close
ভিডিও আপলোড করুন পয়েন্ট জিতুন!
মোবাইলে আর্থিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান ‘নগদ লিমিটেড’ বড় আকারের ডিজিটাল জালিয়াতির ঘটনায় অভিযুক্ত। প্রতিষ্ঠানটি ব্যাংকে জমা টাকার তুলনায় ৬৪৫ কোটি টাকা অতিরিক্ত ই-মানি ইস্যু করার অভিযোগে রয়েছে। পাশাপাশি, অনুমোদনবিহীন ৪১ পরিবেশকের মাধ্যমে ১,৭১১ কোটি টাকা উত্তোলন করায় বিষয়টি আরও জটিল হয়ে উঠেছে। যদিও এই জালিয়াতি নিয়ে এখনো কোনো মামলা হয়নি, কারণ ডাক অধিদপ্তর ও বাংলাদেশ ব্যাংকের মধ্যে মামলা দায়েরের বিষয়টি এক মাস ধরে ঝুলে আছে।
বরখাস্তের সুনির্দিষ্ট তথ্য:
এ ঘটনায় বাংলাদেশ ব্যাংকের নিযুক্ত প্রশাসক নগদের ৪১ পরিবেশক, ২৪ হাজার ৯৭ জন এজেন্ট এবং ৬৪৩ জন বিক্রয় কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করেছেন। এ ছাড়া ৩,৮৩১টি মার্চেন্ট অ্যাকাউন্ট বাতিল করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির শীর্ষ পর্যায়ের ছয় কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ডাক অধিদপ্তরে সুপারিশ করা হয়েছে।
যাত্রার সূচনা ও অনিয়ম:
২০১৯ সালের ২৬ মার্চ, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নগদের যাত্রা উদ্বোধন করেন। প্রথম থেকেই আওয়ামী লীগের একাধিক প্রভাবশালী ব্যক্তি এর সঙ্গে যুক্ত থাকায় প্রতিষ্ঠানটি সরকারি বিভিন্ন ভাতা বিতরণে একচ্ছত্র সুবিধা পেয়ে আসছিল। এই সুযোগে নগদ বড় ধরনের আর্থিক অনিয়ম ও জালিয়াতিতে জড়িয়ে পড়ে।
ডিজিটাল জালিয়াতির প্রমাণ:
ডাক অধিদপ্তর ও থার্ড ওয়েভ টেকনোলজির মধ্যে হওয়া চুক্তি অনুযায়ী, ব্যাংকে জমা টাকার সমপরিমাণ ই-মানি ইস্যু করার নিয়ম থাকলেও ৬৪৫ কোটি টাকা অতিরিক্ত ই-মানি ইস্যু করা হয়েছে। এর পাশাপাশি ৪১ পরিবেশকের মাধ্যমে সরকারি ভাতা বিতরণের দায়িত্বে থাকা টাকা সরিয়ে ফেলা হয়।
গ্রাহক প্রভাব ও লেনদেন বৃদ্ধি:
যেসব গ্রাহক যথাযথ প্রক্রিয়া ছাড়াই নগদে অ্যাকাউন্ট খুলেছেন, তাঁদের অ্যাকাউন্ট আপডেট বা স্থগিত করা হচ্ছে। তবে প্রশাসক দলের নিয়ন্ত্রণের পর থেকে নগদের দৈনিক লেনদেন দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। নভেম্বর মাসে লেনদেন এক হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে। বর্তমানে নগদের গ্রাহক সংখ্যা ৯ কোটি ৫০ লাখ।
পরবর্তী পদক্ষেপ:
জালিয়াতির প্রকৃত তথ্য উদ্ঘাটনে ফরেনসিক নিরীক্ষার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এতে জালিয়াতি ও সুবিধাভোগীদের শনাক্ত করা যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। তবে এখন পর্যন্ত এই জালিয়াতির আইনি দায় ডাক অধিদপ্তরের ওপর চাপানো হয়েছে, কারণ নগদকে কার্যক্রম পরিচালনার সাময়িক অনুমোদন দিয়েছিল তারাই।
শেষ কথা:
নগদে সংঘটিত এই ঘটনা দেশের সবচেয়ে বড় ডিজিটাল আর্থিক জালিয়াতি হিসেবে ধরা হচ্ছে। দ্রুত তদন্ত ও প্রয়োজনীয় আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ ছাড়া গ্রাহকদের আস্থা ফেরানো এবং আর্থিক ব্যবস্থার সুরক্ষা নিশ্চিত করা কঠিন হবে।
Không có bình luận nào được tìm thấy