নেতানিয়াহুর উদ্ধত আচরণে চরম ক্ষুব্ধ ট্রাম্প, বন্ধ করে দিয়েছে যোগাযোগ..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর আচরণে বিরক্ত হয়ে সব ধরনের সরাসরি যোগাযোগ বন্ধ করেছেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কে দেখা দিয়েছে নতুন সঙ্কট।..

সম্প্রতি মধ্যপ্রাচ্যের উত্তপ্ত রাজনৈতিক পরিস্থিতির মধ্যে চরম মোড় নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের অভ্যন্তরীণ সম্পর্ক। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর ‘উদ্ধত ও একরোখা’ রাজনৈতিক আচরণে মারাত্মকভাবে ক্ষুব্ধ হয়েছেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। দীর্ঘদিনের মিত্রতা ও ব্যক্তিগত সম্পর্ক থাকা সত্ত্বেও নেতানিয়াহুর আচরণে এতটাই বিরক্ত হয়েছেন ট্রাম্প যে, তিনি সব ধরনের সরাসরি যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছেন—এমনটাই দাবি করেছে ইসরায়েলের শীর্ষস্থানীয় গণমাধ্যমগুলো।

ইসরায়েলি ও মার্কিন প্রশাসনের ঘনিষ্ঠ সূত্রের বরাতে বলা হয়েছে, সম্প্রতি নেতানিয়াহু একাধিকবার ওয়াশিংটনের নীতিনির্ধারকদের সিদ্ধান্তে হস্তক্ষেপের চেষ্টা করেছেন এবং বেশ কিছু কূটনৈতিক পদক্ষেপে প্রভাব ফেলতে চেয়েছেন। এই প্রবণতাকে 'চরম ঔদ্ধত্য' হিসেবে দেখছেন ট্রাম্প। তিনি মনে করছেন, নেতানিয়াহু এখন এমন এক অবস্থানে পৌঁছেছেন, যেখানে তিনি শুধু ইসরায়েলের নেতা নন, বরং বিশ্বমঞ্চে নিজের একচ্ছত্র আধিপত্য প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছেন।

বিশ্লেষকরা বলছেন, ট্রাম্প প্রশাসনের সময় ইসরায়েল-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক ছিল অনেকটাই শক্ত ভিতের ওপর দাঁড়ানো। ইরানে হামলা নিয়ে কৌশলগত পরিকল্পনা থেকে শুরু করে জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া—সব ক্ষেত্রেই নেতানিয়াহুকে সর্বাত্মক সমর্থন দিয়েছিলেন ট্রাম্প। কিন্তু সম্প্রতি নেতানিয়াহুর কর্মকাণ্ড, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ নীতিতে হস্তক্ষেপের চেষ্টাই এই টানাপোড়েনের সূচনা করেছে।

ইসরায়েলের একটি খবরে বলা হয়, গত কয়েক মাস ধরে ট্রাম্প ও নেতানিয়াহুর মধ্যে কোনো ব্যক্তিগত ফোনালাপ হয়নি। এমনকি নেতানিয়াহুর কোনো অনুরোধেরও জবাব দিচ্ছেন না ট্রাম্প। বিশ্লেষকরা এটিকে কূটনৈতিক সম্পর্কের জন্য অশনিসংকেত হিসেবে দেখছেন।

এছাড়া, নেতানিয়াহু সম্প্রতি বিভিন্ন গণমাধ্যমে এককভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও মার্কিন প্রশাসনের কিছু স্পর্শকাতর বিষয়ে মন্তব্য করেছেন, যা ওয়াশিংটনের অনেক কর্মকর্তার দৃষ্টিতে এক ধরনের ‘নন-ডিপ্লোম্যাটিক বিহেভিয়ার’। ফলস্বরূপ, ট্রাম্প তাঁর নিকটবর্তী মহলকে নেতানিয়াহুর বিষয়ে সতর্ক করেছেন এবং ব্যক্তিগতভাবে তাঁর সঙ্গে দূরত্ব বজায় রাখতে বলেছেন বলে গুঞ্জন চলছে।

এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক মহলে প্রশ্ন উঠছে—মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাব কি কমে যাচ্ছে? আর ইসরায়েল কি ক্রমেই একঘরে হয়ে পড়ছে?

অনেকেই মনে করছেন, নেতানিয়াহুর এই ধরনের মনোভাব ভবিষ্যতে ইসরায়েলের বৈদেশিক কৌশলে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের আসন্ন নির্বাচনেও ইসরায়েলের প্রতি ট্রাম্পের অবস্থান ঘিরে তৈরি হতে পারে নতুন বিতর্ক।

বিশ্লেষকদের মতে, এ সম্পর্কের ফাটল শুধু দুই নেতার ব্যক্তিগত সম্পর্ক নয়, বরং বৃহত্তর কূটনৈতিক প্রেক্ষাপটে দুই দেশের ঐতিহ্যবাহী জোটকেও নড়বড়ে করে দিতে পারে।

Ingen kommentarer fundet