলিশ। এরপর তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলায় রিমান্ডে নেওয়া হয়।

রাজনৈতিক ইঙ্গিত ও বিতর্ক

এক সময়ের শক্তিশালী নেতা হিসেবে পরিচিত শাজাহান খানের বিরুদ্ধে এই মামলাগুলো শুধু আইনগতই নয়, রাজনৈতিক হিসেবেও গুরুত্ব পাচ্ছে। তিনি নিজেই আদালতে বলেন, “এটা এক ধরনের রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র। আমি নির্বাচন করতে চাই, সেই কারণেই হয়তো এসব চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে।”

তবে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে এখনো শাজাহান খানের বক্তব্য নিয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি। দলটির অনেক নেতাই বিষয়টিকে ‘ব্যক্তিগত মামলা’ হিসেবে দেখছেন। তবে বিরোধী দলগুলোর পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, এই মামলা ও শাজাহান খানের বক্তব্য সরকারে ভেতরের দ্বন্দ্বকেই প্রকাশ করছে।

 

নির্বাচন সামনে রেখে শাজাহান খানের এই মন্তব্য এবং আদালতে উপস্থিতির দৃশ্য নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। বিশেষ করে তার “রাজাকার-মুক্তিযোদ্ধা” সংক্রান্ত মন্তব্য রাজনৈতিক অঙ্গনে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে।

এখন দেখার বিষয়, শাজাহান খান আদৌ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন কি না—আর ভবিষ্যতে এই মামলার কী পরিণতি হয়।

Aucun commentaire trouvé


News Card Generator