নিপুণ বনাম ডিপজল: চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির উত্তপ্ত দ্বন্দ্ব নিয়ে মুখ খুললেন পরিচালক ঝন্টু
বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচন ঘিরে উত্তেজনা তুঙ্গে। সভাপতি মিশা সওদাগর এবং সাধারণ সম্পাদক মনোয়ার হোসেন ডিপজলের নেতৃত্বে গঠিত নতুন পরিষদ নির্বাচনে জয়লাভ করলেও নির্বাচন-পরবর্তী বিরোধের কেন্দ্রে উঠে এসেছেন চিত্রনায়িকা নিপুণ। তার হাইকোর্টে রিট করা এবং সাধারণ সম্পাদক ডিপজলের পদ স্থগিত হওয়া নিয়ে সমালোচনার ঝড় বইছে। বিষয়টি নিয়ে এবার সরব হলেন বর্ষীয়ান পরিচালক দেলোয়ার জাহান ঝন্টু।
ঝন্টুর স্পষ্ট বার্তা
ঝন্টু বলছেন, "ডিপজল সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করলে সমিতি সুন্দরভাবে চলবে। কারণ, ডিপজলের কাজ ছাড়া অন্য কোনো কিছু দরকার নেই। তার অর্থ, সম্মান সবই রয়েছে। ডিপজল সমিতির উন্নয়নেই কাজ করবে। কিন্তু নিপুণের কেস করা আমার কাছে অপ্রয়োজনীয় মনে হয়েছে।"
তিনি আরও যোগ করেন, "শিল্পী সমিতির উন্নয়নের জন্য প্রয়োজন স্থিতিশীল নেতৃত্ব। ডিপজল দুই নাম্বারি করে নির্বাচন করেছে বলে কোনো প্রমাণ এখনো পাওয়া যায়নি। আদালত তদন্তের নির্দেশ দিলেও আমি নিশ্চিত, তদন্তে কিছুই পাওয়া যাবে না। বরং এই দ্বন্দ্ব সমিতির সুনাম ক্ষুণ্ন করছে।"
নিপুণের রিটের প্রতিক্রিয়া
নির্বাচনের ২৫ দিন পর হাইকোর্টে রিট করেন নিপুণ। তার অভিযোগ, "নির্বাচনে ভোটের রাতে অনিয়ম হয়েছে। বাতিল হওয়া ভোটের সঠিক তথ্য দেওয়া হয়নি। কমিশন বলেছে ৪১টি ভোট বাতিল, কিন্তু আমার কাছে থাকা তথ্য অনুযায়ী ৮১টি ভোট বাতিল হওয়া উচিত ছিল।"
নিপুণের এমন কর্মকাণ্ড নিয়ে ঝন্টু বলেন, "নিপুণ মালা পরিয়ে বড় মনের পরিচয় দিয়েছিল। তখন দেখে ভালো লেগেছিল। কিন্তু এখন তার বিপক্ষে সমালোচনা বাড়ছে। এই ধরণের কাজ শুভ নয়।"
ডিপজলের পক্ষে ঝন্টুর অবস্থান
ঝন্টু বলেন, "ডিপজল চলচ্চিত্রের একজন পরিচিত নাম। তার সম্মানহানি করার অধিকার কারও নেই। নিপুণ যা বলেছে, সেটা বলা তার ভুল হয়েছে। ডিপজল এখানে থাকলে শিল্পীদের কল্যাণেই কাজ করবে।"
তিনি আরও বলেন, "নিপুণের সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা আমার রয়েছে। তাকে একজন শিল্পী হিসেবে পছন্দ করি। কিন্তু ডিপজলকে আমি সম্মানের চোখে দেখি। এমন বিবাদ শিল্পী সমিতির জন্য ক্ষতিকর।"
নির্বাচনের পরবর্তী পরিস্থিতি
২০২৪-২৬ মেয়াদের জন্য গত ১৯ এপ্রিল অনুষ্ঠিত নির্বাচনে মিশা-ডিপজল পরিষদ জয়লাভ করেছিল। নির্বাচনের রাতেই ফুলের মালা দিয়ে বিজয়ীদের অভিনন্দন জানিয়েছিলেন নিপুণ। কিন্তু পরবর্তী সময়ে হাইকোর্টে রিট করে তিনি নতুন বিতর্ক সৃষ্টি করেন।
নিপুণের অভিযোগের প্রেক্ষিতে নির্বাচন কমিশন বা আদালতের কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত এখনো প্রকাশিত হয়নি। তবে এই দ্বন্দ্ব নিয়ে চলচ্চিত্র অঙ্গনের অনেকেই উদ্বিগ্ন।
উপসংহার
চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনী বিতর্ক যে পর্যায়ে পৌঁছেছে, তাতে সংগঠনটির ভাবমূর্তি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ঝন্টুর মতো বর্ষীয়ান ব্যক্তিত্বের মন্তব্যগুলো শান্তি ফিরিয়ে আনার বার্তা দিলেও, নিপুণ এবং ডিপজলের দ্বন্দ্ব চলচ্চিত্র অঙ্গনে অস্থিরতা তৈরি করছে।
এই পরিস্থিতি সামাল দিতে নেতৃত্বের পক্ষ থেকে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
कोई टिप्पणी नहीं मिली



















