জামায়াতে ইসলামী কখনো নির্বাচন পেছানো বা আগানোর দাবি করেনি বলে জানালেন দলটির সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার। তিনি জানান, সরকার যখনই নির্বাচন দেবে, জামায়াত প্রস্তুত।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন যে, তাদের দল কখনো জাতীয় নির্বাচন পেছানোর বা এগিয়ে আনার দাবি করেনি। বরং নির্বাচন যেকোনো সময় অনুষ্ঠিত হোক না কেন, জামায়াতে ইসলামীর প্রস্তুতি রয়েছে বলেই জানান তিনি।
সোমবার (৭ জুলাই) দুপুরে ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুষ্ঠিতব্য জাতীয় মহাসমাবেশের প্রস্তুতি পরিদর্শনে গিয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এসব কথা বলেন তিনি। এ সময় তাঁর সঙ্গে ছিলেন দলের শীর্ষ পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ। আসন্ন ১৯ জুলাইয়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জাতীয় মহাসমাবেশ সফল করতে মাঠ ঘুরে দেখেন তাঁরা।
মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, জামায়াতে ইসলামীর অবস্থান স্পষ্ট — নির্বাচন যেনতেনভাবে করা যাবে না। তবে সরকার যখনই নির্বাচন দিবে, আমরা অংশ নিতে প্রস্তুত। তবে এ নির্বাচন হতে হবে সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক।
তিনি জানান, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে যে মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে, তার মঞ্চ হবে ৩১ ফুট প্রস্থ ও ৩৬ ফুট দৈর্ঘ্যের। সমাবেশস্থলে থাকবে এলইডি প্রজেক্টর, পর্যাপ্ত সিসিটিভি ক্যামেরা, ওজুখানা, টয়লেট এবং নিরাপদ গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আব্দুল হালিম, অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, অ্যাডভোকেট মোয়াযযম হোসেন হেলাল, প্রচার ও মিডিয়া সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমির মো. নূরুল ইসলাম বুলবুল, মহানগর দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ, মহানগর উত্তরের সেক্রেটারি ড. রেজাউল করিম, ইসলামী ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি জেনারেল নুরুল ইসলাম সাদ্দামসহ আরও অনেকে।
মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে “ঢাকা চল” স্লোগানে দেশব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণা করেছে জামায়াতে ইসলামী। পরওয়ার বলেন, “আমাদের উত্থাপিত ৭ দফা দাবি জনগণের প্রকৃত অধিকার প্রতিষ্ঠার দাবির প্রতিফলন। তাই দলমত, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাইকে ১৯ জুলাইয়ের সমাবেশে উপস্থিত হয়ে এই আন্দোলনে সংহতি জানাতে আহ্বান জানাচ্ছি।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বর্তমানে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভয়াবহভাবে অবনতি ঘটেছে। এই পরিস্থিতিতে একটি অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি সম্ভব নয়। যারা এই পরিস্থিতি তৈরি করছে, তারাই ভোটকেন্দ্র দখল, ব্যালট বাক্স ছিনতাই ও সহিংসতা ঘটাতে পারে বলে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন।
তিনি আরও বলেন, জামায়াতে ইসলামী মনে করে, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজনের জন্য আগে পরিস্থিতি স্থিতিশীল করতে হবে। প্রতিটি দল ও প্রার্থীর জন্য সমান সুযোগ, ভোটারদের নিরাপত্তা এবং শান্তিপূর্ণভাবে ভোটাধিকার প্রয়োগের নিশ্চয়তা থাকতে হবে।
পরওয়ার সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, আমরা চাই এই আন্দোলন হোক গণতান্ত্রিক ও শান্তিপূর্ণ। সরকার সহযোগিতা করলেই একটি সুন্দর পরিবেশে জাতীয় সমাবেশ বাস্তবায়ন সম্ভব।
জামায়াতের এ অবস্থান দেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে নতুন মাত্রা যোগ করলো। যেখানে অনেক দল নির্বাচন নিয়ে নানা অবস্থান গ্রহণ করছে, সেখানে জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে শান্তিপূর্ণ, গণতান্ত্রিক ও সুশৃঙ্খল নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতির ঘোষণা অনেককে ভাবাচ্ছে।